আওয়ার ইসলাম: আওয়ামী লীগের ২০তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের মূল কাজ শুরু হবে ঈদুল আজহার পর। আগস্টব্যাপি জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির কারণে মাসটিতে কোনো কাজ হয়নি। এর আগে ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল।
ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলন অনুযায়ী ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর তিন মাস বাড়িয়ে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি দলের কার্যনির্বাহী বৈঠকে ২৮ মার্চ কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কারণে তারিখ পরিবর্তন করে ১০ ও ১১ জুলাই নির্ধারণ করা হয়। পরে ১১ এপ্রিল দলের সাধারণ সম্পাদক সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ও ১১টি উপ-পরিষদ ঘোষণা করেন।
চলতি বছরের ১১ জুন ঈদ, পূজা, আগস্ট ও আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে তৃতীয় দফায় সম্মেলনের তারিখ পিছিয়ে ২২ ও ২৩ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়। এরই মধ্যে সম্মেলন প্রস্তুতির ১১টি উপ-কমিটি একাধিক বৈঠক করে নিজেদের প্রাথমিক কার্যক্রম নির্ধারণ করেছে।
সম্মেলনের প্রস্তুতি প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই দুটি সেমিনার করা হয়েছে। সম্মেলন ঘিরে দুটি পোস্টার করা হবে। পোস্টার ও ব্যানারের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে, শুধু চাপার অপেক্ষায়।
গঠনতন্ত্র উপ-কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, ‘শোকের মাস আগস্ট গেল। এখন আমরা সম্মেলন প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করবো। আগামী রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) উপ-কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। আগের দুটি বৈঠকের পর গঠনতন্ত্রের উপর প্রস্তাবনা চেয়ে সবাইকে চিঠি দেয়া হয়েছে।’
অভ্যর্থনা উপ-কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বিদেশি অতিথিদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে ঈদের পর থেকে যোগাযোগ করা হবে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান, যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ এবং লেবার পার্টি এবং বিশ্বের কিছু প্রচীন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্য গঠনের লক্ষ্য সার্কভুক্ত দেশসমূহের রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে আওয়ামী লীগ। চলতি মাসেই ই-মেইল ও ফোনে দাওয়াত দেয়ার কাজ শুরু হবে।
ইতোমধ্যে দলের আয়-ব্যায়ের বিবরণী ও বার্ষিক সাংগঠনিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে অর্থ উপ-পরিষদ। সম্মেলনকে ঘিরে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা দূর করা ও সব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপ-পরিষদ। আগামী সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত এক সভা অনুষ্ঠিত হবে।
২০৪১ সালে উন্নত-আধুনিক বাংলাদেশ ও ২০২১ সালের মধ্যে ‘মধ্যম আয়ের দেশ’ নির্বাচনী ইশতেহারে দেয়া ভিশন অনুযায়ী সম্মেলনের ঘোষণাপত্র তৈরি করছে ঘোষণাপত্র উপ-পরিষদ।
আওয়ামী লীগের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুন দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-পরিষদ।
সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি, কাউন্সিলার, ডেলিগেটসহ সবাইকে মোরগ-পোলাও দিয়ে আপ্যায়ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত খাদ্য উপ-পরিষদ।
সম্মেলনস্থল, ঢাকার প্রবেশমুখ, কমলাপুর রেল স্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, সায়েদাবাদ-গাবতলী-মহাখালীসহ বাস টার্মিনালগুলোতে মেডিকেল টিম রাখার পরিকল্পনা স্বাস্থ্য উপ-পরিষদের।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, জেলা সম্মেলন ও জেলাগুলো পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হয়ে যাবে। জাতীয় সম্মেলনের পূর্বে সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে জেলা কমিটিগুলোর অনুমোদন দেয়া হবে।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, কাউন্সিলের প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় সমাপ্ত। বাকি কাজ ঈদের পর শুরু হবে।
আরআর