আওয়ার ইসলাম : কাতার সংকট বেশ ভাবনায় ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশকে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি অবস্থান করায় কাতার সংকটে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে বাংলাদেশ। মধ্যপ্রাচ্যের চলমান রাজনৈতিক সংকটে দৃশ্যত কোনো অবস্থান ব্যক্ত না করলেও সমঝোতার মাধ্যমে এ সংকটের অবসান চায় বাংলাদেশ।
কাতার ইস্যুতে সৃষ্ট পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিকভাবে নজর রাখছে বাংলাদেশ। সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ওই অঞ্চলের দেশগুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতরা পরিস্থিতির ওপর প্রতিবেদন ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছেন। সৌদি আরবে বাংলাদেশের প্রায় ১৮ লাখ কর্মী কর্মরত। উপসাগরীয় অন্য দেশেও বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক কর্মী আছেন।
অপরদিকে, কাতারে বাংলাদেশের কর্মী আছেন তিন লাখ ৮০ হাজার। প্রতি মাসেই ১০ থেকে ১২ হাজার বাংলাদেশি কর্মী কাতারে যাচ্ছেন। ২০২২ সালে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও বাংলাদেশের কর্মীদের প্রয়োজন হবে। এছাড়া সম্প্রতি কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি হয়েছে যার অধীনে এক দশমিক আট বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত রাখবে কাতার।
কাতার-সৌদি ইস্যু যেভাবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মাওলানা লিয়াকত আলী
বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন মঙ্গলবার বলেন, আমি এটা ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এ সমস্যা স্থায়ীভাবে থাকবে না। ফলে সৌদি আরবের কথায় আমাদের কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা ঠিক হবে না।
তিনি আরও বলেন, কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেখানে বাংলাদেশের যে কর্মীরা আছেন তারা যাবেন কোথায়? কাতার ছোট দেশ হলেও বাংলাদেশের কর্মী সেখানে অনেক বেশি। এখন সম্পর্ক ছিন্ন করলে, পরে যদি সম্পর্ক ঠিক হয়েও যায়, কাতার সেটা ভুলবে না। ফলে আমাদের ক্ষতি হবে।
তাই আমাদের এমনভাবে চলতে হবে যে, সৌদি আরব ও কাতার উভয়ের সঙ্গেই সম্পর্ক ঠিক থাকে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুটা দৃঢ় হতে হবে। আর দৃঢ় হলেই যে ক্ষতি হবে এটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ বলেন, আমরা পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এখন পর্যন্ত কুয়েতের আমীরের সমঝোতার উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমাদের এখন অপেক্ষা করে দেখা ছাড়া তেমন কিছু করার নেই। পরিস্থিতির প্রতি আমাদের নজর থাকবে।
সম্প্রতি কাতারের বার্তা সংস্থার ওয়েবসাইটে দেশটির আমীরের বরাত দিয়ে সৌদি আরব এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্পর্কে সমালোচনা করে দেয়া মন্তব্য দেখা যায়। সেখানে ইরান ও মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষে বক্তব্যও দেখা যায়। এ নিয়ে সৌদি আরবসহ তাদের মিত্র দেশগুলোতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কাতার অবশ্য এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেছে, হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ওয়েবসাইটে আমীরের এসব মন্তব্য জুড়ে দেয়া হয়েছে। কাতার এটাকে ভয়াবহ ‘সাইবার ক্রাইম’ হিসেবে অভিহিত করছে।
-এআরকে