প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে ঢাকায় এক উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে, যা সাকরাইন নামে পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উৎসবের নাম হলেও, আজকাল এর মধ্যে ঢুকে পড়েছে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়—অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, আর অনিয়ন্ত্রিত উন্মাদনা। সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় আতশবাজি, কানফাটানো ডিজে পার্টি, আর অসংযমী আচরণ, যা পুরো এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করে। পুরান ঢাকায় এই দিনটির উদযাপন সবচেয়ে বেশি প্রকট।
গত বছর এই দিনে, সীমাহীন গান-বাজনা ও উচ্ছৃঙ্খলতায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষ। ঠিক সেই মুহূর্তে এগিয়ে এসেছিল জামিয়া ফরিদাবাদ মাদ্রাসার নীতিবান ছাত্র বৃন্দ। তারা শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় নেমে আসে এবং অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে গান-বাজনার বিরোধিতা করে। তাদের এই উদ্যোগের ফলে প্রশাসন বাধ্য হয় সেই অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপ বন্ধ করতে। এতে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে, আর মাদ্রাসার ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত অবস্থান সর্বস্তরে প্রশংসিত হয়।
এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, এ বছর ১৪ জানুয়ারি যাতে কোনো প্রকার অনাচার ও অনিয়ম না ঘটে, সেজন্য আগেভাগেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফরিদাবাদ মাদ্রাসার শাইখুল হাদিস ও মুহতামিম আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস উদ্যোগ গ্রহণ করেন, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সাথে একাধিক বৈঠক করেন, এবং সবার সহযোগিতায় একটি শান্তিপূর্ণ ও নীতিসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালান।
১২ জানুয়ারি (রবিবার) বাদ আসর থেকে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। মিছিল হয়েছে দুই ধাপে। প্রথম ধাপে, মাদ্রাসা থেকে শুরু করে পোস্তগোলা পর্যন্ত মিছিল গিয়ে ফিরে আসে মাদ্রাসায়। সেখানে মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়। মিছিল কাঠেরপুল হয়ে ধূপখোলা, গেন্ডারিয়া থানার সামনে পথসভা করে পুনরায় মাদ্রাসায় ফিরে আসে।
কেএল/