বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ।। ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিরোনাম :
বোমা হামলার মামলায় খালেদা জিয়াসহ ২৬ জনকে অব্যাহতি  ‘ভারতকে বুঝতে হবে এটা আ. লীগের আমল নয়, এটা নতুন বাংলাদেশ’ দেশের বিরুদ্ধে যে কোনো অবস্থানকে সহ্য করব না: মুফতী আদনান    নওগাঁয় ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সংহতি গড়ে বাংলাদেশকে শক্তিশালী করার প্রস্তাব দিয়েছি’ এখন একটা মারলে ৪০ টা দাঁড়িয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা ভারত নিয়ে জাতীয় ঘোষণা আসছে : জামায়াত আমির ভারতের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ ভারতে সহকারী হাই কমিশনে হামলার প্রতিবাদে নবাবগঞ্জে ছাত্রদলের বিক্ষোভ  সন্তান লাভের আশায় বটগাছের নিচে আঁচল পেতে নারীরা

বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের সব ভাড়া পরিশোধ করলেন প্রবাসী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত


মো. আবদুল কাইয়ুম মিয়া (৪৪) কলেজে পড়াকালীন সময়ে আনন্দের জন্য বন্ধুদের সঙ্গে ট্রেনে চড়ে ভ্রমন করতেন । প্রায় সময়ই বন্ধুরা মিলে বিভিন্ন স্টেশনে নেমে যেতেন, ঘোরাফেরা শেষে ফিরতি ট্রেনে আবার চলে আসতেন। তার ভাষ্যমতে ওই সময় তারা কেউ ট্রেনের টিকিট কাটতেন না। এইভাবে তিনি বহুবার বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন।ছাত্র জীবনে পকেটে টাকা না থাকায় এবং সচেতনতার অভাবে তিনি এমনটা করতেন । দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটিয়ে দেশে ফেরার পর তার মধ্যে অনুশোচনা হয়। স্টেশনে এসে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের হাতে ট্রেন ভ্রমণ বাবদ বকেয়া এক হাজার পাঁচ টাকা বুঝিয়ে দেন তিনি।

রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। আবদুল কাইয়ুম মিয়া নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার কুমরাদি এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাইয়ুম দুপুরে স্টেশনে এসে জানান, তিনি ছাত্রাবস্থায় বহুবার ট্রেনে বিনা টিকেটে ভ্রমণ করেছেন। এটি এখন তার মধ্যে পাপ বোধের জন্ম দিচ্ছে। ট্রেন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এর রাজস্ব দেশের ১৮ কোটি মানুষ ভোগ করে। সে নিজের অনুশোচনার জন্য স্টেশনে টাকা জমা দিতে চায়। তবে কাইয়ুম কতবার বিনা টিকিটে ভ্রমণ করেছেন, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না। তিনি বেশিরভাগ সময় আড়িখলা ভ্রমণ করছেন বলে জানায়।

তখন স্টেশন মাস্টারসহ বাকি কর্মকর্তারা বসে অনুমান করে এই টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করেন। ব্যবহার না করার শর্তে ১৫ টাকা মূল্যের মেইল ট্রেনের ৬৭টি আজকের দিনের টিকিট দেওয়া হয়েছে তাকে। এর দাম আসে এক হাজার পাঁচ টাকা। এই টাকা নগদ পরিশোধ করে দায়মুক্তি নিয়েছেন তিনি। টিকিট কেটে পরিশোধ করা এই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার সাইদুল ইসলাম, প্রধান বুকিং সহকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ইনচার্জ মো. মুরশিদ মোল্লাসহ প্রমুখ।

কাইয়ুম মিয়া জানান, ২০ বছর আগে আমি নরসিংদী সরকারি কলেজের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে বহুবার বন্ধুদের সঙ্গে ট্রেনে ভ্রমণ করেছি। ওই সময় আমরা কেউ ট্রেনের টিকিট কাটার কথা ভাবতামই না। তবে সম্প্রতি ওই সময়কার বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের স্মৃতি আমার মনে অনুশোচনা তৈরি করছিল। দেড় বছর আগে একবার চেষ্টা করেছিলাম, সম্ভব হয়নি। এবার জর্ডান থেকে দেশে ফিরে স্ত্রীকে বিষয়টি জানালে সে এ ব্যাপারে উৎসাহ দেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে ছেলে আবু সাইদকে নিয়ে বাড়ি থেকে নরসিংদী রেলস্টেশনে যাই। পুরো বিষয়টি জানিয়ে কর্তব্যরত জিআরপি পুলিশের সহায়তা চাইলে তারা আমাকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করে। আমি আমার পাপবোধ থেকে মুক্তি পেয়েছি, নিজের বিবেকের তারণা দূর করতে পেরেছি। এখন মানসিক ভাবে শান্তি পাচ্ছি।

নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনি নিজের পাপমুক্তি ও মানসিক শান্তির জন্য টাকাটা পরিশোধ করেছেন। উনি টাকা পরিশোধ করলে পরে আমরা টিকিটগুলো ওনার কাছে হস্তান্তর করি। পরে তিনি টিকিটগুলো ছিঁড়ে ফেলেন। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে টিকিট কেটে ট্রেনে ভ্রমণের প্রতি সচেতনতা বাড়বে বলে তারা আশা করছে। রেলওয়ের পক্ষ থেকে তাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ