বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫ ।। ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১০ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
নারী কমিশন বাতিল না করা সরকারের জন্য অমঙ্গলজনক: খেলাফত মজলিস মসজিদ-মাদরাসায় হামলা ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের প্রতিফলন: খেলাফত মজলিস ভারতীয় মুসলিম নেতারা হিন্দুত্ববাদী প্রকল্পের আস্থা অর্জন করতে পারবেন কি? ‘আল্লামা সুলতান যওক নদভীর স্মৃতি নতুন প্রজন্মকে আলোকিত করবে’ পাক-ভারত যুদ্ধ : ঈমানের লড়াই না ভূখণ্ডের দ্বন্দ্ব? ‘নারী কমিশন ইস্যুতে বিতর্ক জিইয়ে রাখা সরকারের উচিত হচ্ছে না’ ভারত-পাকিস্তান সংঘাত – শান্তির শেষ সুযোগ কি ইসলামাবাদের হাতে? পাকিস্তানে নয়, মোদি নিজের ওপরই হামলাটা করলেন নতুন আমিরে গতি ফিরেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শহীদ একজন সিলেটী 

মাওলানা মাসুদ আজহারকে ভারত এত ভয় পায় কেন?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা মাসউদ আজহার নতুন করে আলোচনায় এসেছেন। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন তাঁর পরিবারের ১০ সদস্য ও চার সহযোগী। একটি মসজিদ ও মাদরাসা লক্ষ্য করে চালানো হামলায় তারা প্রাণ হারান। প্রশ্ন উঠেছে কেন ভারত এই মসজিদ ও মাদরাসা লক্ষ্য করে হামলা চালালো। 

ভারতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার পর বারবারই উঠে আসে মাওলানা মাসুদ আজহারের নাম। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে বেড়ে ওঠা মাসুদ আজহারের ভয় গত ৩৫ বছর ধরে তাড়া করে বেড়াচ্ছে ভারতকে। নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। পরে তাকে মুক্ত করতে ভারতীয় বিমান ছিনতাই করেন অনুসারীরা। যা সেসময় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয়, এরপর থেকে কাশ্মীরসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় তাকে দায়ী করে আসছে ভারত। নয়াদিল্লির দাবি পাকিস্তান মাসুদ আজহারকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়। যদিও পাকিস্তান তা বরাবরই অস্বীকার করেছে।

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ১৯৬৮ সালে জন্ম তার। বাবা আল্লা বক্স সাবির ছিলেন সরকারি স্কুলের হেডমাস্টার। বাড়ির প্রত্যেকে যুক্ত ছিলেন ডেইরি ও পোলট্রি ব্যবসার সঙ্গে। ছোটবেলার স্কুল ছেড়ে জামিয়া উলুম-ই-ইসলামি স্কুলে ভর্তি হন মাসুদ। তখন থেকেই কাশ্মীরের স্বাধীনতার জন্য মন কাঁদত তার। ভারতের নিপীড়নের ব্যাপারে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। পড়াশোনায় মেধাবী মাসুদ আজহার কুরআনের হাফেজ। পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়েও।

নিজে স্কুলে পড়াতেন মাসুদ আর বাড়ির ব্যবসাও দেখতে। জিহাদ বিষয়ে লিখেছেন অসংখ্য বইও। পত্রিকার সম্পাদনা করার সূত্রেই অল্পবয়সীদের মধ্যে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।

১৯৯৪ সালে হরকত উল মুজাহিদিন নামে কাশ্মীরি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে ভারতে গ্রেফতার হন মাসুদ। পরে তাকে মুক্ত করতে পরিকল্পনা ছক কষেন অনুসারীরা। ১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান আইসি ৮১৪ কাঠমান্ডু থেকে দিল্লি আসছিল। বিমানটিকে ভারতের আকাশ থেকে ছিনতাই করে আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যান মাওলানা মাসুদের অনুসারীরা। ১৫৪ জন যাত্রীর প্রাণের বিনিময়ে মাসুদ আজহার, মুস্তাক আহমেদ ‌জ়ারগর ও আহমেদ উমর সঈদ শেখের মতো ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় তৎকালীন ভারতের অটলবিহারী সরকার, যাদের জঙ্গি কার্যক্রমের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

মুক্তি পাওয়ার পর ২০০০ সালে জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠী গড়ে তোলা শুরু করেন মাসুদ। ভারতের অভিযোগ, কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ সক্রিয় করা থেকে সংসদে হামলা, সবকিছুতেই প্রধান মাথা ছিলেন মাসুদ। ২০০২ সালে গৃহবন্দি দশা থেকে মাসুদকে পাকিস্তান মুক্তি দেওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তালিবান ও লস্কর-ই-তইবা জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে মাসুদের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই জানিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক সংস্থার গোয়েন্দারা।

২০০২ সালে মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লকে অপহরণ ও খুনের অভিযোগ ওঠে শেখ আহমেদ সইদ ওমর নামে মাসউদ আজহার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধেই। এর পরই আমেরিকা মাসুদ আজহারের নাগাল পেতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। 

আমেরিকা তার বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করতে চেয়ে এও জানায়, কান্দাহার বিমান অপহরণের সময় এক মার্কিন নাগরিকও সেই বিমানে ছিলেন। যদিও পাকিস্তান বলে আজহার হাইজ্যাকার নন। এর পরই ভারতের গোয়েন্দাদের কাছে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্ট’-এ চলে আসে মাসুদ আজহারের নাম। জাতিসংঘের ঘোষিত সন্ত্রাসী তালিকাতেও নাম উঠেছে তার।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ