রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


বন্যা, রোহিঙ্গা ও বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের সংবাদ সম্মেলন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, বন্যা পরিস্থিতি ও পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে সাধারণ মানুষের জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি, রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ে আজ বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইসলামী ঐক্যজোট।

সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ইসলামী ঐক্যজোট নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছাপায় প্রতিবাদলিপি পাঠ করেন ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ।

উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রশিদ মজুমদার, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা যোবায়ের আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাওলানা এহতেশাম সারওয়ার, যুগ্ম মহাসচিব মুফতী তৈয়্যব যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আবুল কাশেম, হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শেখ লোকমান হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জিয়াউল হক মজুমদার, পীরজাদা সৈয়দ মোঃ আহসান, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আলতাফ হোসাইন, সহকারী মহাসচিব একেএম আশরাফুল হক, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আনসারুল হক ইমরান, ইসলামী ছাত্র খেলাফতের সভাপতি মোঃ খোরশেদ আলম প্রমুখ।

ইসলামী ঐক্যজোট উদ্বেগের সাথে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যবেক্ষণ করে বলছে, নির্বাচনের সময় সহায়ক সরকার নিয়ে বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি ও আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বার বার অস্থিতিশীল করে বিএনপি সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ব্যঘাত সৃষ্টি করে জনমনে নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি করছে।

বিএনপি জ্বালাও পোড়াও এবং সন্ত্রাস চালিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে

অনুষ্ঠানে পঠিত প্রবন্ধে বিএনপি সম্পর্কে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নিবাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আত্তয়াজ উঠিয়ে বিএনপি জ্বালাও পোড়াও এবং সন্ত্রাস চালিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে। সে সময়ের নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির ৫ জন প্রতিনিধিকে প্রদান করার জন্য অনুরোধ জানায় তাতে বিএনপি সম্মত হয় নি। বিএনপি দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে এবং বর্তমানে সহায়ক সরকার নামে পুনরায় নৈরাজ্য সৃষ্টির পায়তারা করছে। এখানে উল্লেখ্য যে, বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে ইউনিয়ন, উপজেলা এবং সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। সহায়ক সরকার মানে যে সরকার কর্তৃক বিএনপিকে পুনরায় ক্ষমতা নিতে সাহায্য করবে তাকে সহায়ক সরকার বলে বিএনপির নেতাদের বক্তব্যে তা প্রতিফলিত হয়।

আমরা মনে করি যে, বিএনপির এ ধরনের দ্বৈত নীতি ও রাজনৈতিক ভন্ডামীর মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকটের সৃষ্টি হবে। ইসলামী ঐক্যজোট মনে করে, সংবিধানে সহায়ক সরকার বলে কিছু নেই। দেশের গণতান্ত্রিক রীতি নীতি ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের রীতি নীতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে একগুঁয়েমী মনোভাব ও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির অপপ্রয়াস ত্যাগ করার জন্য বিএনপিকে আহবান জানাচ্ছি।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ

আমরা উদ্বেগের সাথে রোহিঙ্গা শরনার্থী বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই। মায়ানমার হতে বিতাড়িত রোহিঙ্গা মুসলমানগণ দীর্ঘদিন যাবত কক্সবাজার এবং টেকনাফ অঞ্চলে বসবাস করছে। মায়ানমার হতে বিতাড়িত শরনার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক সংস্থার প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি। উক্ত শরণার্থীরা উক্ত অঞ্চলে দীর্ঘ দিন থাকায় মাদক, ইয়াবা এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাযকলাপে জড়িয়ে পড়ছে। এছাড়াও রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী দল গঠন করেছে বলে শোনা যাচ্ছে যাদের সাথে ভারতের আসাম, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে যোগসূত্রের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়াও থাইল্যান্ডের কারণে বিদ্রোহীদের সাথেও তাদের যোগসূত্রের খবর পাওয়া গেছে।

এই রোহিঙ্গারা বেশি দিন অবস্থান করলে দেশের জঙ্গীদের সাথেও যোগসূত্র পাওয়া যাবে এবং দেশ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকীর মুখে পড়বে। এমতাবস্থায় তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

কাঁদা ছোড়াছুড়ি না করে বন্যার্তদের সহযোগিতা করুন

আমরা অত্যন্ত বিব্রত হই যখন দেখি যে, বন্যা কবলিত মানুষ ও পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে না দাড়িয়ে বিএনপি এবং কিছু রাজনৈতিক দল এক দল আরেক দলের উপর কাঁদা ছোড়া ছুড়ি করে যা কোন অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নয়। পূর্বে কে কি করেছে তা দেশের জনগণ দেখেছে। দলমত নির্বিশেষে এইসব পীড়িত মানুষের পাশে যার যার সামর্থ অনুযায়ী সহযোগিতা করার জন্য উদাত্ত আবেদন জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি, তিনি যেন পীড়িত মানুষকে হেফাজত করেন।

২০ দলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, ইসলামি জোট করার চেষ্টা করছি: মুফতি ফয়জুল্লাহ

ইসলামী ঐক্যজোট দেশ, জাতি, ইসলাম-মুসলমান ও দলের প্রয়োজনে, দেশের শীর্ষ উলামা-মাশায়েখ, দলের নেতা-কর্মীদের পরামর্শে, সময়ের তাগিদে স্বকীয়তা বজায় রেখে ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারী ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় কনভেনশনে ২০-দলীয় জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। জোট ছেড়ে স্বতন্ত্র অবস্থান গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত ছিল সময়োপযোগী। এ জন্য ইসলামী ঐক্যজোট ব্যাপকভাবে প্রশংসিত ও নন্দিত হয়েছে। ফলে ইসলামী ঐক্যজোটের সাংগঠনিক ও দলীয় কার্যক্রম এবং গ্রহণযোগ্যতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইসলামী ঐক্যজোট এক আল্লাহর ওপর ভরসা করে। আল্লাহর পথে চলে। ভয়ভীতি ও দুঃখ মুসিবতের তোয়াক্কা না করে দুর্জয় সাহসে এগিয়ে চলে মানবতার মুক্তির পথে।

বিগত শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় “ক্ষমতার স্বাদ নিতে তিন জোটেই সক্রিয় ইসলামী দলগুলো” শিরোনামে প্রচারিত সংবাদের অংশ বিশেষে আমার বক্তব্যের অংশে বলা হয়েছে “তিনি বলেন, আমরা এখনো ২০ দলীয় জোটে আছি। তবে বিএনপির সঙ্গে আমাদের অনেক কিছু বোঝাপড়া রয়েছে”। অথচ আমি এমন কোন কথা আদৌ বলি নি। আমি তৎক্ষণাৎ এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। কারণ মুদ্রিত এই বক্তব্যটি ইসলামী ঐক্যজোটের বর্তমান অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকও আমার নামে মুদ্রিত হওয়ায় ভুল স্বীকার করেছেন। কিন্তু পত্রিকাটির এমন উপস্থাপনায় দেশ ও দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত, অবাক ও হতাশ করেছে। দেশের অন্যতম একটি জাতীয় দৈনিকের কাছে এমন আজগুবি ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ কখনোই কাম্য নয়।

আমরা সবসময় সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিক ভাইদের কাছ থেকে পেশাগত নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতা আশা করি। আমরা পরিস্কার বলতে চাই, ইসলামী ঐক্যজোটের সাথে ২০ দলের জোটগত কোন সম্পর্ক নেই। আমরা জোটের বাইরে থাকা ইসলামী দলগুলো ছাড়াও নিবন্ধিত এবং অনিবন্ধিত দল ও সংগঠনগুলো নিয়ে একটি জোট গঠনের চেষ্টা করছি। মহান আল্লাহই সর্বশক্তিমান।

৩৩% নারী নেতৃত্বের প্রশ্নে যা ভাবছে ইসলামি দলগুলো

কওমি শিক্ষার্থীদের জন্য ভূমি জরিপ কোর্স; সফলতা কতটুকু?

আরআর


সম্পর্কিত খবর