|| মামুন আব্দুল্লাহ কাসেমী ||
জন্ম ও প্রাথমিক শিক্ষা
পূর্ণ নাম কমারুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরী। তিনি আল্লামা কমারুদ্দিন নামে প্রসিদ্ধ ছিলেন। মাওলানা কমারুদ্দিন আহমাদ গৌরখপুরী রহ. পিতা মরহুম হাজী বশীরুদ্দীনের ঔরসে পূর্ব উত্তর প্রদেশের গৌরখপুর জেলার অন্তর্গত বাঢ়ালগঞ্জ এলাকায় ১৯৩৮ ঈসাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন। মরহুম হাজী বশীরুদ্দীন সাহেব ধর্মীয় অনুপ্রেরণায় অনুপ্রানিত হয়ে প্রিয় পুত্র কামরুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরীকে স্থানীয় দেওবন্দী মাদরাসায় ভর্তি করান। সেখানে মাওলানা সফিউল্লাহ কাসেমী এর কাছে তার পড়াশোনার হাতেখড়ি হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা
এরপরে এক বছর এহয়াউল উলূম মোবারকপুর মাদরাসায় পড়াশোনা করে পূর্ব উত্তর প্রদেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ দারুল উলূম মৌ-তে ভর্তি হন। মুল্লা হাসান, মুতানাব্বী, মুখতাসারুল মা'আনী এবং হেদায়া আওয়ালাইন এখানেই পড়েন।
উচ্চ শিক্ষা
অতঃপর উচ্চ শিক্ষাসহ অবশিষ্ট পড়াশোনা সম্পন্ন করার জন্য ১৯৫৪ সালে এশিয়া উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠতম দ্বীনি বিদ্যাপীঠ ঐতিহ্যবাহী দারুল উলূম দেওবন্দে ভর্তি হন। তখনকার আসাতিযায়ে কেরামের কাছে পড়াশোনা করে ১৯৫৮ সালে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। তিনি শায়খুল ইসলাম হযরত হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ. এর কাছে বুখারী শরীফ পড়া আরম্ভ করেন এবং ঐ বছর (৫ ডিসেম্বর,১৯৫৭) হযরত মাদানী'র ইনতিকাল হলে হযরত মাওলানা ফখরুদ্দীন মুরাদাবাদী রহ. এর কাছে ১৯৫৮ সালে বুখারী শরীফ সম্পন্ন করেন। এজন্য নিজেকে যিন্নুরাইন বলে সম্মানিতবোধ করতেন। অর্থাৎ দুই নূরের অধিকারী,তথা দুই মহান শায়খের শিষ্যত্ব লাভ কারী।
এরপরে আরো ২ বছর পর্যন্ত তাকমীলে ফুনুন নামক উচ্চতর বিশেষায়িত ডিগ্রি অর্জন করেন।
উন্নত চরিত্রের অধিকারী, প্রচণ্ড মেধাশক্তি এবং স্বভাবজাত বিনয়-নম্রতার কারনে তিনি ছিলেন সকলের প্রিয়পাত্র।
হযরতের বুখারী শরীফের উস্তায ছিলেন শায়খুল ইসলাম হযরত মাওলানা হুসাইন আহমাদ মাদানী ও ফখরুল মুহাদ্দিসীন হযরত মাওলানা ফখরুদ্দীন মুরাদাবাদী, মুসলিম ও তিরমীযির উসতায ছিলেন হযরত আল্লামা ইবরাহীম বালিয়াভী রহ., নাসাঈ শরীফের উসতায ছিলেন হযরত মাওলানা বশীর আহমাদ খান বুলন্দশহরী, আবু দাউদের উসতায ছিলেন হযরত মাওলানা ফখরুদ্দীন মুরাদাবাদী, শামায়েলে তিরমীযি এর উসতায ছিলেন হযরত মাওলানা আবদুল আহাদ দেওবন্দী, তহাবী শরীফের উসতায ছিলেন হযরত মাওলানা সাইয়েদ হাসান দেওবন্দী, মুআত্তা মালেক ও ইবনে মাজাহ শরীফের উসতায ছিলেন হযরত মাওলানা জহুর আহমদ দেওবন্দী,মুআত্তা মুহাম্মাদের উসতায ছিলেন হযরত মাওলানা জলীল আহমাদ কিরানভী,মুসালসালাতের উসতায ছিলেন হযরত শায়েখ যাকারিয়া কান্ধলভী ও কারী তৈয়ব কাসেমী। এছাড়াও সকল কিতাবের এজাযত দিয়েছিলেন মুহাদ্দিসে কাবীর আবুল মাআছির হযরত মাওলানা হাবীবুর রহমান আ'যমী রহ.।
কর্ম জীবন:
১৯৬১ সালে আল্লামা ইবরাহীম বালিয়াভী রহ. এর নির্দেশ ক্রমে হযরত আল্লামা কমারুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরী রহ. দিল্লির ঐতিহ্যবাহী দীনি বিদ্যাপীঠ মাদরাসা আবদুর রব কাশমীরি গেটে শিক্ষকতা আরম্ভ করেন। প্রায় ৭ বছর শিক্ষকতায় দরসে নেযামী'র অধিকাংশ কিতাবাদি তিনি পাঠ দান করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি দিল্লির এক জামে মসজিদে তিনি কোরআনে কারীমের তাফসীরও করতেন।
দারুল উলূম দেওবন্দে নিযুক্তি
১৯৬৬ ঈসাব্দে আল্লামা ইবরাহীম বালিয়াভী রহ. এর প্রস্তাবে তিনি এশিয়া উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠতম দ্বীনি দরসগাহ ঐতিহ্যবাহী দারুল উলূম দেওবন্দের উসতায হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। অস্থায়ী নিয়োগের মাত্র ৬ মাসের মাথায় হযরত আল্লামা ইবরাহীম বালিয়াভী রহ. আল্লামা কামরুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরী রহ. এর চমৎকার পাঠদান, জনপ্রিয়তা এবং অভাবনীয় কর্মতৎপরতার কারনে তাকে স্থায়ী নিয়োগ দান করেন এবং তৎকালীন নাযিমে তা'লীমাত হযরত মাওলানা আখতার হুসাইন দেওবন্দীকে হযরত আলামা কামরুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরী রহ. এর দ্রুত প্রমোশনের জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
এজন্য মাত্র ১২ বছরের সংক্ষিপ্ত সময়ে সহকারী শিক্ষক থেকে তার সিনিয়র উসতায পর্যন্ত পদোন্নতি হয়ে যায়।
তিনি দীর্ঘ ৫৮ বছরের শিক্ষকতার জীবনে দারুল উলূম দেওবন্দে উলূমে আরাবিয়া, মানতিক-ফলাসাফা, হাদীস-তাফসীর,কালাম-ফিকহ, উসুল-আকায়িদ, ইত্যাদি বিষয়ক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কিতাবাদি পড়িয়েছেন। এরমাঝে তার নাসাঈ, মুসলিম,বায়যাবী, ইবনে কাছীর, বুখারী ছানী ইত্যাদি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
তিনি দীর্ঘদিন মুসলিম, নাসাঈ, বায়যাবি, ইবনে কাছীরের দরস দিয়েছেন। বিগত প্রায় ৭/৮ বছর যাবত তিনি বুখারী ছানীও পড়াচ্ছিলেন। দারুল উলূম দেওবন্দে তিনি সাধারণ শিক্ষক থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন সময়ে সিনিয়র শিক্ষক, মুহাদ্দিস, সিনিয়র মুহাদ্দিস, শায়খুত তাফসীর, শায়খুল হাদীস ছানী, নাযিমে দারুল একামা, নাযিমে তা'লীমাত, মজলিসে ইলমি'র গুরুত্বপূর্ন সদস্য ইত্যাদি অনেক সংবেদনশীল কাজে ও মহান দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
বর্তমান দারুল উলূম দেওবন্দের হাতেগোনা কয়েকজন প্রবীন মুহাদ্দিস ছাড়া প্রায় সকলেই মাওলানা কমারুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরী রহ. এর সরাসরি ছাত্র। বর্তমান বাংলাদেশের ফুযালায়ে দেওবন্দের সকলেই তার সরাসরি ছাত্র।
আকাবিরে দেওবন্দের প্রতিচ্ছবি
তিনি ছিলেন আল্লামা ইবরাহীম বালিয়াভী রহ. জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।
আকাবির ও আসলাফের জীবন-কর্ম ও নীতি-আদর্শ সম্পর্কে তাঁর জানাশোনা ছিলো অভাবনীয় ব্যাপক। তার বয়ানে পূর্বসুরীদের আলোচনা ছিলো অসাধারণ আকর্ষণীয়। মাওলানা কমারুদ্দিন গৌরাখপুরি- রহ. দরসের কয়েকটি কমন বাক্য নিচে তুলে ধরা হলো-
* হজরত ওয়ালা থানবি- রেহমতুল্লাহি আলাইহি ফরমাতে থে!
* হজরত মদনি- রেহমতুল্লাহি আলাইহি ফরমায়া করতে থে!
* হজরত কাশমিরি- রাহিমাহুল্লাহ ফরমাথে থে!
* মেরে উস্তাদ আল্লামা ইবরাহিম সাহাব বিলয়াবি- রেহমতুল্লাহি আলাইহি ফরমাতে থে!
হযরত- রাহিমাহুল্লাহ তাঁর দারসে আকাবের আসলাফের মালফুজাত, তাঁদের ঈমান জাগানিয়া ঘটনাবলি খুব বর্ণনা করতেন।
এজন্য তাঁর সম্পর্কে মাওলানা শুয়াইব আলিগড়ি ঠিকই বলেছিলেন,
اسلاف کی یادیں زندہ ہے، جب تک یہ قمر تابندہ ہے!
“যতক্ষন এই চাঁদ ( হুজুরের নামের অর্থ) আলোকিত থাকবে, ততক্ষন আসলাফ আকাবেরের আলোচনাও যিন্দা থাকবে!”
সুলুক ও তাসাউফ
তিনি আল্লামা ইবরাহীম বালিয়াভী রহ. এর নির্দেশে খলীফায়ে থানভী হযরত আলামা শাহ ওয়াছীউল্লাহ খান এলাহাবাদী রহ. এর হাতে বাইয়াত হন। পরবর্তীতে তাকে খেলাফত প্রদান করেছেন হযরত ইবরাহীম বালিয়াভী রহ.,হযরত শাহ ওয়াছিউল্লাহ খান,শাহ আবরারুল হক হারদুঈ,হযরত কারী সিদ্দীক আহমদ বান্ধবী এবং খলীফায়ে মাদানী হযরত মাওলানা মাহমুদ হাসান বাটিয়ালভী রহ. থেকে।
তিনি হযরত আল্লামা ইবরাহীম বালিয়াভী রহ. এর দ্বারা ভীষণ প্রভাবিত ছিলেন।
তিনি প্রতিদিন দারুল উলূম দেওবন্দের তৈয়ব মসজিদে বদা আসর ইসলাহী মজলিস করতেন।
আধ্যাতিক দিক্ষা অর্জনের জন্য হযরতের উসতায আল্লামা ইবরাহীম বালিয়াভী রহ. তাকে হযরত থানভী রহ. এর খলীফা হযরত আল্লামা ওয়াছীইল্লাহ খান এলাহাবাদী রহ. এর কাছে পঠান এবং চিঠিতে লিখে দেন-
ইলমে যাহেরী যা দেওয়ার ছিলো আমি দিয়ে দিয়েছি, এখন ইলমে বাতেনী, আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাতিকার জন্য আপনার কাছে পাঠাচ্ছি। এব্যাপারে আমি কোন সুপারিশ করছিনা, আপনার যা ভালো মনে হয় করবেন। চিঠি পড়ে হযরত আল্লামা শাহ ওয়াছীউল্লাহ খান এলাহাবাদী রহ. মুচকি হেঁসে মন্তব্য করেছিলেন "এটাও তো এক ধরনের সুপারিশ "। এরপরে পরম স্নেহে হযরত আল্লামা কামরুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরীকে বাইয়াত করে নেন। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই হযরত আল্লামা শাহ ওয়াছীলীউল্লাহ খান এলাহাবাদী রহ. এর এমন প্রিয়পাত্রে পরিনত হন যে, একদিন পরম ভালোবাসায় বলেন, যখনই কেউ বাইয়াত হবে তুমিও তাতে শরিক থাকবে। কখনো কখনো তাকে বুকের সাঘে জড়িয়ে নিতেন।
মুহিউস সুন্নাহ হযরত শাহ আবরারিল হক হারদুঈ রহ.ও হযরত আল্লামা কামরুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরীকে অত্যন্ত মূল্যায়ন করতেন। হারদুঈতে আল্লামা কামরুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরী রহ. বয়ান করতেন আর হযরত আবরারুল হক রহ. খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতেন।
হজ ও মক্কায় দরসে হাদিস
জীবনে তিনি বেশ কয়েক বার হজ ও উমরা করেন। ১৯৬৩ ঈসাব্দে হযরত আল্লামা কমারুদ্দিন আহমদ গৌরখপুরী রহ প্রথমবার হজ করেন। মক্কায় তিনি একদিন হজ্জ নিষয় আলোচনা করছিলেন,জনৈক আলেম কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করলে তিনি অত্যন্ত প্রমান নির্ভর যৌক্তিক উত্তর প্রদান করেন। উপস্থিত থাকা আমীরে মক্কা জনাব মাওলানা সাঈদ খান সাহেব তার বক্তব্যে এবং জ্ঞান গরিমায় প্রভাবিত হয়ে হারাম শরীফে প্রতিদিন তাকে দরসে হাদীসের জন্য অনুরোধ করেন। সে মুতাবিক তিনি প্রায় দুই মাস পর্যন্ত হারাম শরীফে প্রতিদিন মাগরিবের পরে বিপুল সংখ্যক মানুষের সামনে দরসে হাদিস প্রদান করতেন।
দাওয়াতি সফর
দাওয়াতি সফরে তিনি হিন্দুস্তানের আনাচেকানাচে, দেশের বাইরে ইংল্যাণ্ড, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, বার্মা, সৌদি প্রভৃতি অঞ্চল সফর করেন।
সহজ-সরল জীবন যাপন
আকাবির ও আসলাফের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি ছিলেন তিনি। ছিলেন ইত্তিবায়ে সুন্নতের আশিক। সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। বাজার সাদাই,ওষুধ পত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিজেই কেনাকাটা করতেন। হাজার হাজার ছাত্র শাগরেদ থাকলেও বাসাবাড়ির খেদমতে কাউকে নিযুক্ত করা পছন্দ করতেননা। সুন্নত পরিপন্থী কিছু দৃষ্টি গোচর হলে নরমে গরমে তার সংশোধন করতেন।
খোলাফায়ে কেরাম
বাংলাদেশে হযরতের লাখো ছাত্র-শিষ্যদের পাশাপাশি খোলাফায়ে কেরামের মাঝে রয়েছেন-
১. হযরত মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী (শায়খুল হাদীস, জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর ঢাকা)
২. হযরত মাওলানা আবদুর রাজ্জাক মানিকগঞ্জী(শায়খে ছানী,জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়া,বসিলা,মোহাম্মদপুর ঢাকা)
৩. হযরত মাওলানা আবুল কালাম কাসেমী (মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস,দারুল ইলূম ঢাকা,মিরপুর-৬)
৪. হযরত মাওলানা মুফতী নাসিরুদ্দিন কাসেমী কক্সবাজারী(শায়খুল হাদীস,জামালুল কুরআন,গেণ্ডারিয়া ঢাকা)
৫. হযরত মাওলানা মুফতী রেজাউল হক মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ (মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস, দারুল উলূম ঢাকা,ধামরাই ঢাকা)
৬. মামুন আব্দুল্লাহ কাসেমী (মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর ঢাকা)।
এছাড়াও তিনি যাদেরকে বিশেষ ইজাযতে ধন্য করেছেন তাদের মাঝে অন্যতম হযরত মাওলানা আব্দুল মতীন বিন হুসাইন (মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস,জামিয়া হাকীমুল উম্মত কেরানীগঞ্জ, ঢাকা)।
লেখালেখি
হযরতের নিয়মতান্ত্রিক লেখালেখির মাশগালা না থাকায় সৃজনশীল কোন গ্রন্থ না থাকলেও আছে জাওয়সহেরাতে কমর নামে ১টি বয়ান সংকলন এবং আলা-কালামুন নেহায়ী নামক ১টি তাকরীর সংকলন। প্রথমটি গ্রন্থস্থ করেছেন হযরতের ছাত্র ও মুরিদ মাওলানা সা'আদাতুল্লাহ খান আর ২য়টি গ্রন্থবদ্ধ করেছেন মাওলানা আবুল কালাম আযাদ কসেমী।
লেখক: মুহাদ্দিস , জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া মাদরাসা, মোহাম্মদপুর ঢাকা।
এনএ/