নামাজের সেজদায় বান্দা মহান আল্লাহর খুব কাছাকাছি হয়ে যান। এ সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। কিন্তু নামাজে দুই সেজদার মাঝেও নবীজি দোয়া করতেন।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের দুই সেজদার মাঝে বসতেন, ধীরস্থিরভাবে বসে আল্লাহর কাছে কিছু দোয়া করতেন। তাঁর এ দোয়ার মধ্যে মানুষের দুনিয়া ও পরকালের জীবনের প্রয়োজনীয় মঙ্গল ও সুখের সব ধরনের উপাদান, চাওয়া-পাওয়া বিদ্যমান ছিল। আবার সব ধরনের অমঙ্গল থেকে সংরক্ষিত হওয়ার উপযুক্ত উপকরণও ছিল। হাদিসে এসেছে-
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই সেজদার মাঝে এ দোয়া পড়তেন-
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَعَافِنِي وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়া আফিনি, ওয়াহদিনি, ওয়ারযুকনি।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন; আমার প্রতি দয়া করুন। আমার সব ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন। আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন। আমার রিজিক দান করুন।’ (আবু দাউদ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে-
وَاجْبُرْنِيْ وَارْفَعْنِيْ
‘ওয়াঝবুরনি, ওয়ারফানি।’
অর্থাৎ আমাকে পূর্ণতা দান করুন/সাহায্য করুন এবং আমাকে সুউচ্চ (মর্যাদা) দান করুন।’
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষমা প্রার্থনার ছোট্ট আরো একটি দোয়াও পড়তেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত হুজায়ফা ইবনুল ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, তিনি একরাতে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন। ... নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই সেজদার মাঝখানে বসা অবস্থায় বলছিলেন-
رَبِّ اغْفِرْ لِي، رَبِّ اغْفِرْ لِي
উচ্চারণ : রব্বিগফিরলি, রব্বিগফিরলি।
অর্থ : ‘রব আমার! আমাকে ক্ষমা করে দিন। রব আমার! আমাকে ক্ষমা করে দিন।’
তিনি সজদায় যতক্ষণ ছিলেন, ঠিক বসাবস্থায় ততক্ষণ ছিলেন।’ (ইবনু মাজাহ, আবু দাউদ)
উল্লেখ্য, দুই সেজদার মাঝে পরিপূর্ণ স্থির হয়ে অন্তত কয়েক মুহূর্ত বসা ওয়াজিব। পরিপর্ণূ সোজা হয়ে বসার আগেই দ্বিতীয় সেজদায় চলে গেলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। দুই সেজদার মাঝে ধীরস্থিরভাবে বসে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে বিভিন্ন দোয়া করতেন বলে হাদিসে প্রমাণিত।
এগুলো ছিল দুই সেজদার মাঝে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দোয়া। তিনি দুই সেজদার মাঝে দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে এ দোয়াগুলো পড়তেন।
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে নবীজির শেখানো দোয়াগুলো দুই সেজদার মাঝে বেশি বেশি পড়ার তাওফিক দান করুন।
এনএ/