বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৭ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১২ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সেই বিতর্কিত ব্যক্তি আটক জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, নাম নির্ধারণ

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ইমাম নিয়োগ নিয়ে সংঘর্ষ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে মসজিদের ইমাম নিয়োগ নিয়ে বহিরাগতদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। বহিরাগতরা কলেজের অধ্যক্ষসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছে। এ সময় অধ্যক্ষসহ কিছু শিক্ষক প্রশাসনিক ভবনে আটকা পড়েন।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর ভিক্টোরিয়া কলেজের ধর্মপুর ডিগ্রি শাখায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া শিক্ষকদের বিকেল ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বাশার ভূঁইয়া।

জানা গেছে, গত ১৩ জানুয়ারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে তাবলিগের বিবদমান দু’পক্ষ মাওলানা সাদ ও শূরায়ি নেজাম অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জেরে গত ২০ জানুয়ারি মসজিদের সাপ্তাহিক তালিম সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দেন কলেজ অধ্যক্ষ। বিষয়টি নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখেন কলেজের নজরুল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ধর্মপুরের বাসিন্দারা। এর পরই ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ইমাম মারুফ বিল্লাহকে নানা অভিযোগ তুলে অব্যাহতি দেয় কলেজ প্রশাসন। কিন্তু এলাকাবাসী ইমামকে পুনর্বহালের দাবি তোলে। পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ইমামকে চাকরিচ্যুত করার পর থেকেই কলেজে সংঘর্ষের সূত্রপাত।

প্রতি শুক্রবার নামাজের আগে ইমামকে বহালের দাবি করে আসছে স্থানীয় একটি পক্ষ। গতকাল শুক্রবার নামাজ শুরুর আগেই স্থানীয় লোকজন কলেজের অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় নজরুল হলের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের রক্ষা করতে গেলে হামলায় আহত হন ৫-৬ জন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে আবার কলেজ ক্যাম্পাস ও ফটকে অবস্থান নেয় বহিরাগতরা।

কলেজের শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক গাজী মুহাম্মদ গোলাম সোহরাব হাসান বলেন, ‘হামলায় অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা আহত হয়েছেন। আমাদের অনেকটা সময় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। মূলত ইমামকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।’

নজরুল হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, স্বাভাবিকভাবেই শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন তারা। নামাজের শুরুতে নিউ হোস্টেল মসজিদের ইমাম নামাজ পড়াবেন এ কথা মাইকে ঘোষণা দিয়েছিলেন অধ্যক্ষ। এটা নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন এলাকাবাসী। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষের গায়ে হাত তোলে তারা। শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে গেলে তাদের গায়েও হাত তোলে। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও আহত হয়েছেন।

কয়েকজন এলাকাবাসী পাল্টা অভিযোগ করেন, তাদের এলাকার বেশির ভাগ মানুষই ভিক্টোরিয়া কলেজ মসজিদে নামাজ পড়েন। এখানকার ইমাম মারুফ বিল্লাহ অনেক ভালো মানুষ। কিন্তু ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ইমামের পদ থেকে অব্যাহতি দেন। শুক্রবার নামাজ পড়তে গিয়ে নতুন ইমামের পেছনে নামাজ পড়তে অপারগতা প্রকাশ করলে কলেজের হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী হামলা চালায়।

ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বাশার ভূঁইয়া বলেন, ‘বহিরাগতরা আমাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় বিকেল ৪টার পর আমরা ক্যাম্পাস থেকে বের হই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিনুল ইসলাম জানান, উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তবে কেউ বড় ধরনের আহত হয়নি। অবরুদ্ধ শিক্ষকদের উদ্ধার করেছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ