রোকন রাইয়ান
গত ১১ মে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ‘মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের’ নামে একটি সড়ক উদ্বোধন করা হয়েছে। সড়কটি উদ্ভোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আড়ম্বর ব্যবস্থাপনায় সড়কটি উদ্বোধন করা হয়। এসময় আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ সালাহ উদ্দীন আহমেদ মুক্তি, ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠান, পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলামসহ অনেকে।
একই সময় স্থানীয় মানুষজনের উপস্থিতিতে গরিব ও দুস্থদের মধ্যে বিনামূল্যে রিকশা ভ্যান প্রদান করা হয়। ময়মনসিংহের সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল আমিন জানান, দশজন অসহায় ব্যক্তিকে বিনামূল্যে ১০টি ভ্যান দেয়া হয় এবং ১০ দম্পতিকে যৌতুকমুক্ত বিয়েও পড়ানো হয়।
জানা যায়, একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার ওই সড়কটি বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন, শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের গ্র্যান্ড ইমাম আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদের নামে করা হয়। সরকারি উদ্দ্যোগে এলজিইডি ময়মনসিংহের তত্ত্বাবধানে সড়কটি নির্মিত।
আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ উনিশশো একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে জনমত তৈরিসহ মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ প্রদান ও মুক্তিবাহিনীকে সবধরনের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছিলেন তিনি।
কিশোরগঞ্জে জন্ম নেয়া ঢাকায় বসবাসকারী আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের নামে মুক্তাগাছায় কেন সড়ক এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় দুই দশক ধরে মুক্তাগাছার গাবতলী-ছালড়া গ্রামে তিনি সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কাজ করছেন।
এ এলাকার মানুষের জীবন মান উন্নয়নে তার রয়েছে অনেক ভূমিকা। যে সড়কটি তার নামে নামকরণ হয়েছে সেটিও তিনি মন্ত্রণালয় থেকে বহু প্রচেষ্ঠায় অনুমোদন করিয়েছেন।
ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদ নামে একটি সামাজিক সংগঠনও রয়েছে মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের। আশির দশক থেকে যেটি সমাজ সেবার ব্রত নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন জেলায় দরিদ্রদের সহায়তায় রিক্সা-ভ্যান প্রদান, কোথাও উৎপাদনশীল ছাগল প্রদান এবং প্রায় প্রতিবছরই সংগঠনটির তত্ত্বাবধানে যৌতুকমুক্ত গণ বিয়ের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
বৃহস্পতিবার সড়কটি উদ্বোধনের সময় বক্তৃতাকালে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের সমাজসেবামূলক কাজের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এ এলাকার জীবন মান উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখেছেন আল্লামা মাসঊদ এ জন্য আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
সমাজে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপনে সবার এগিয়ে আসা উচিত বলেও মন্তব্য করেন অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।
উল্লেখ্য, দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অবদানের স্বীকৃতি ও জনগণের মাঝে তাদের স্মরণীয় করে রাখতে ব্যক্তির নামে সড়কের নামকরণ করা হয়ে থাকে। ইতোপূর্বেও বেশ কয়েকজন আলেমের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে সড়কের নাম করণ করা হয়েছে।
তবে সেগুলোর মধ্যে সম্প্রতি হাফেজ্জী হুজুর রহ. ও মুফতি আমিমুল ইহসান রহ. এর নামে সড়কের নাম দুটি উঠিয়ে দেয়া হয়। যেটিপূনর্বহাল দাবিতে আলেমগণ এখনো আন্দোলন করছেন। এছাড়া বসুন্ধরায় ফহিহুল মিল্লাত মুফতি আবদুর রহমানের নামে একটি সড়ক এখনো রয়েছে।