ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, এজিওগুলো এদেশে সেবার নামে বড় ধরনের ব্যবসা করছে। জনগণকে সেবার নামে শোষণ করছে। পাশাপাশি মুসলমানের ঈমান হরণ করছে। এজন্য দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি তাদের দৃষ্টি ছিল। ব্র্যাক, গ্রামীণ, আশাসহ হাজার হাজার এনজিও আছে। যাদের উদ্দেশ্য সেবা নয়, শোষণ করা। এরা অর্থের বিনিময়ে মুসলমানদের ঈমান ধ্বংস করছে। তারা গবেষণায় দেখেছে যে, কোন জাতিকে ধ্বংস করতে হলে তাদের শিক্ষা ও সংষ্কৃতি ধ্বংস করতে হয়। সে আলোকে তারা বাংলাদেশের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমে মুসলমানের ঈমান ধ্বংস করছে। বর্তমানে যে শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে, এ কারিকুলাম পড়লে কোন মুসলমানের ঈমান থাকবে না। তারা নামে মুসলমান থাকলেও কাজে নাস্তিক ও অন্যান্য মতাদর্শি হবে। মুসলমান সম্পর্কে তাদের বিরোপ ধারণা তৈরি হবে। কাজেই শিক্ষাকারিকুলাম নিয়ে বেশি কাজ করতে হবে। নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা কারিকুলাম সংশোধনে সরকারকে বাধ্য করতে হবে।
আজ সোমবার (৩ জুন) সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সচেতন নাগরিক সমাজ কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই এসব কথা বলেন।
মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী'র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আফম খালিদ হোসাইন, তাকওয়া মসজিদের খতিব মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা লুৎফর রহমান ফরায়জী, কবি মুসা আল হাফিজ, মাওলানা শামসুদ্দোহা আশরাফী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাশার।
মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, আমাদের চারপাশে শত্রু আর শত্রু। এহন মুহূর্তে আমাদের সকলকে ইসলাম বিজয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পারস্পারিক সমালোচনা, শত্রুতা, গিবত পরিহার করতে হবে। ইসলামের মৌলিক বিষয়ে যারা একমত তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা না করে তাদের ভুল-ত্রুটি থাকলে সংশোধনের মানসিকতায় সরাসরি তাকে বলতে হবে। এছাড়া পরস্পর সমালোচনা পরিত্যাগ করতে হবে। আমরা ইচ্ছা করলেই একা একা, বা ছোট ছোট শক্তি দিয়ে সবকিছু করতে পারবো না। এজন্য ইসলাম বিজয়ের লক্ষ্যে সকলের চিন্তা এক হতে হবে। বৃহৎশক্তি ছাড়া ইসলামের বিজয় সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, এনজিওদের ইসলামবিরোধী কর্মকান্ডের বিষয়ে আমাদেরকে এক সাথে কাজ করতে হবে। মসজিদের মিম্বরগুলো থেকে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর বলেন, ইসলামের চিরচেনা দুশমনদের মোকাবেলায় এক হতে হবে। জাতীয় ইস্যূগুলোতে বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সিলেবাস সংশোধন আন্দোলনে সকলকে এক হতে হবে। খ্রিস্টান, ইহুদিদের চক্রান্ত মোকাবেলায় পারস্পারিক ঐক্যবদ্ধ সময়ের অনিবার্য দাবি। নিজেদের ঈমান, আমল মজবুত করতে হবে। মু’আমালাত, মুআশারাত পরিশুদ্ধ করতে হবে।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, কঠিন বিপদ, আপদে ধৈর্যহারা হওয়া যাবে না। নবী মুহাম্মদ (সা.) এর উপরও কঠিন দুশমনী হয়েছে। নামাজরত অবস্থায় উটের নাড়ী-ভুড়ি গর্দানের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। সেই দুশমনীর কোটি ভাগের এক ভাগও আমরা সম্মুখীন হইনি। তিনি বলেন, আমরা যেমন ইসলামের বিজয় চাই, খ্রিষ্ট্রান, বৌদ্ধ, হিন্দুরাও তাদের ধর্মের বিজয় চায়। কাজেই বললেই বিজয় হয়ে যাবে এমন নয়, ধৈর্যের সাথে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, কাজ করতে হবে। কাজের বিকল্প নেই।
হাআমা/