আওয়ার ইসলাম: সিরিয়ার আলেপ্পো এখন লাশের স্তূপ। লাশে পূর্ণ হয়ে গেছে সব কবরস্থান। তাই রাস্তার ওপর বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে আছে মৃতদেহ। বিকৃত হয়ে গেছে তার অনেকগুলো। মানুষ পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে নির্বিকার হয়ে। আলেপ্পোর এমনই এক চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
এতে লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে সাংবাদিক সারাহ এড ডিব লিখেছেন, পুরনো আলেপ্পোর কবরখানা এক বছর আগেই পূর্ণ হয়ে গেছে। নতুন কবরস্থান ভরে গেছে গত সপ্তাহে। এখন সেখানকার রাস্তায় রাস্তায় পড়ে আছে মৃত দেহ। বাড়ির পিছনে কেউবা তার স্বজনকে দাফন করেছেন। মর্গ উপচে পড়ছে লাশে।
এ অবস্থায়ও সরকারি সেনারা বিরোধীদের দখলে থাকা পূর্ব আলেপ্পোতে অভিযান চালাচ্ছে। বেসামরিক মানুষের ওপর চলছে গোলা নিক্ষেপ। সেখানে আরও মানুষের মৃত্যু হবে। সেসব লাশ দাফন করার মতো কোনো জায়গা নেই বলে জানাচ্ছেন সেখানে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত মেডিকেল অফিসাররা।
স্থানীয় ফরেনসিক কর্তৃপক্ষের প্রধান মোহাম্মদ আবু জাফর বলেছেন, লাশ রাখার মতো আমাদের আর কোনো স্থান নেই। মর্গ উপচে পড়ছে। আমাদের বিভাগ লাশে ভরে গেছে। স্টাফরা তাদের দায়িত্বে দেয়া মৃতদেহগুলো নিয়ে কাজে ব্যস্ত। এ অবস্থায় আমরা আর লাশ বহন করতে পারবো না। এক্ষেত্রে যদি আমাকে গণকবর দিতে বলা হয় তাহলে সেই কবর খোঁড়ার মতো মেশিন আমার কাছে নেই।
উল্লেখ্য, দু’সপ্তাহ ধরে ওই এলাকায় বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সরকারি বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩১০ জন। এর মধ্যে শিশু ৪২টি। ২২০ জন বিরোধী যোদ্ধা। গত সপ্তাহে সরকারি বাহিনী পূর্ব আলেপ্পোর ১৭ বর্গমাইল এলাকায় ঢুকে পড়েছে। আয়ত্তে নিয়েছে এর অর্ধেক অংশ। বাকি অর্ধেকটার দিকে তারা অগ্রসর হচ্ছে। জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক স্টিফেন ও’ব্রায়েন পূর্ব আলেপ্পোতে প্রবেশের সুযোগ চেয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ওই এলাকা ‘বিশাল এক গোরস্থান’ হওয়ার আগেই তারা সেখানে প্রবেশ করতে চান। তবে এরই মধ্যে এটা গোরস্থানে রিণত হয়েছে। রাস্তার ওপর পচছে মৃতদেহ। এম্বুলেন্স বা উদ্ধারকারী যানবাহন তাদের কাছে যাচ্ছে না। কারণ, তারা ওই মৃতদেহের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলেই তাদেরকে টার্গেট করা হয়। অথবা তাদের কাছে পর্যাপ্ত জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে। এ অবস্থায় সেনারা যতই অগ্রসর হচ্ছে ততই সামনে আরও বহুগুণ ভয়াবহতার আশঙ্কা রয়েছে। ওই অঞ্চলে একটি মৃতদেহ বিড়ালে খাচ্ছে এমন খবর পেয়ে কিছু মানুষ এগিয়ে যান। আবু জাফর বলেন, একজন নারী ওই মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়ে দেন। এখনও জানা যায় নি ওই মৃতদেহ কার।
আরআর