আতাউর রহমান খসরু : গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি শিক্ষা সনদের মান ঘোষণার পর থেকে এর বিরোধিতা করে আসছে কথাকথিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা'আত বা সুন্নী জামাত। প্রধানমন্ত্রী কওমি শিক্ষার সনদের মান ঘোষণা করার পরের দিন ১২ এপ্রিল সাংবাদিক সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ করে তারা।
১৩ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলে ১৫ এপ্রিল আবারও সংবাদ সম্মেলন করে তথাকথিত সুন্নী জামাত। ১৭ ও ১৮ এপ্রিল দেশের জেলা-উপজেলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল এবং ২০ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে তারা।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মে রবিবার কওমি শিক্ষা সনদের সরকারী স্বীকৃতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গেজেট বাতিলের চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা'আত সমন্বয় কমিটি।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা'আত সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে রিট আবেদন করেন কেন্দ্রিয় নির্বাহি সদস্য মাওলানা সৈয়্যদ মুজাফ্ফর আহমদ। আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত সমন্বয় কমিটির মিডিয়া সেলের পক্ষে মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে গণমাধ্যম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর কওমি স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটিি আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ-এর নেতৃত্ব বিষয়টি অবগত হন এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হয়েছেন।
এ ব্যাপারে আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ বাংলাদেশ-এর কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী বলেন, ‘আমরা তাদের রিটের জবাব দিতে প্রস্তুত। আইনী প্রক্রিয়াতেই আমরা এর উত্তর দিবো। আমরা খোঁজ খবর নিয়েছি এবং একজন আইনজীবীও নিয়োগ দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বীকৃতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের সরকার। তারা রিটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারকেই চ্যালেঞ্জ করেছে। আমরা আশা করি, শুধু আমরা নই; সরকারও তাদের উপযুক্ত উত্তর প্রদান করবেন।’
আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়্যাহ বাংলাদেশ-এর সদস্য এবং বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা বোর্ড বেফাকের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আল্লামা আবদুল কুদ্দুসও বলেন, ‘আমরা সর্বেোচ্চ মহলে খোঁজ নিয়েছি এবং নিচ্ছি। এর আইনী মোকাবেলার জন্য যা যা করণীয় আমরা তার সবই করবো। একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আশা করি, আমরা এর উপযুক্ত জবাব দিতে পারবো।’
এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের করণী সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, যেহেতু সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। তাই সরকার স্বেচ্ছায় স্বীকৃতির পক্ষভূক্ত হয়েছে। এখন সরকারেরই দায়িত্ব এ রিট খারিজের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
তবে আলেমরা সংক্ষুব্ধ হিসেবে এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষভূক্ত হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তারা সরকারের সহায়তা নিয়ে রিট খারিজের উদ্যোগ নিবেন। এটাই আমার পরামর্শ।
-এআরকে