বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের রোডম্যাপ নির্দিষ্ট করতে হবে। সব পরিবর্তন তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তারপরও আমরা বলতে চাই, তাদের যে মূল দায়িত্ব, সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আরেকটি বিষয়, স্বৈরাচারের ফেলে যাওয়া লোকজন এখনো প্রশাসনে বিদ্যমান আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ছোট ছোট বিষয়গুলো বড় আকার ধারণ করতে পারে।
ঢাকায় ঝিনাইদহের সাব্বির ও প্রকৌশলী রাকিব হত্যার প্রতিবাদে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্ত্বরে আজ জেলা বিএনপির আয়োজিত সমাবেশে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ কথা বলেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা। সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট এম এ মজিদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খাঁন শিমুল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান পপ্পু প্রমুখ। এছাড়া ৬টি উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এর আগে দুপুর ২টা নাগাদ মিছিলে মিছিলে ঝিনাইদহ পুরো শহর জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বৈরি আবহাওয়ার কারণে সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করা হয়। মঞ্চে কেন্দ্রীয় জাসাসের শিল্পী মৌসুমি ও ডনসহ শিল্পীরা বিভিন্ন সংগীত পরিবেশন করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই। প্রিয় ভাই বোনেরা, আগস্টের যে মহাবিপ্লব, জনগণের যে সফলতা, তা আমাদের সামনে আরেকটি স্বাধীনতা এবং বিজয়ের বার্তা নিয়ে এসেছে। স্বৈরাচার পতনের এই মহাযুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষ রাজনৈতিক দল, ছাত্র-জনতা, গৃহিণী, শ্রমিকসহ সবার অবদান রয়েছে। তাদের এই অবদানকে আমরা মূল্য দিতে ব্যর্থ হলে ইতিহাস আমাদের কাউকে ক্ষমা করবে না। তাদের ব্যাপারগুলো অবশ্যই আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। প্রিয় ভাই বোনেরা, আসুন আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে শপথ গ্রহণ করি।
তিনি আরো বলেন, গত ১৭ বছর এবং বিশেষ করে জুলাই ও আগস্ট মাসে যে মানুষগুলো আত্মাহুতি দিয়েছেন, যে মানুষগুলো নিজেদের সব উজাড় করে এদেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছেন, আমাদের সকলের ভবিষ্যতের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন; তাদের আত্মত্যাগ সেদিনই সফলতা লাভ করবে, যেদিন দেশের মানুষ রাজনৈতিকভাবে অধিকার ফিরে পাবে। এবং রাজনৈতিক অধিকারের পাশাপাশি একইভাবে যেদিন বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জিত হবে। একমাত্র সেদিনই স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদ এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন এবং যারা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ত্যাগ সফলতা লাভ করবে। আমাদের সেই প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে একটি স্বাভাবিক পথে।
তারেক রহমান আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যা প্রত্যাশা করে, দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষ জীবনের যে নিরাপত্তা প্রত্যাশা করে, প্রতিটি শিশু, প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রী, নিরাপত্তা ও শিক্ষার যে গ্যারান্টি চায়, আমাদের প্রতিটি কৃষক তাদের কাজের যে স্বীকৃতি চায়; সব কিছু পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এখন জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশকে গড়ে তুলতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী, দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি সুন্দর, নিরাপদ ও বৈষম্যহীন দেশ গড়ে তোলার আহবান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
হাআমা/