আওয়ার ইসলাম: অবশেষে ছয়টি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকসহ শরণার্থীদের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে।
এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত কোনো ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন না থাকলে এবং কোনো ধরণের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ছাড়া এই দেশগুলোর কোনো ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশা করতে পারবে না। এমনকি তাদের ভিসাও বাতিল করা হতে পারে।
মার্কিন প্রশাসন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনের ব্যাখ্যাও বলে দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ব্যক্তির বাব-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি, জামাই, পুত্রবধু, ভাই-বোন এমনকি সৎ ভাই-বোন হলেও বাধা নেই কিন্তু ভাইপো এবং ভাইঝি প্রবেশে বাধা থাকছে।
মোটকথা, লিবিয়া-সোমালিয়া-সুদান-সিরিয়া এবং ইয়েমেন এই ছয় মুসলিম দেশ থেকে আমেরিকায় আসতে হলে এখন থেকে সেখানকার নাগরিকদের ভিসা আবেদনে পরিবারের ‘কাছের সম্পর্কগুলো’ই গুরুত্ব পাবে।
গত সোমবার সুপ্রিম কোর্ট ওই নিষেধাজ্ঞায় আংশিক অনুমতি দেওয়ার পরেই এই নয়া ফরমান জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন। ইতোমধ্যেই নয়া নির্দেশিকা পৌঁছে গেছে বিভিন্ন মার্কিন কনস্যুলেট ও দূতাবাসে। অক্টোবরে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানির সময় নির্ধারণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
[caption id="" align="alignnone" width="1600"] ট্রাম্পের বিতর্কিত আদেশে মার্কিনিদের প্রতিবাদ[/caption]
প্রশাসনিক নির্দেশশিকা অনুযায়ী, ‘কাছের সম্পর্ক’ বলতে বাবা-মা (শ্বশুর-শাশুড়ি), স্বামী-স্ত্রী, ছেলেমেয়ে, জামাই, পুত্রবধূ এবং ভাইবোন (সৎভাই বোনও)। এবং ‘কাছের সম্পর্কে’ দাদু-ঠাকুরমা-দাদু-দিদা, নাতিনাতনি, কাকা-কাকিমা, ভাইপো-ভাইঝি, সম্পর্কিত ভাইবোন, প্রেমিক-প্রেমিকা পড়েন না।
নির্দেশে স্পষ্ট, আমেরিকা নিবাসী স্বজনের সঙ্গে মুসলিম দেশের ভিসা আবেদনকারীর ‘রক্তের সম্পর্ক’ থাকলে তাঁকে আটকানো হবে না। অন্যথায় তাকে আমেরিকায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
কিন্তু কাছের সম্পর্ক ঠিক করার এই প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। আমেরিকা নিবাসী কোনও মুসলিমের কাছে কারা দূর সম্পর্কের আত্মীয় আর কারা কাছের, সেটা কী ভাবে মার্কিন প্রশাসন ঠিক করল? তার কোনও ব্যাখ্যা অবশ্য নেই নির্দেশিকায়।
তবে সংশ্লিষ্ট ছ’দেশের কোনও নাগরিক মার্কিন সংস্থায় কাজের সুযোগ পেলে বা আমেরিকার কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার আমন্ত্রণ পেলে, তাঁর ক্ষেত্রে এই নিষেধ বলবৎ হবে না।
‘ডাইভারসিটি ভিসা’-তেও কিছু বদল আনা হয়েছে। আমেরিকায় যে সব দেশ বেশি অভিবাসী পাঠায় না, তাদের নাগরিকদের এই সুযোগ দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে ছয় নিষিদ্ধ মুসলিম দেশ থেকে ১০,৫০০ নাগরিককে ডাইভারসিটি ভিসা লটারির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন ওই সব দেশের নাগরিক সে লটারির সুযোগ পাবেন না।
এসএস/