সাজিদ নূর: ফেলে যাওয়া ফসলের ক্ষেত, জন শূন্য আগুনে পোড়া গ্রাম। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় এ দৃশ্যই এখন চোখে পড়ে।
গত দু’মাস সাংবাদিক অথবা মানবাধিকার কর্মীদের ওই অঞ্চলে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। তবে বিবিসি একজন বার্মিজ নাগরিককে ক্যামেরা দিয়ে পাঠিয়েছিল এলাকায়। তিনি গোপনে এ ছবিগুলো তুলেছেন।
কয়েক সাপ্তাহ আগেও এ গ্রামটি ছিল রহিঙ্গা মুসলমানে ভর্তি। এ গ্রামের দখল এখন বার্মিজ সেনাদের হাতে।
সেনাবাহিনী বলছে বিদ্রোহ দমনে তারা অঞ্চল খালি করছে। তবে অনেকের কাছে এটি জাতিগত নিধন, অনেকের কাছে গণহত্যা।
গ্রামগুলোর ভেতর দিয়ে কয়েক ঘণ্টা চলার পর কয়েক জন রোহিঙ্গা নারীর দেখা মিলে। তারা জানায় তাদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। ত্রিশ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অনেক রোহিঙ্গা তাদের দুর্দশার ভিডিও তুলে বিবিসির কাছে পাঠিয়েছে। নিরাপত্তার জন্য তাদের চেহেরা অস্পস্ট করে দেয়া হলো।
অবশ্য এই নারীরা যা বলছেন নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব নয়। তবে এ ফুটেজ এসেছে লংডং নামক এক গ্রাম থেকে এবং ওই গ্রাম থেকে অন্যান্য সূত্র থেকেও হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রেঙ্গুনে বিদেশি কূটনৈতিক মনোভাব দ্রুত বদলাচ্ছে। সংঘাত থাকা সত্বেও তারা অং সান সূচির বিরুদ্ধে মুখ খুলেননি। কিন্তু কূটনৈতিকদের বেশির ভাগই এখন বিকশিত হচ্ছেন যে, রাখাইনরা মানবাধিকারের অভিযোগ নিয়ে সেনাবাহিনী এবং মিস সুচি একই সুরে কথা বলছেন। মিস সুচির অফিস থেকে এখন, নিয়মিত ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে- সেনাবাহিনী আইন মেনেই কাজ করে যাচ্ছে। তারা কোন নির্যাতন করছে না বরং রোহিঙ্গা নিজেরাই তাদের বাড়িতে আগুন দিচ্ছে।
তবে সম্প্রতি তার সিঙ্গাপুর সফরের সময় বুঝা গেছে মিস সুচি চাঁপের মুখে আছেন। সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে একাটি কমিটি গঠন করেছন তিনি। তবে তার প্রধান করা হয়েছে সিনিয়ার একজন জেনারেলকে। ফলে ওই তদন্ত যে নিরপেক্ষ হবে তার সম্ভবনা কম। আর সে কারণে রাখাইন রাজ্যে আসলে কি ঘটছে, তার পুরো সত্য জানা হয়তো সম্ভব হবে না।
দেখুন বিবিসির রিপোর্ট
সূত্র: বিবিসি