মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ১ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ঢাকার যানজট নিরসনের উপায় খুঁজতে বিশেষজ্ঞ ও ডিএমপিকে নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাঙ্খিত সংস্কারে আলেম সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে: জমিয়ত নেতৃবৃন্দ ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে সিলেট আলেম প্রতিনিধির সাক্ষাৎ, আলোচনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন হুব্বে রাসূল ﷺ ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা, সিরাত কনফারেন্স ও প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ‘আদর্শ নাগরিক গঠনে ভূমিকা রাখছে উলামায়ে কেরাম’ মহানবী (সা.) এর পুরো জীবনটাই আমাদের জন্য আদর্শ: ধর্ম উপদেষ্টা খেলাফত ব্যবস্থায় রাষ্ট্র ও সমাজ শীর্ষক সীরাতুন্নবী সা. সেমিনার অনুষ্ঠিত আসাদুজ্জামান নূর ও মাহবুব আলী কারাগারে তেজগাঁও কলেজের ইতিহাসে প্রথম সর্ববৃহৎ ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত রাসুল (স.) এর আদর্শ পৃথিবীকে শত শত বছর নেতৃত্ব দিয়েছে: চবি অধ্যাপক

মজলুমের জন্য দোয়া করবেন যেভাবে


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি : সংগৃহীত

মহানবী স. সকল মুমিন নারী-পুরুষের জন্য ক্ষমা, বরকত ও কল্যাণের দোয়া করতেন। কারণ এ বিষয়ে মহান আল্লাহ আয়াত নাজিল করে বলেছেন, (হে রাসুল! আপনি) ক্ষমা প্রার্থনা করুন, আপনার নিজের জন্য এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্য।' (সুরা মুহাম্মদ: ১৯)

মুসলিম ভাইয়ের জন্য দোয়া করার অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। হজরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ স. বলেছেন—

‘যখন কোনো মুসলিম তার ভাইয়ের জন্য তার পশ্চাতে দোয়া করে, তখন তার (মাথার কাছে নিযুক্ত) একজন ফেরেশতা তাঁকে লক্ষ্য করে বলে, তোমার জন্যও এমনই হোক’। (সহিহ মুসলিম: ২৭৩২)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘কোনো মুসলিম তার ভাইয়ের অবর্তমানে তার জন্য নেক দোয়া করলে তা কবুল হয়। তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকে, যখনই সে তার ভাইয়ের জন্য দোয়া করে, তখনই ওই ফেরেশতা বলেন, ‘আমিন! তোমার জন্যও এমনই হোক”। (সহিহ মুসলিম: ২৭৩২)

খুব সহজ ও চমৎকার একটি আমল। ধরুন, আপনি অসুস্থ, ওই অবস্থায় আপনার অসুস্থ ভাইদের জন্য দোয়া করুন। এতে মিলবে কী? হাদিসের ভাষ্যমতে, আপনার জন্যও অনুরূপ দোয়া করবেন ফেরেশতারা। ধরুন, আপনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, তো আপনার যেসব ভাই আপনার মতো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, তাদের জন্য আন্তরিকভাবে দোয়া করতে থাকুন, এর বিনিময়ে ফেরেশতারা আপনার নিরাপত্তার জন্য দোয়া করবেন। এছাড়াও অন্যের জন্য প্রাণ খুলে দোয়া করতে পারা একজন মুমিনের হৃদয়ের স্বচ্ছতার একটি দলিল। কারো হৃদয়ে কুটিলতা থাকলে, সে অন্যের জন্য দোয়া করতে পারে না। 

মুসলিম ভাইয়ের জন্য দোয়া করার আরেকটি বড় লাভ হচ্ছে এতে সীমাহীন সওয়াব আমলনামায় লেখা হয়। এ বিষয়ে রাসুল স. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, প্রত্যেক মুসলমানের বিপরীতে একটি করে সওয়াব মহান আল্লাহ তার আমলনামায় লিখে দেন।’ (তাবরানি: ৩/২৩৪)  
শায়খ আলবানি (রহ.) হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন। এই হাদিসের মূলকথা হলো, যে ব্যক্তি মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, ওই ব্যক্তি প্রত্যেক মুসলিমের বিপরীতে একটি করে সওয়াব পাবে। কেউ যদি এটা বলে দোয়া করে যে, ‘হে আল্লাহ! আমার ও সব মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, জীবিত ও মৃত—সবার গুনাহ আপনি মাফ করে দিন’, তাহলে এর প্রতিদান হিসেবে আদম (আ.) থেকে কেয়ামত পর্যন্ত এই দুনিয়ায় বসবাসকারী কোটি কোটি মুসলিম সবার জন্য একটি করে সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে।

পবিত্র কুরআনে বর্ণিত দোয়া 
 رَبَّنَا اغۡفِرۡ لَنَا وَ لِاِخۡوَانِنَا الَّذِیۡنَ سَبَقُوۡنَا بِالۡاِیۡمَانِ وَ لَا تَجۡعَلۡ فِیۡ قُلُوۡبِنَا غِلًّا لِّلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا رَبَّنَاۤ اِنَّکَ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ উচ্চারণ: ‘রাব্বানাগফির লানা ওয়ালিয়িহওয়া-লিনাল্লাজীনা সাবাক্বুনা- বিল ই-মানি ওয়ালা তাজআল ফী ক্বুলু-বিনা গিল্লাল্লিল্লাজীনা আ-মানূ রাব্বানা ইন্নাকা গাফূরুর রাহীম।’ অর্থ: ‘হে আমাদের রব! আমাদের এবং ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভাইদের ক্ষমা করুন। আর মুমিনদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের রব! আপনি তো দয়ালু, পরম দয়ালু।’ (সুরা হাশর: ১০)

এই আয়াতের بعد অর্থে সাহাবায়ে কেরাম, মুহাজির ও আনসারগণের পরে কেয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সকল মুসলিম শামিল আছে এবং এ আয়াত তাদের সবাইকে হকদার সাব্যস্ত করেছে। (ইবনে কাসির, ফাতহুল কাদির) তবে ইমাম মালেক বলেন, যারা সাহাবায়ে কেরামের জন্য কোনো প্রকার বিদ্বেষ পোষণ করবে বা তাদেরকে গালি দেবে তারা অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। (বাগভি)

পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আরেকটি দোয়া 
পবিত্র কোরআনে ইবরাহিম (আ.)-এর জবানে সব মুসলমানের জন্য সুন্দর একটি দোয়ার উল্লেখ আছে। দোয়াটি হলো—
 رَبَّنَا اغۡفِرۡ لِیۡ وَ لِوَالِدَیَّ وَ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَوۡمَ یَقُوۡمُ الۡحِسَابُ উচ্চারণ: ‘রব্বানাগ-ফিরলি ওয়ালি ওয়ালি-দাইয়্যা ওয়ালিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’ অর্থ : হে আমাদের রব! আমাকে, আমার মাতা-পিতাকে এবং সব ঈমানদারকে আপনি সেই দিন ক্ষমা করে দিন, যেদিন হিসাব কায়েম করা হবে। (সুরা ইবরাহিম: ৪১)

কুরআনে বর্ণিত এই দোয়াটি আগের-পরের সব মুসলমানের জন্য দোয়া করার উৎকৃষ্ট নমুনা। এই দোয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি মুসলিমের প্রত্যেকের একটি করে সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উপরোক্ত নিয়মে সকল মুসলিমের জন্য দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ