বাজেটে কর বৃদ্ধি নিয়ে বিড়ি শ্রমিকদের সঙ্গে তুমুল বিতর্কে মাতলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এক পর্যায়ে তিনি বিড়ি শ্রমিক নেতাদের সাফ জানিয়ে দেন, তিন বছর পর বাংলাদেশে বিড়ি থাকবে না।
গতকাল সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্দোলনরত বিড়ি শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিড়ি ইজ ডেঞ্জারাস ফর হেলথ দেন সিগারেট। ’ বৈঠকে বিড়ি শ্রমিকদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ দে ও সাধারণ সম্পাদক ডা. শেখ মহীউদ্দিন। বিড়ি শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। এটা করার অধিকার আপনাদের নেই। ’
এ সময় অর্থমন্ত্রীর সামনে বিড়ি শ্রমিকদের পক্ষে পাল্টা যুক্তি তুলে ধরেন ডা. শেখ মহীউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বিড়ির ওপর ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০ শতাংশ। অন্যদিকে সিগারেটের ওপর ট্যাক্স কমানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। এটা হলে বিড়ি শিল্প ধসে পড়বে। লাখ লাখ বিড়ি শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। ’ জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দুই বছর পরে বাংলাদেশে আর বিড়ি রাখব না। ’
এ সময় মন্ত্রী প্রশ্ন করে বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো দেশে বিড়ি আছে? জবাবে ডা. শেখ মহীউদ্দিন বলেন, ‘ভারতে আছে। ’ অর্থমন্ত্রী আবার প্রশ্ন করেন, ‘পাকিস্তানেও কি নেই?’ ডা. শেখ মহীউদ্দিন বলেন, না পাকিস্তানে নেই, ভারতে আছে। তারপরেও কোনো অবস্থাতেই প্রাণঘাতী বিড়িকে বাংলাদেশে রাখা হবে না বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আর কোনোভাবেই বিড়িকে থাকতে দেওয়া হবে না। এ সময় ডা. শেখ মহীউদ্দিন বলেন, ‘আপনি বিড়ি বন্ধ করে সিগারেট মানুষের হাতে তুলে দিতে পারেন না। এটার অধিকার আপনার নেই।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা তো বিড়ি খাইয়েও মানুষকে মারতে পারেন না। এটার অধিকারও আপনাদের নেই। এ পর্যায়ে ডা. শেখ মহীউদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে এক হাজার কোটি টাকার কাঁচা তামাক পড়ে আছে কাঁচামাল হিসেবে। আমরা এগুলো এখন কী করব? আপনি তো আমাদের অভিভাবক।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ঠিক আছে, আপনাদের দুই বছর না তিন বছর সময় দেওয়া হলো। এর মধ্যে সব শেষ করে ফেলেন। আমরা সিগারেটের পক্ষেও না। সেটা নিয়েও কাজ চলছে।
এসএস/