বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫ ।। ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৩ জিলকদ ১৪৪৬


বৈবাহিক জীবনে ‘ধর্ষণ’ শব্দের প্রয়োগ অবমাননাকর : জামায়াত আমির

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিস্থিতি ঘটলেও সেটিকে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের সঙ্গে তুলনা করা অনুচিত ও অবমাননাকর। এটি দাম্পত্য জীবনের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে জামায়াত আমির এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর ঘনিষ্ঠতার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন বা অন্যায় হলে তা বিচারযোগ্য হতে পারে, তবে ‘রেইপ’ শব্দটি পবিত্র বৈবাহিক সম্পর্ককে অসম্মানিত করে।’

নারীবিষয়ক কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে বক্তব্যে ‘অনিচ্ছাকৃত’ একটি শব্দচয়নের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এক বক্তব্যে অসাবধানতাবশত একটি শব্দ ব্যবহারে ভুল হয়েছিল, যার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ইসলাম নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং জামায়াতে ইসলামী সেই নীতিতেই বিশ্বাসী।

বক্তব্যের ব্যাখ্যায় জামায়াত আমির বলেন, ‘রেইপ’ হচ্ছে বিবাহবহির্ভূত এক ধরনের জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক, যা সাধারণত বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে ঘটে, যেখানে অপরাধী ব্যক্তিটি অসৎ ও দোষী, কিন্তু ভিকটিম সম্পূর্ণ নিরপরাধ। আমি এটাও মনে করি যে, বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ‘রেইপ’র মতো জঘন্য শব্দকে প্রবেশ করানো পবিত্র এই সম্পর্কের জন্য অবমাননাকর এবং দীর্ঘ মেয়াদে দাম্পত্য সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর।

তিনি আরও বলেন, ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায় এবং জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান সর্বদা সেই মূলনীতির ওপরই প্রতিষ্ঠিত।

প্রসঙ্গত, নারী বিষয়ক জাতীয় কমিশন সম্প্রতি এক খসড়া প্রতিবেদনে বৈবাহিক ধর্ষণকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনার প্রস্তাব দেয়। এ প্রস্তাবনার পরই দেশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়।

অনেক ইসলামপন্থি দল ও আলেমরা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, এটি ইসলামি পারিবারিক কাঠামো ও সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থি। অন্যদিকে, নারী অধিকারকর্মীরা এই উদ্যোগকে নারীর নিরাপত্তা ও সম্মানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

এই প্রসঙ্গেই জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান তার অবস্থান স্পষ্ট করেন এবং বলেন, ইসলামে নারীর মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় কোনো আপস নেই, তবে পবিত্র সম্পর্কগুলোকে ভুল শব্দচয়ন ও বিতর্কিত আইনি সংজ্ঞার মাধ্যমে হেয় করা উচিত নয়।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ