বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে দেশ: ফখরুল চক্রান্তের ফাঁদে না পড়ে সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণের আহ্বান শায়খ আহমাদুল্লাহর ভোলায় জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও স্মরণসভা চরমোনাইর বার্ষিক অগ্রহায়ণ মাহফিল বুধবার, চলছে সর্বশেষ প্রস্তুতি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান আসিফ মাহমুদের অসহায় শীতার্তের পাশে মাওলানা গাজী ইয়াকুবের তাকওয়া ফাউন্ডেশন দেশের তিন জেলায় শিক্ষক নিচ্ছে ‘আলোকিত মক্তব’ বৃদ্ধার দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবন্ধীদের ধর্মীয় ও কারিগরি শিক্ষা দিতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে: ধর্ম উপদেষ্টা ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র সফল হবে না: মাওলানা আরশাদ মাদানী

ভারতে হিন্দু ও মুসলিম তীর্থযাত্রীদের ভর্তুকিতে বৈষম্য!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আজ রাজধানী দিল্লিতে এ বছরের কৈলাস ও মানসরোবর তীর্থযাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছেন, যার ভর্তুকি নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক।

আসলে এই যাত্রার সূচনা হল এমন একটা সময়ে, যখন ভারতে হিন্দুদের জন্য তীর্থে সরকারি ভর্তুকি বাড়ছে - কিন্তু মুসলিমদের জন্য হজ ভর্তুকি কমছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য যেখানে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের জন্য ভর্তুকি দ্বিগুণ করেছে, সেখানে এ বছর থেকে হজযাত্রীদের একটা বড় অংশকে বিমানের বদলে জাহাজে সৌদি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে ভারত সরকার।

প্রতি বছর প্রায় হাজার দেড়েক ভারতীয় হিন্দুদের জন্য পবিত্র কৈলাস পর্বত ও মানসরোবর দর্শনে যান সরকারি ব্যবস্থাপনায় - যে তীর্থস্থানদুটি বর্তমানে চীনের তিব্বতের ভেতর পড়ছে। এই ভারতীয়দের মধ্যে বেশির ভাগই উত্তরপ্রদেশের।

আড়াই মাস আগে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ওই রাজ্য থেকে যারা কৈলাস-মানসরোবর যাবেন তাদের জন্য মাথাপিছু সরকারি ভর্তুকি দ্বিগুণ বাড়িয়ে এক লক্ষ রুপি করা হবে।

[caption id="" align="alignnone" width="645"]কৈলাস-মানসরোবরের পথে তীর্থযাত্রীরা (ফাইল চিত্র) কৈলাস-মানসরোবরের পথে তীর্থযাত্রীরা (ফাইল চিত্র)[/caption]

ওই তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে দিল্লির উপকন্ঠে নয়ডা বা গাজিয়াবাদে একটি ভবন নির্মাণ করা হবে বলেও ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, যাতে তারা সেখান থেকে যাত্রা শুরু করতে পারেন।

উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও গুজরাটের মতো বেশ কয়েকটি বিজেপি-শাসিত রাজ্যও তাদের নিজ নিজ রাজ্যের বাসিন্দাদের কৈলাস-মানসরোবর যাত্রার জন্য বেশ কয়েক হাজার রুপি করে ভর্তুকি দিয়ে থাকে।

কৈলাস-মানসরোবর যাত্রীদের প্রত্যেকের গড়ে আড়াই লক্ষ রুপি করে খরচ করতে হয়, তবে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা হলে এখন তার চল্লিশ শতাংশ খরচই বহন করছে রাজ্য সরকার। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারও কিছু খরচ বহন করে থাকে।

কিন্তু গত পাঁচ বছরে কৈলাস-মানসরোবর তীর্থযাত্রীদের জন্য সরকারি ভর্তুকি যখন ধাপে ধাপে বেড়েছে, তখন মুসলিম হজযাত্রীদের জন্য ভর্তুকির পরিমাণ ক্রমশই কমে চলেছে।

[caption id="" align="alignnone" width="656"]প্রতি বছর ভারত থেকে প্রায় দেড়-দুলক্ষের মতো মুসলিম হজযাত্রায় যান প্রতি বছর ভারত থেকে প্রায় দেড়-দুলক্ষের মতো মুসলিম হজযাত্রায় যান[/caption]

২০১২ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, যে মুসলিম তীর্থযাত্রীরা বিমানে চেপে হজে যান তাদের ক্ষেত্রে ভর্তুকির পরিমাণ পরবর্তী দশ বছরের মধ্যে একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে।

তখন ক্ষমতায় থাকা মনমোহন সিংহের নেতৃত্বে ইউপিএ সরকার ও পরবর্তীতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার সেই নির্দেশ অনুযায়ীই কাজ করেছে - এবং হজযাত্রীদের ভর্তুকি ক্রমশই কমছে।

এমন কী, হজে ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে সরকার প্রায় আঠারো বছর পর আবারও জাহাজে করে যাত্রীদের সৌদি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে বিমানযাত্রার তুলনায় খরচ হয় প্রায় অর্ধেক।

এম ভি আকবরি নামে একটি সরকারি জাহাজ বহু বছর ধরে হজযাত্রীদের নিয়ে মুম্বই থেকে জেড্ডা পাড়ি দিত। কিন্তু ১৯৯৫ সালে জাহাজটি পুরনো ও বিকল হয়ে পড়ায় ভারত থেকে জাহাজে চেপে হজে যাওয়া বন্ধই হয়ে যায়।

হজযাত্রীদের ভর্তুকি কমানোর চেষ্টায় সরকার এখন আবার মুম্বাই, কলকাতা বা কোচির মতো বন্দরগুলো থেকে নতুন করে হজযাত্রীদের জাহাজ চালু করতে চাইছে, সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি সে কথা সম্প্রতি নিশ্চিতও করেছেন।

তবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো সংগঠনগুলো মনে করছে এত বছর ধরে হজযাত্রার জন্য ভারত সরকার যে শত শত কোটি রুপির বিপুল ভর্তুকি দিয়ে এসেছে - তাদের ভাষায় সেই 'সংখ্যালঘু তোষণ নীতি'-র একটা পাকাপাকি অবসান হওয়া দরকার।

পরিষদের মুখপাত্র বিজয় শঙ্কর তিওয়ারির কথায়, "প্রতি বছর কৈলাস মানসরোবরের জন্য মোট ভর্তুকির পরিমাণ বোধহয় এক কোটি রুপিও হবে না। সেই জায়গায় হজযাত্রার জন্য সরকারি কোষাগার থেকে প্রতি বছর খরচ হচ্ছে আটশো কোটি রুপিরও বেশি। ফলে দুটোর মধ্যে তো কোনও তুলনাই হতে পারে না!

ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম নেতা ও আসাম থেকে নির্বাচিত এমপি সিরাজুদ্দিন আজমল এই নীতিকে 'দ্বিচারিতা বলে বর্ণনা করে বলেছেন, "ভারত যদি নিজেকে নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলে দাবি করে থাকে, তাহলে দুই ধর্মের মানুষের জন্য দুরকম নীতি কেন হবে? কৈলাস-মানসরোবর যাত্রায় ভর্তুকি বাড়ানো হলে হজযাত্রার ভর্তুকিও বাড়ানো উচিত।"

সুত্র:বিবিসি অনলাইন।

ভারতে রোজাদার মুসলিম তরুণীকে ধর্ষণ: প্রতিকার চেয়ে মোদীর কাছে আবেগী চিঠি

ভারতে জবাইয়ের জন্য গরু কেনাচেনা নিষিদ্ধ: প্রতিবাদে গোশত খাওয়ার উৎসব

গরুর গোশত নয় মোদির দল ছাড়লেন তিন নেতা

এসএস/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ