ইমদাদ ফয়েজী, সিলেট প্রতিনিধি
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ডের শিববাড়ির আতিয়া মহলে চতুর্থ দিনের মতো সেনাবাহিনী, র্যাব, সোয়াট, পুলিশ-এর যৌথ অপারেশন অব্যাহত রয়েছে। এখনো বলা যাচ্ছে না অভিযান কখন শেষ হবে।
গতকাল (রোববার) থেকে শিববাড়ি এলাকার তিন বর্গ কিলোমিটার জুড়ে জারি করা ১৪৪ ধারা এখনও বহাল আছে। ঘটনাস্থল ঘেষা হওয়ায় বন্ধ রয়েছে হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জ রোড।
গতকাল বিকেলেই তিন বর্গ কিলোমিটার এলাকার বাইরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সংবাদকর্মীদের।বন্ধ রয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্কগুলো। আশপাশের সড়কগুলোতে স্থাপিত চেকপোস্টে পুলিশের সতর্ক নজরদারির সঙ্গে রয়েছে সেনা টহল। চেকপোস্টের কাছে সাংবাদিকদসহ কাউকেই যেতে দেয়া হচ্ছে না।
শিববাড়ি পয়েন্টে আগ থেকে রাখা এপিসি, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার ব্রিগেড ও সেনাবাহিনীর গাড়ির বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সামরিক যান। আতিয়া মহলের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন সেনবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোর সদস্যরা।
এদিকে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগছেন শিববাড়ি, জৈনপুর, বান্দর ঘাট, পাঠানপাড়া, তালুকদার পাড়া, কৈত্তপাড়া, মাঝের হাট, পশ্চিমপাড়া, এলাকার বাসিন্দারা। বন্ধ রয়েছে স্থানীয় দোকানপাট। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় কেউ বাইরে বের হতে পারছেন না। গ্যাস-বিদ্যুৎ বিচ্ছিন থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা পড়েছেন বেশ ভোগান্তিতে। অনেকে ফেসবুকে এ বিষয়ে পোস্ট করে কষ্ট, দুর্ভোগ, উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
শিববাড়ি বাজার সংলগ্ন জৈনপুরের প্রবীণ বাসিন্দা সিলেট হেড পোস্ট অফিসের অব. এপিএম আলহাজ্ব এম এ হামিদ এর কাছে এলাকার বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন- 'দীর্ঘ জীবনে আমাদের শিববাড়ি কেন সিলেটের কোথাও এ রকম কঠিন, ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নি। এ ঘটনায় সিলেটসহ গোটা দেশবাসী আতংকিত। আমরা অনেক কষ্ট ও ভীতির মাঝে আছি। অপারেশনটি সফল হোক এবং আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন।'
ব্যাংকার ইফতেখারুল হক বলেন- 'আমাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা শিববাড়িতেই। এ এঘটনাটি কল্পনা করতেও কষ্ট হচ্ছে। বাসায় গ্যাস নেই। পাড়ার লোকেরা বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। বিকল্প রাস্তায় কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। জঙ্গিদের কবল থেকে সিলেটবাসী আশু মুক্তি পাক, দেশবাসী শান্তিতে থাকুক।'
ঘটনাস্থল থেকে কোয়াটার কিলো. দূরে অবস্থিত মসজিদে বায়তুল মুনীর-এর পেশ ইমাম হাফিজ মাওলানা আব্দুল মজিদ বলেন, 'আতিয়া মহলের জঙ্গি ঘটনাটি শান্ত, শান্তিপ্রিয় সিলেটবাসীকে চরম অশান্তি আর অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। ১৪৪ ধারার ফলে বাসার লোকজন বের হতে পারছেন না। নিত্যপ্রয়োজনিয় দ্রব্যাদির জন্য মানুষকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। ইসলামে জঙ্গিবাদের কোনোও স্থান নেই। জঙ্গিরা দেশ ও জাতির শত্রু। সাম্প্রতিক জঙ্গি ঘটনাগুলো দেশ ও ইসলামকে কলুষিত করছে। ওদেরকে ধরে ধরে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হোক। আল্লাহ দেশ ও জাতির হেফাজত করুন।'
এদিকে অসমর্থিত সুত্রে জানা গেছে- এ পর্যায়ে অপারেশন চূড়ান্ত দিকে এগুচ্ছে। ধ্রিম ধ্রিম আওয়াজে স্থানীয়রা মনে করছেন বিল্ডিং ভাঙ্গা হচ্ছে। একবার প্রচুর ধোঁয়া উড়তেও দেখা গেছে।
-এআরকে