তিন ধরে চলছে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে পোশাকশ্রমিক বিক্ষোভ ও অবরোধ। বকেয়া বেতনের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করছেন গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরও বেতন না পাওয়ায় মহাসড়কটি অবরোধ করে রেখেছেন তারা। সোমবার সকাল আটটার দিকে নগরের মালেকের বাড়ি এলাকায় শ্রমিকদের এ কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে তারা বিরতিহীনভাবে এ অবরোধ পালন শুরু করেন।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের মোগরখাল এলাকায় টিএনজেড অ্যাপারেলসের ছয়টি কারখানার প্রায় তিন হাজার শ্রমিক গত তিন মাস বেতন পাচ্ছেন না। কয়েক দফা আন্দোলনের সময় শিল্প পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছিলেন। শ্রমিকরা তা মেনে নিয়ে আবার কাজে ফিরে যান। কিন্তু কয়েক দফায় বেতন পরিশোধের দিন নির্ধারিত হলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ তা করেনি।
এতে শ্রমিকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে গত শনিবার সকাল আটটা থেকে কারখানার সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। ওই দিন সকাল পৌনে নয়টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এরপর থেকেই মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানবাহন চলাচল করতে না পারায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা। অনেকে ট্রেনে বা বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে গন্তব্যে যাতায়াতের চেষ্টা করছেন।
সোমবার শ্রমিকদের কেউ রাস্তায় বসে আছেন, কেউ কেউ স্লোগান দিচ্ছেন। তাদের অনেকের হাতেই লাঠিসোঁটা। কোনো যানবাহন যাওয়ার চেষ্টা করলেই সেগুলো আটকানোর চেষ্টা করছেন। রাতে যেসব শ্রমিক সড়কে অবস্থান করেছেন, তাদের অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন, আবার নতুন করে মহাসড়কে এসে অবস্থান নিচ্ছেন শ্রমিকদের আরেকটি অংশ। এতে মহাসড়কটির উভয় পাশে সোমবারও দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
হাবিবুর রহমান নামে এক শ্রমিক গণমাধ্যমকে বলেন, দুই মাস ধরে তারা ঘরভাড়া দিতে পারছে না। দোকানের বাকিও শোধ করতে পারছে না। অথচ বেতন দেওয়া হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামতে হয়েছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, মালিকপক্ষকে একাধিকবার সময় দেওয়া হয়েছিল, তারা বারবার বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন। এ কারণে শ্রমিকরা এখন আর আমাদের কথা বিশ্বাস করছে না। আমরা তাদের একাধিকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওরা নাছোড়বান্দা, মহাসড়ক ছাড়বে না।