জানাজার স্থান থেকে আবদুল্লাহ মারুফ
শাইখুল হাদিস আল্লামা আব্দুল হাই পাহাড়পুরী রহ. এর জানাজা নামাজ কামরাঙ্গিরচরে জামিয়া নুরিয়ার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশার নামাজের পর আলেমদের বক্তৃতা শেষে রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজের ইমামতি করেন ছেলে মাওলানা আবরারুজ্জামান।
সন্ধ্যার পর থেকেই কামরাঙ্গির চরে আসতে থাকে তার ভক্তবৃন্দ। জানাজার আগে পুরো মাঠ লোক ভরপুর হয়ে উঠে। ঢাকাসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জানাজায় শরিক হতে ছুটে আসেন ধর্মপ্রাণ লোকজন।
জানাজার আগে আল্লামা আবদুল হাই পাহাড়পুরীকে নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক কথা বলেন ঢাকার শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ। বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আবদুল মালেক, মুফতি দেলোয়ার হুসাইন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, ড. মাওলা মুশতাক আহমদ, অধ্যক্ষ ইউনুস আহমদ, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ, জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা হাসানাত আমিনী, মাওলানা আবু সাঈদ, মুফতি ইমাদুদ্দীন প্রমুখ।
কিছুক্ষণের মধ্যে মরহুমকে হাফেজ্জি হুজুরের কবরের পাশে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
মাওলানা আবদুল মালেক বলেন, তিনি যে জিনিসগুলো হাসিল করেছেন তা হাছিল করা আমাদের জন্য একান্ত কর্তব্য। এটা হাছিল করলেই তার প্রতি আমাদের মহব্বতের বহিপ্রকাশ ঘটবে।
হাসপাতালে মুমূর্ষূ অবস্থার কথা শোনান তার ছেলে মাওলানা আবরারুজ্জামান। তিনি বলেন, গত তিনদিন আগে একটি মাদ্রাসা থেকে মুদারিরস হিসেবে আমাকে নিতে আসে এটি আমি আব্বাকে জানাই, শুনে আব্বা বলেন, আবরারের কোনো ছুটি নেই, আমাকে দাফন করার আগে। আজ সকালে যখন হাসপাতাল থেকে সংবাদ আসছিল আব্বার অবস্থা খুবই গুরুতর তখন আমার মনে বারবার উদিত হচ্চিল যে আজ সোমবার তিনদির পরিপূর্ণ হয়েছে।
মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন বলেন, উলামায়ে কেরাম ইন্তেকাল করলে তার স্থান কিয়ামত পর্যন্ত দখল করার কেউ নেই।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, দরসে তিনি আকাবিরদের ঘটনা এলে তিনি আবেগে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়তেন। কান্নায় ভেঙে পড়তেন। এটি ছিল তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, উস্তাদের প্রতি একজন ছাত্রের কি যে আজমত হতে পারে সেটা পাহাড়পুরী হুজুর ভালোভাবে দেখিয়ে ছিলেন। তিনি আমাদের আমাদের অনেক মহব্বত করতেন।
অধ্যক্ষ মাওলানা উইনুস আহমদ বলেন, আজ সকালে সূর্য উঠেছিল বিকালে আবার ডুবে গেছে। আগামী কালও আবার উঠবে কিন্তু ইলমি জগতে যে সূর্য আজ ডুবে গেল তা আর কোনো দিন উদিত হবে না।
মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, তিনি কত ইনহিমাকের সাথে মুতালায়ায় ডুবে থাকতেন নতুন প্রজন্মকে ওই পরিমাণ চেষ্ঠা আদায় করতে হবে। তিনি যেভাবে ইলমের সাগরে ডুবে থাকতেন তার প্রচেষ্টা আমাদের করতে হবে।
মাওলানা হাসানাত আমিনী বলেন, আমার ছোট খালুজান রহ. ঈমানের পরীক্ষায় পাশ করে গেছেন। তার প্রমাণ শত শত মুসল্লিদের উপস্থিতি। শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিকুল হক রহ. এর জানাজায় আমার আব্বাজান আমিনী রহ. একটি কথা বলেছিলেন তা হলো, আপনারা হুজুরের জন্য এক খতম কুরআন পড়বেন। আমিও সে কথাটিই বলি। আপনারা এক খতম কুরআন তিলাওয়াত করে মরহুমের রুহে বখশে দিবেন।
জানাজার ছবিগুলো তুলেছেন, ইখলাস আল ফাহিম
আরআর