আওয়ার ইসলাম: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন, দেশের খালেছ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কওমী মাদরাসাগুলো ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম তৈরিতে অগ্রসেনানী ছিলেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদী রহ.। তিনি সৎ, নিষ্ঠাবান, নিরহংকার ও বিনয়ী তথা বহুবিধ গুণ ও বিরল প্রতিভার অধিকারী একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। সততা, দৃঢ়তা ও নিষ্ঠাসহ নানাবিধ গুণের কারনে তিনি ছিলেন সর্বজনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন সফল মানুষ। জীবনের প্রতিটি ধাপে গুরুত্বসহকারে সুন্নাতের অনুসরণ করতেন। তিনি খুবই সাদামাটা জীবন-যাপন করতেন, একারণে অপরিচিত কেউ তাঁকে প্রথম দেখালে বুঝতে পারতেন না, তিনি এত বড় একজন মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তিনি দেশের আলেম-ওলামাদের ঐক্যের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। দেশের কওমী মাদ্রাসাসমূহের ঐক্য ও শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে চিন্তা-গবেষণাই ছিল তাঁর জীবনের প্রধান লক্ষ্য ও বৈশিষ্ট্য। মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদী শুধু একজন ব্যক্তি নয়, একটি রত্ন, বেফাকের জন্য একটি ইতিহাস। কওমী মাদ্রাসাগুলোর ঐক্যের সফল রূপকার এবং নির্ভীক কান্ডারী।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী আরো বলেন, তিনি ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার সহবতকাঠি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ইসলামী রাজনীতিবিদ, তাওবার রাজনীতির প্রবর্তক, আমীরে শরীয়ত মাওলানা মোহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর শাগরেদ ছিলেন। দেশের আলেম-ওলামাদের মাঝে ঐক্য, যোগাযোগ ও সমন্বয় সাধন ছিল তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। সকল মহলের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল তাঁর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে বেফাকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তিনি বেফাকের গুরু দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। বেফাকের সম্প্রসারণ, উন্নতি-অগ্রগতি এবং মানোন্নয়নের জন্য নজিরবিহীন খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। তাঁর দূরদর্শী পদক্ষেপের কারণে আজ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড তথা বেফাক হাটি হাটি পা পা করে, দেশের সর্ববৃহৎ দ্বীনি শিক্ষাবোর্ড হিসেবে সকলের আস্থার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, তার অক্লান্ত মেহনতের বদৌলতে দেশের প্রায় সব কওমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক প্লাটফরমে এসেছে। কওমী মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষার মান বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে কন্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে কওমী প্রজন্মের জন্য উন্মোচন করেছেন বিশাল কর্মদিগন্ত। তিনি বাগেরহাট জেলার নিজ গ্রামে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যাত্রাবাড়ী জামিয়া মাদানিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। সেখানে শিক্ষকতাও করেন। উল্লেখ্য তিনি গত ১৮ই নভেম্বর ২০১৬ ঈসায়ী শুক্রবার সকাল ১০ টা ১০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহ একজন দরদী রাহবারকে হারিয়েছে।
মহান আল্লাহ তা‘আলা দরবারে ফরিয়াদ করি, আল্লাহ যেন তার জীবনের সকল খেদমত কবুল করত: তাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন এবং তার মেহনতের ফসল (বেফাক) কে আরো শক্তিশালী করে দেন। আমীন।
আরআর