গ্রেনফেল দুর্গতদের দেখতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে পালিয়ে রক্ষা পেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
দুর্গতদের সহায়তা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি চার্চে গিয়ে তিনি এ ক্ষোভের মুখে পড়েন।দূর্গতদের ক্ষোভের মুখে পড়ে ঘটনাস্থল থেকে পেছনের দরোজা দিয়ে লুকিয়ে কেটে পড়েন থেরেসা মে।
বিভিন্ন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে নর্থ কেনসিংটনের সেন্ট ক্লিমেন্ট চার্চটি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা কেন্দ্র হিসেবে। শুক্রবার সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত, বাসিন্দা এবং স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে দেখা করতে যান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। গ্রেনফেলের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা না বলায় আগে থেকেই ক্ষোভের মুখে ছিলেন। ক্লিমেন্ট চার্চে তাকে কাছে পেয়ে সেই ক্ষোভ জোরালো হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের জমায়েত থেকে শ্লোগান ওঠে, ‘তুমি দৃর্বলচিত্তের মানুষ’... ‘ধিক্কার জানাই তোমাকে’
ব্রিটিশরা গ্রেনফেল টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনকে নিছক একটি দুর্ঘটনা বলে মানতে পারছেন না। তারা একে কতৃপক্ষের গাফিলতি হিসেবে দেখছেন। সেখানকার এক কমিউনিটি ব্লগ ওই ভবনের সম্ভাব্য আগুনের ঝুঁকির ব্যাপারে সতর্ক করেছিল দেড় বছর আগে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ থাকা এক বস্তু ভবনটির সংস্কাকজে ব্যবহার করা হয়েছে। লন্ডনবাসী মনে করছে, থেরেসা সরকারের আবাসন মন্ত্রণালয় আগুনের ঝুঁকিজনিত নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থতার কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত হয়েছেন মে।
দুর্গতদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত চার্চের যেখানটায় থেরেসা বসেছিলেন, বিক্ষুব্ধরা এক পর্যায়ে সেখানে ঢোকার চেষ্টা করে। ডেইলি মেইল জানায়, পুলিশ সেসময় তাদের বাধা দেয়। চার্চের ভেতরের সদর দরজার পাশাপাশি বাইরে থাকা থেরেসার গাড়িটিও চারপাশ থেকে ঘিরে রাখে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের একজন তাকে চলে যেতে বলেন। ‘কী করছেন উনি এখানে? তার উচিৎ নিজের বিলাসবহুল বাড়িতে ফিরে যাওয়া,’ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন ওই বিক্ষোভকারী।
উপায়ন্তর না দেখে এক ঘণ্টারও কম সময়ের মাথায় চার্চের পার্শ্ববর্তী একটি দরজা দিয়ে বের হয়ে যান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ইন্ডিপেনডেন্ট জানায়, বিক্ষুব্ধদের থেকে বাঁচাতে পুলিশ চারপাশ থেকে তাকে ঘেরাও করে গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যায়।
বুধবার ১টা ১৫ মিনিটের দিকে পশ্চিম লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে লাগা আগুনের তাণ্ডবে ভবনটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সবশেষ সরকারী ভাষ্যে ৫৮ জন নিখোঁজ জানিয়ে পুলিশ বলছে, তাদের কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। এই ৫৮ নিখোঁজের মধ্যে ৩০ জনের মৃত্যুর খবর আগেই নিশ্চিত করেছে তারা।
এসএস/