শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা

উদ্ভট রাজনৈতিক দল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

dolরোকন রাইয়ান : মজার জন্য মানুষ কত কিছুই না করে। তাই বলে তামাশা করতে দল গঠন? হ্যা এমন ইতিহাসও তৈরি করেছে বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষেরা। বিশ্বের ইতিহাসে এমন কিছু রাজনৈতিক দল আছে যা গঠন করা হয়েছিল আনন্দ আর বিদ্রুপ করার জন্য। কিন্তু পরবর্তিতে সেগুলোই আবার গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছে। লিপ্ত হয়েছে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। আসুন জেনে নেই এমন পাঁচটি দল সম্পর্কে।

The Rhinoceros Party of Canada (কানাডার গন্ডার পার্টি)

নাম গন্ডার পার্টি হলেও এটি আদৌ গন্ডারদের পার্টি নয়। মানুষেরই গড়া পার্টি এবং রীতিমতো অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতোই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে এরা। তবে এর প্রতীক হিসেবে গন্ডারের ছবিই বেছে নেয়া হয়েছে।

কানাডার বিদ্রুপাত্মক রাজনৈতিক দলের একটি দীর্ঘ ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে বিচিত্র পার্টির তালিকায় রয়েছে ‘দ্য রাইনোচেরস পার্টি অফ কানাডা’। মানুষকে হাস্যরসের খোরাক জোগানোর পাশাপাশি অধিকারের আন্দোলনও করত দলটি। ১৯৬৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে দলটি। এমন বিচিত্র ও হাস্যকর নামের কারণেই খুব শিগগির মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়ে যায়। টানা ৩০ বছর উদ্ভট সব হ্যাডলাইন তৈরি করেছে মিডিয়ার জন্য।

দলটির প্রতিষ্ঠাতা জ্যাকুইস ফেরন। ১৯২১ সালের ২০ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। মারা যান ১৯৮৫ সালের ২২ এপ্রিল। জ্যাকুইস ফেরন পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। তবে লেখালেখিও করতেন তিনি। সাধারণ খেয়ালের বসেই তিনি দলটি তৈরি করেছিলেন। তবে গঠনের পর এটি আর সাধারণ থাকেনি। সিরিয়াস নাগরিক আন্দোলনে মোড় নিয়েছে।

১৯৭০ সালে পার্টিতে একদল নামকরা শিল্পী যোগ দিলে এটি আরো শক্তিশালী হয়। শুধু তাই নয় সে বছরই দলটি দেশের সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতিও নিতে থাকে। এরমধ্যে জ্যাকুইস ফেরন, কবি গ্যাস্টন ও গায়ক মিশেল দেশটির মন্ট্রিল আসন থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রুডোর বিপক্ষে প্রতিদ্ব›িদ্বতাও করেন। পার্টির সদস্যরা মার্কস ও কমিউনিস্ট মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। দলটি ১৯৬৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ৭ বার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলেও কোনো একটি আসন জিততে পারেনি। এর মধ্যে ১৯৮০ সালে সবচেয়ে বেশি ১২০ জন প্রার্থী নির্বাচন করে ভোট জিতেছেন ১,১০২৮৬ টি।

The  Guns and Dope Party (পিস্তল এবং মাদক পার্টি)

এই দলটি স্রেফ তামাশা এবং মজা করার জন্যই তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এই মজা করা থেকেই একসময় মানুষ একে আপন করে নিতে থাকে। প্রচুর পরিমাণে হতাশাগ্রস্ত মানুষ ভিড়তে থাকে এই দলে একটু আনন্দ খোঁজার আশায়। আর এভাবেই দলটি এক সময় বৃহত্তর দলে পরিণত হয়।

ক্যালিফোর্নিয়ার এ দলটি গঠন করা হয় ২০০৩ সালে। জনকের নাম রবার্ট অ্যাডওয়ার্ড ইউলসন। ইউলসন একজন আমেরিকান লেখক, সম্পাদক, নাট্যকার, কবি ও মনোবিজ্ঞানী। আপাদমস্তক একজন মানবতাবাদী ছিলেন। লেখায় নিপিড়িত মানুষের পাশে থেকেছেন সব সময়। লিখেছেন ৩৫ টি বই। ‘দ্য ইল্যুমিনেটাস ট্রিলজি, কসমিক ট্রিগার’ তার বিখ্যাত গ্রন্থের মধ্যে অন্যতম।

দ্য গানস এন্ড ডোপ পার্টি যে কেবল মানুষের বিনদন তৈরি করেছে তাই নয়। ক্যালিফোর্নিয়ার একটি নির্বাচনে এই দল থেকে অংশ নেয়া আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার নির্বাচিত হন।

রবার্ট উইলসন ছিলেন একজন উদারবাদী মানুষ। তিনি এক সময় চিন্তা করেছিলেন ডানপন্থী বন্দুকধারী আর বামপন্থী মাদকসেবীকে যদি এক করা যায় তবে এটিই একসময় সংখ্যাগরিষ্ট দলে পরিণত হবে। এ কারণেই দলটির স্লোগান ছিল এমন বিচিত্র সব কথা। যেমন, ‘আমি তোমাকে সহ্য করবো যদি তুমি আমাকে সহ্য করো’।

ক্যালিফোর্নিয়ার প্রজাতন্ত্রে সাংবিধানিক গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে দলটি। পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে থাকে দলটি। দলটির প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট ইউলসন মারা যান ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলটি নিয়ে বেশ আশাবাদি ছিলেন তিনি। ক্যালিফোর্নিয়ায় তার দলটির এখনো বিদ্যমান রয়েছে।

The Canadian Extreme Wrestling Party (কানাডিয়ান রেসলিং পার্টি)

রেসলিং একটি জনপ্রিয় খেলা। তরুণদের কাছে এটি অন্যরকম আগ্রহের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তাই বলে এটি নিয়ে পেশাদার রাজনৈতিক দল গঠন হবে তা কে জানত? ১৯৯৯ সালে এক আড়ম্বর পরিবেশে গঠিত হয় এই দল। এটি পেশাদার অপেশাদর কুস্তিগিরদের দল এটি। বর্তমানে দলটি কানাডার নির্বাচন কমিশনে রেজিস্ট্রিকৃত। এগার সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে দলটির। তবে এই দলের লিডার নির্বাচন করা হয় একটি অদ্ভুত পদ্ধতিতে। আর সেটা হলো ১১ সদস্যের মধ্যে রেসলিং প্রতিযোগিতা দেয়া হয়, সেখানে যে জিতবে তিনিই হবেন দলের লিডার। এভাবেই মেয়াদ শেষে পুনরায় নেতা নির্বাচন করে দলটি।

রসিকতার মাধ্যমে শুরু হলেও বছর না ঘুরতেই বিপুল সংখ্যক মানুষের সমর্থন পায় কানাডিয়ান রেসলিং পার্টি। এভাবে ক্রমেই নাগরিক দায়বদ্ধতায় জরিয়ে পড়ে নেতারা। তারা কানাডার পরিবেশ ও অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে কাজ করতে থাকে। এভাবেই মানুষের মন জয় করে ২০০০ সালে কানাডার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে একটি আসন জিতে নেয় দলটি। নিউফাউন্ডল্যান্ড থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া জন্স ওয়েস্ট এর নির্বাচনি স্লোগান ছিল- সংসেদ একজন moondog ও প্রয়োজন রয়েছে। তার এমন উদ্ভট আবদার ভোটারদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়। একজন পেশাদার রেসলার জন্স ওয়েস্ট। ওয়ার্ল্ড রেসলিং ফাউন্ডেশনের সাবেক সদস্য।

The Surprise Party (দ্য সারপ্রাইজ পার্টি)

সারপ্রাইজ পেতে কে না ভালোবাসে। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের নাম যদি হয়ে যায় বিষয়টি কেমন হবে? জনপ্রিয় কমেডিয়ান জিওরেস বার্ন এর স্ত্রী গ্রাসিক এ্যালেন গঠন করেন দলটি। তবে এটা নিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট হতে বেশ আশাবাদী ছিলেন। দল গঠন করেই সারা আমেরিকা ঘুরতে থাকেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য। তার মূল দুটি স্লোগান ছিল, ‘ইটস ইন এ ব্যাগ’ এবং ডাউন ইউথ কমনসেন্স’। বিচিত্র ব্যাপার হলো এই দলের প্রতীক হলো ক্যাঙ্গারু। আর এ কারণে এ্যালেন সব সময় নিজের সঙ্গে একটি জ্যান্ত ক্যাঙ্গারু রাখতেন।

এ্যালেন তার দল নিয়ে একবার সফল হন। তিনি মিশিগানের মেনোমেইনি শহরের মেয়র নির্বাচিত হন কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল আরো বড় যে কারণে পদটি তিনি গ্রহণ করেননি। বরং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য আরও জোরেশোরে নেমে পড়েন।

The Polish Beer Lovers Party (বিয়ারপ্রেমী দল)

যারা বিয়ার খেতে ভালোবাসেন তাদের নিয়ে তৈরি হয় এই দল। কিন্তু মজা করে তৈরি হলেও ব্যাপক সাফল্য পায় এই দল। এটি গঠন করেন জানুসজ রিউস্ক নামের এক বিয়ারপ্রেমী। দল গঠনের পরপরই শুরু করেন মদের বিরুদ্ধে প্রচারণা। পোল্যান্ডে ছিল ভদকার খুবই চাহিদা এবং প্রচলন। আর তাই ভদকা বাদ দিয়ে বিয়ার খাওয়ার আহবান জানিয়ে প্রচারণা শুরু করে তারা। তাদের স্লোগান ছিল, ইটস ওয়ান্ট বি ব্যাটার বাট ফর শিউর ইট’। শুরুতেই ব্যাপক সাড়া পায় দলটি। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে এই দলের ১৬ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। এই ঘটনার পর সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। এখনও তারা দল পরিচালনা করছে আগের মতোই।

সূত্র: টপটেনজ ডটনেট

কোন ফাঁদে আটকে গেল কওমি স্বীকৃতি

কাতারে ইমাম নিয়োগ: কিছু কথা কিছু ব্যথা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ