প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘প্রতারণা ও মানুষকে বোকা বানানোর’ বাজেট হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাজেটের আকার বড় করা হলেই ভালো বাজেট হয় না।’
আজ রোববার সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বাজেট নিয়ে দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতো জনকল্যাণমূলক খাত উপেক্ষা করে নির্বাচন সামনে রেখে উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। সরকারি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মেটানোর জন্য সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপানো হয়েছে।
নিত্যপণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট কমানো এবং আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট ডকুমেন্টের শিরোনামের সঙ্গে দুটি স্লোগান ব্যবহার করেছেন। সেই স্লোগান হলো ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের’। কিন্তু এই ‘উন্নয়নের মহাসড়ক’ খানাখন্দকে ভরা। এর ওপর দিয়ে চলতে গেলে পদে পদে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই বাজেট মানুষকে বোকা বানানোর বাজেট, প্রতারণার বাজেট। এই বাজেট বেপরোয়া অর্থ সংগ্রহের বাজেট। জনগণের কাছে সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলেই এই বঞ্চনার বাজেট জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘টাকার অঙ্কের দিক থেকে এই বাজেট বাংলাদেশের জন্য সর্বকালের বৃহত্তম বাজেট। এই বাজেট বিশ্লেষণ করে আমরা যুগপৎ বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং হতাশ হয়েছি। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা বলেতে পারি, এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। কেবল অলীক স্বপ্ন-কল্পনাই এই প্রস্তাবিত বাজেটের ভিত্তি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাজেট পেশের দিনেই বাজেটের বাইরে বাড়ানো হয়েছে গ্যাসের দাম। বিদ্যুতের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বাড়লে বেড়ে যাবে উৎপাদন খরচ। বাড়বে মূল্যস্ফীতি। বিদ্যুৎ-ভ্যাট দেশীয় উৎপাদনের বিশাল ক্ষেত্রজুড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।’
‘লোকের চোখে দৃশ্যমান উন্নয়ন করতে গিয়ে, দ্বিগুণ-চারগুণ অর্থ ব্যয় করে একদিকে সম্পদের অপচয় ঘটানো হচ্ছে, অন্যদিকে রেন্ট-সিকিং বা দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প গ্রহণে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হচ্ছে না। প্রকল্প ব্যয়েও স্বচ্ছতা নেই। ব্যয়ের গুণগত মান বজায় রাখা হচ্ছে না।’
বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, আইনের শাসন, সুশাসন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থা, দেশের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা সম্পর্কে আস্থার মনোভাব নিশ্চিত না করে কোনো বিশেষ খাতকে শুল্ক সংরক্ষণ সুবিধা দিলে তা নিজ থেকেই বিকশিত হবে, এমনটি আশা করা যায় না। এ কথা সৌর প্যানেল শিল্পের ক্ষেত্রেও সত্য। আমরা ‘গ্রিন-এনার্জি’কে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সৌর প্যানেলের ওপর আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি না করার সুপারিশ করছি।
এসএস/