পাকিস্তানের সাইবার ফাঁদে পা দিয়েছে ভারতীয় সেনা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বহু কর্মকর্তা। আর এর মাধ্যমে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সামরিক বাহিনী সংক্রান্ত বহু গোপন তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা।
খবরের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপের মুখোশ ধরে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ভারতীয় সেনার অন্দরমহলে গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছিল বলে জানা গেছে। গুপ্তচরবৃত্তি ধরা পড়তেই ভুয়া ওয়েবসাইটগুলিকে পাকিস্তান বন্ধ করে দিয়েছে বলেও খবরে বলা হয়ে।
পাকিস্তানের সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির বিষয়টি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাই গত বছর প্রথম খেয়াল করে বলে জানা গেছে। ইন্টারনেট দুনিয়ায় নজরদারিও চলে নিরন্তর। সেই নজরদারির প্রক্রিয়াতেই একটি আইপি অ্যাড্রেসের গতিবিধি ভারতীয় গোয়েন্দাদের মনে সন্দেহ জাগিয়েছিল। আইপি অ্যাড্রেসটি পাকিস্তানের ছিল এবং ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পরিকাঠামোগুলিকে ঘিরেই তার গতিবিধি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। এক এথিক্যাল হ্যাকারকে কাজে লাগিয়ে ওই আইপি অ্যাড্রেসের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়। কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে আসে কেউটে। দেখা যায়, একটি আইপি অ্যাড্রেস থেকে নয়, একাধিক আইপি অ্যাড্রেস থেকে পাকিস্তান সাইবার গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছিল। খবরের ওয়েবসাইটের আড়াল ব্যবহার করে সেই গুপ্তচরবৃত্তি চালানো হচ্ছিল।
তিনটে নিউজ অ্যাপের নাম উঠে এসেছে, যেগুলি আসলে ম্যালওয়্যার ছিল। অর্থাৎ নিউজ অ্যাপ ভেবে যাঁরা সেগুলিকে মোবাইলে বা কম্পিউটারে ইনস্টল করতেন, তাঁরাই ফাঁদে পড়ে যেতেন। মোবাইল বা কম্পিউটারের যাবতীয় গোপন নথি চুরি হয়ে যেত। পৌঁছে যেত পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর হাতে।
নিউজ অ্যাপগুলির নাম প্রকাশ্যে এসেছে— ইন্ডিয়ান সেনা নিউজ, ভারতীয় সেনা নিউজ এবং ইন্ডিয়া ডিফেন্স নিউজ। ভারতীয় সেনার নানা খবর প্রকাশ করা হত ওই ওয়েবসাইট এবং নিউজ অ্যাপগুলিতে। যাঁরা সেনার সঙ্গে যুক্ত বা সামরিক বিষয়ে জানতে উৎসাহী, স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা এই সব অ্যাপ নিজেদের কম্পিউটারে বা মোবাইলে ইনস্টল করতেন। আর ইনস্টল করা মাত্রই তাঁরা আইএসআই-এর ফাঁদে পড়ে যেতেন। শুধু নথি চুরি করা নয়, আইএসআই-এর এই ম্যালওয়্যারগুলি মোবাইলের কথোপাকথন রেকর্ড করে নিতে পারত, ভিডিও করতে পারত, মোবাইলের স্ক্রিনশট পাঠাতে পারত। খবর আনন্দবাজার।
এসএস/