কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া বেড়িবাঁধের বাইরে ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে বাধা ও হামলার অভিযোগ এনে শতাধিক দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন।
বুধবার রাতে মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে মহিপুর থানায় এ মামলা করেন। এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন মহিপুর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম।
এ মামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় শতাধিক নারী-পুরুষ মিছিল করেছেন। এ ঘটনায় সমুদ্র সৈকত এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সমুদ্র সৈকতের ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছিল। বুধবার সকালে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল ইসলাম ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর নেতৃত্বে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেয় এবং দখলদাররা প্রশাসনের উপর চড়াও হয়। উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহৃত ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ড্রাইভারকে মারধর করে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার রাতেই সরকারি কাজে বাধা, সম্পদ নষ্ট ও হামলার অভিযোগ এনে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত শতাধিক আসামি দিয়ে মহিপুর থানায় একটি মামলা করা হয়।
এ মামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অবৈধ দখলদাররা। তারা এ মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিছিল করে। এ সময় তারা দাবি করে, তারা এ দেশের নাগরিক হয়েও তাদের কোথাও থাকার জায়গা নেই। দীর্ঘদিন তারা সরকারি জমিতে বসবাস করে আসছে। এসব জমি পতিত রয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে বিনা নোটিশে উচ্ছেদ অভিযানে নামে উপজেলা প্রশাসন। তারা শুধুমাত্র এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। কারো উপর হামলা করেনি। তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার পাশাপাশি যাতে তাদের পুনর্বাসন করা হয়- এমন দাবি জেলা প্রশাসনের কাছে।
এ বিষয়ে মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন জানান, কুয়াকাটা সৈকত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে গেলে দখলদাররা একত্রিত হয়ে লেবারদের ওপর হামলা চালায়। সরকারি কাজে বাধা, সরকারি সম্পদ নষ্ট, হামলা-ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, কুয়াকাটা ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয়রা সরকারি কাজে বাধা দেয়। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ফেলে ড্রাইভারকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় মহিপুর তহশিলদার মহিপুর থানায় একটি মামলা করেছে।