শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫ ।। ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ১৮ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
কোটচাঁদপুর পৌর কবরস্থান পরিষ্কার করেছে জামায়াতে ইসলামী ’রাখাইন করিডোর এবং চট্টগ্রাম বন্দর চুক্তি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে’ সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে মনোযোগী নয়: মঞ্জু পারমাণবিক অস্ত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভারতকে পাকিস্তানের বার্তা ৭১ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে অবতরণ করল চাকা খুলে পড়া ফ্লাইটটি ভারতের কাছ থেকে অধিকার আদায়ে শক্তি ও শান্তির কোনো বিকল্প নাই : দুদু কক্সবাজার থেকে উড্ডয়নের সময় খুলে পড়ে গেল বিমানের চাকা গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত শতাধিক শাহবাগ থানা ঘেরাও করলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত

হজের গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা: যা জানতে হবে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হজ ইসলামের মৌলিক পাঁচ স্তম্ভের একটি। আর্থিক ও দৈহিকভাবে সামর্থবান সুস্থ মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর হজ ফরজ। হজের কিছু পরিভাষা আছে। সেসবের অর্থ জানা থাকলে হজ পালন করতে সুবিধা হয়। 

ইহরাম : ইহরাম অর্থ কোনো বস্তু হারাম করা। কোনো ব্যক্তি হজ, ওমরা বা উভয়টার নিয়তে যখন তালবিয়া পাঠ করে, তার ওপর কিছু হালাল বিষয়ও হারাম হয়ে যায়। তাই একে ইহরাম বলা হয়। রূপক অর্থে ওই চাদরকেও ইহরাম বলা হয়, যা ইহরাম অবস্থায় হাজিরা পরিধান করে।

মুহরিম : যিনি হজের উদ্দেশ্যে ইহরাম বাঁধেন, তিনিই মুহরিম। নিয়ত ও ইহরাম দ্বারা হজের কাজ শুরু হয়ে যায়।

আফাকি : মিকাতের সীমানার বাইরের বাসিন্দা। যেমন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, মিসর, সিরিয়া, ইরাক, ইরানের অধিবাসীরা।

মিকাত : পবিত্র মক্কায় প্রবেশের জন্য চতুর্দিকে সীমারেখা দেওয়া আছে। এগুলোকে মিকাত বলা হয়। হজ ও ওমরাকারীদের এই স্থান অতিক্রম করার আগেই ইহরাম বাঁধতে হয়।

তানয়িম : মক্কা থেকে তিন মাইল দূরে এবং হেরেমের সীমানার মধ্যে সবচেয়ে কাছে হলো তানয়িম। এখানে মসজিদে আয়েশা নামে একটি মসজিদ আছে। মক্কায় অবস্থানকালে তানয়িম থেকে ওমরার ইহরাম বাঁধা হয়। এটি

হিল : হেরেমের সীমানার বাইরে মিকাতের আগ পর্যন্ত স্থান।

মসজিদে হারাম : পবিত্র কাবা ঘরের চারপাশের বিশাল মসজিদকে হারাম বা হেরেম শরিফ বলা হয়।

বাবুস সালাম : মক্কায় মসজিদে হারামের একটি দরজার নাম। মসজিদে হারামে প্রথম প্রবেশের সময় এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করা উত্তম। মদিনা মুনাওয়ারায় মসজিদে নববিতে একই নামের আরেকটি দরজা আছে।

বাবে জিবরিল : এ দরজা দিয়ে জিবরাইল (আ.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে আসতেন। এই দরজা দিয়েই জান্নাতুল বাকিতে যাওয়া যায়। এটি মদিনার মসজিদে নববিতে অবস্থিত।

হাতিম : বায়তুল্লাহ শরিফ সংলগ্ন উত্তর দিকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা অংশ। এটি মূলত কাবাঘরেরই অংশ ছিল। এর ভেতরে নামাজ পড়লে মূল কাবাঘরেই নামাজ পড়েছে বলে মনে করা হয়।

তাওয়াফ : তাওয়াফ অর্থ প্রদক্ষিণ করা। কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করাকেই তাওয়াফ বলে।

ইসতিলাম : হাজরে আসওয়াদ চুমু দেওয়া এবং হাতে স্পর্শ করা অথবা হাজরে আসওয়াদ বা রোকনে ইয়ামানিকে শুধু হাতে স্পর্শ করাকে ইসতিলাম বলা হয়।

ইজতিবা : ইহরামের চাদর ডান বগলের নিচে বের করে বাম কাঁধে রাখা।

তাওয়াফে কুদুম : মক্কা শরিফ পৌঁছেই যে তাওয়াফ করা হয়, তাকে তাওয়াফে কুদুম বলে।

তাওয়াফে জিয়ারত : ১০ জিলহজ মিনায় কোরবানি দিয়ে বা ১১ অথবা ১২ তারিখে মিনা থেকে মক্কা শরিফে এসে যে তাওয়াফ করা হয়, তাকে তাওয়াফে জিয়ারত বলে।

তাওয়াফে বিদা : হজের সব কাজ শেষ করে দেশে ফেরা বা মক্কা শরিফ ত্যাগের আগে যে তাওয়াফ করতে হয়, তাকে তাওয়াফে বিদা বা বিদায়ি তাওয়াফ বলে।

সাঈ : সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাতবার দ্রুতপদে অতিক্রম করাকে সাঈ বলে।

রমল : তাওয়াফের প্রথম তিন চক্কর পুরুষের জন্য একটু দ্রুত বীরদর্পে হাঁটা।

হলক : মাথার চুল কামানো।

মাকামে ইবরাহিম : কাবা ঘরের পূর্ব দিকে ইবরাহিম (আ.)-এর পদচিহ্নসংবলিত একটি পাথর কাচের বেড়ির মধ্যে রাখা আছে। একে মাকামে ইবরাহিম বলা হয়। এই পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে ইবরাহিম (আ.) কাবা ঘর নির্মাণ করেছিলেন।

মুলতাজাম : পবিত্র কাবা ঘরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একখণ্ড বেহেশতি পাথর লাগানো আছে। এখান থেকে কাবা ঘরের দরজা পর্যন্ত দেয়ালের অংশটিকে মুলতাজাম বলে।

রোকনে ইয়েমেনি : ইয়েমেনমুখি কাবা শরিফের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণটি হলো রোকনে ইয়েমেনি। বায়তুল্লাহ শরিফ থেকে ইরাক ও সিরিয়ার দিকের কোণকে যথাক্রমে রোকনে ইরাকি ও রোকনে শামি বলা হয়।

আইয়ামে তাশরিক : ৯ জিলহজ থেকে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত যেসব দিনে তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা হয়।

আইয়ামে নহর : ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত যেসব দিনে কোরবানি করা জায়েজ।

ইফরাদ : শুধু হজের ইহরাম বেঁধে হজের আহকাম আদায় করা।

তামাত্তু : এক ইহরামে ওমরা শেষ করে আলাদা ইহরাম করে হজ করা তামাত্তু বলে।

কিরান : একইসঙ্গে হজ ও ওমরার নিয়তে ইহরাম বেঁধে প্রথমে ওমরা ও পরে হজ করা। মাঝে ইহরাম না খোলা।

তালবিয়া : লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাকা- পাঠ করা।

জান্নাতুল মুআল্লা : কাবা ঘরের অদূরে যে কবরস্থানে উম্মুল মুমিনিন খাদিজা (রা.) এবং রাসুল (সা.)-এর ছেলে ও অন্যান্য সাহাবিরা শায়িত আছেন।

মিনা : মক্কা থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পাঁচ মাইল দূরের একটি প্রান্তর মিনা। এখানে হাজীদের ৮ জিলহজ পৌঁছতে হয়। এখান থেকে ৯ জিলহজ আরাফার উদ্দেশে রওনা হতে হয়। ৯ জিলহজ দিবাগত রাত ছাড়া ১৩ তারিখ পর্যন্ত হাজীদের এখানেই থাকতে হয়। শয়তানকে পাথর মারার জায়গাও এটি।

জামারাহ : হাজীরা মিনার যে তিনটি স্থানে কংকর নিক্ষেপ করেন তার প্রত্যেকটিকে জামরাহ বলে।

রমি : রমি অর্থ নিক্ষেপ করা। মিনায় শয়তানকে পাথর মারাকে রমি বলে।

আরাফা : মক্কা থেকে পূর্ব দিকে প্রায় ১৪-১৫ মাইল দূরে পর্বতবেষ্টিত এক বালুকাময় প্রান্তরের নাম আরাফা। এখানেই ৯ জিলহজ জোহর নামাজের পর অবস্থান করার মাধ্যমেই হজের প্রধান কাজ সম্পন্ন করা হয়।

উকুফ : উকুফ অর্থ অবস্থান করা। নির্দিষ্ট সময়ে আরাফা ও মুজদালিফায় অবস্থান করাকে উকুফ বল হয়।

মুজদালিফা : মিনা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে, মিনা ও আরাফার মাঝখানের একটি জায়গার নাম মুজদালিফা। আরাফা থেকে ফিরে এখানে রাত যাপন করতে হয়।

জাবালে রহমত : এটি আরাফার মাঠের একটি পাহাড়। হজের সময় এর কাছে অবস্থান করতে হয়। এর পাদদেশ থেকেই রাসুলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন।

দম : ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কোনো কাজ করা বা হজ ও ওমরার কোনো ভুলের জন্য ক্ষতিপূরণস্বরূপ ছাগল, দুম্বা, গরু বা উট জবাই করা।

হাদি : হারামের সীমানার ভেতরে কোরবানি করার জন্য যে পশুকে আনা হয়।

মসজিদে কুবা : মদিনায় অবস্থিত ইসলামের প্রথম মসজিদ।

মসজিদে কিবলাতাইন : মদিনায় অবস্থিত দুই কিবলার মসজিদ।

মসজিদে নামিরা : মক্কার আরাফার ময়দানের বিশাল মসজিদটির নাম মসজিদে নামিরা।

জান্নাতুল বাকি : মদিনার মসজিদে নববির পূর্ব পাশের কবরস্থান।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ