হজ নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করে মন্ত্রীত্ব হারানো সাবেক এমপি লতিফ সিদ্দিকী এবার হজে যাবেন। আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রতিবেদন করেছে দৈনিক যুগান্তন।
পত্রিকাটি লিখেছে, প্রবীণ এ রাজনীতিক এখন নিয়মিত নামাজও আদায় করেন। কোরআন-হাদিস পড়েন। ধর্মচর্চায় অনেকখানি মনোনিবেশ করেছেন। এর প্রমাণও মিলেছে তার ফেসবুকে। ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করে দেশ-বিদেশে কোণঠাসা হয়ে পড়া লতিফ সিদ্দিকী গত বছর ১৩ ডিসেম্বর নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘বিশ্বে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও শান্তির ধর্ম ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা হজরত মুহাম্মদ সা. এর জন্ম ও মৃত্যু (ওফাত) দিবস আজ মঙ্গলবার। আমি তাঁর প্রতি হৃদয় উৎসারিত আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদন করছি। একই সঙ্গে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রত্যাশায় তাঁর দোয়া কামনা করছি।’
আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠজনদের মতে, রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাওয়ার পর অনেকটাই বদলে গেছেন তিনি। অনেকটাই অন্তরীণ এ রাজনীতিক। আচার-আচরণেও বেশ পরিবর্তন এসেছে তার। কথায় কথায় ‘ধমক’ দেয়ার অভ্যাসটাও আর আগের মতো নেই। পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনার বাইরে বেশিরভাগ সময় গুলশানের এক নম্বরের বাসায় কাটান। আত্মীয়স্বজন, পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে গল্প করে, আড্ডা দিয়ে, কখনও নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে, কখনও বই পড়ে সময় কাটাচ্ছেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। সময় পেলেই লেখালেখি করছেন, লিখছেন আত্মজীবনী। এর বাইরে প্রতি শুক্রবার নির্বাচনী এলাকা টাঙ্গাইলের কালিহাতি যান তিনি। সপ্তাহে দু’দিন তিনি সেখানেই অবস্থান করেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে শুক্রবারের জুমার নামাজ সেখানেই আদায় করেন। মূলত এসবের মধ্য দিয়ে রাজনীতির মাঠে আবার ফিরে আসার চেষ্টা করছেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মাঝেমধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এ বছর হজে যাওয়া, নিয়মিত নামাজ আদায় এবং ধর্মচর্চা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। অন্যকিছু জানতে চাইলে প্রশ্ন করতে পার। এ নিয়ে কোনো কথা বলব না।’ সময় কীভাবে কাটছে? জানতে চাইলে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি তো সময়ই পাই না। আমার হাতে সময় নেই।’
২০১৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি হোটেলে নিউইয়র্কের টাঙ্গাইল সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পবিত্র হজ প্রসঙ্গে বলেন, আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে তার চেয়েও হজ ও তাবলিগ জামাতের বেশি বিরোধী। তিনি আরও বলেন, এই হজে যে কত ম্যানপাওয়ার (জনশক্তি) নষ্ট হয়। হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোনো কাম নাই। এদের কোনো প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে। আবদুুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, এভারেজে (গড়ে) যদি বাংলাদেশ থেকে এক লাখ লোক হজে যায়; প্রত্যেকের পাঁচ লাখ টাকা করে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
তার এমন বক্তব্যের পর প্রতিবাদে ফেটে পড়ে সারাদেশ। গণমানুষের দাবির ফলে তাকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
আরআর
প্রতারণার শিকার ৭১ হাজার মানুষ হজে যেতে পারবেন না
ঋণের বোঝা সইতে না পেরে মাদরাসা শিক্ষকের আত্মহত্যা