|| হাসান আল মাহমুদ ||
হঠাৎ করেই ভয়াবহ দুর্যোগের কবলে বাংলাদেশ। ভারতের বাঁধ খুলে দেয়ায় উজানের পানি ও ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চাঁদপুরসহ ১৩ জেলা। আশপাশের অঞ্চল। বন্যায় সহায়-সম্পত্তি হারিয়ে অসহায় হাজার হাজার পরিবার। অন্তত ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দিসহ ক্ষত্রিগ্রস্থ অসংখ্য অগণিত। সীমাহীন দুর্ভোগে আছে বন্যাকবলিত মানুষেরা। দুর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে সাধারণ মানুষসহ নানা সংগঠন। ত্রাণ তৎপরতায় বিপুল সাড়া পেয়েছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
এরই মধ্যে সাড়ে তিন লাখ মানুষকে অনুদান দিয়েছে সংস্থাটি। ত্রাণকাজে সহায়তার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিয়েছেন ৪ হাজারের বেশি। তাদের এই ত্রাণ তৎপরতা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার ঘরেই হাসি ফোটাচ্ছে।
বন্যাকবলিত অঞ্চলে মোবাইল-লাইট চার্জের জন্য জেনারেটরের ব্যবস্থা করেছে আস্-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশনটি জানিয়েছে, ‘বাড়িতে পানির পাম্প থাকার পরও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় যারা পানি তুলতে পারছেন না, আমরা জেনারেটর নিয়ে তাদের বাড়িতে যাচ্ছি, পানির ট্যাংক ভর্তি করে দিয়ে আসছি। চারপাশে থৈ থৈ পানি অথচ এই দুর্যোগে বিশুদ্ধ পানির সংকটই সব থেকে বেশি। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন দুর্গত অঞ্চলগুলোতে মোবাইল ও লাইট চার্জ দেয়ার জন্যও জেনারেটর সেবা চালু আছে।
এদিকে রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলে অবস্থিত আস্-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের নির্মাণাধীন মসজিদ কমপ্লেক্স সংলগ্ন মাদরাসাতুস্ সুন্নাহ মাঠে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’র ত্রাণ কার্যক্রম দেখতে এলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
আজ বুধবার ( ২৮ আগস্ট) সন্ধায় শায়খ আহমাদুল্লাহ আওয়ার ইসলামকে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি জানান, ‘আজ আমাদের ত্রাণ কার্যক্রম দেখতে এসেছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম দেখে তিনি একে আল্লাহর রহমত ও সব শ্রেণি-পেশার মানুষের আস্থার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেন।’
এর আগে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন বন্যা পরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসন নিয়ে নিজেদের স্বপ্নের কথা জানালো। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘শত কোটি টাকার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করার স্বপ্ন দেখছি আমরা।
‘দশ কেজির প্যাকেজে ২০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের পাশাপাশি ৫০ হাজার পরিবারের জন্য চাল-ডাল-তেল ইত্যাদি বিতরণের পরিকল্পনা ছিল আমাদের। সেই লক্ষ্যমাত্রা বর্ধিত করে আমরা ১ লাখে উন্নীত করেছি।’- উল্লেখ করেন তিনি
তিনি জানান, ‘পানি কমে গেলে ৫০ হাজার পরিবারের মাঝে ২৫ কেজি করে চাল বিতরণের পরিকল্পনা ছিল। সেটা বেড়ে ৭০ হাজারে উন্নীত হয়েছে।’
‘এছাড়া বন্যায় গৃহহারা ৫ হাজার পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ প্রকল্প যথারীতি থাকছেই ইনশাআল্লাহ।’- যুক্ত করেন তিনি।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং কৃষককে সুদি কিংবা সুদমুক্ত ঋণের পরিবর্তে সম্পূর্ণ নগদ অর্থ সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। সেই সাথে বন্যায় মৃত্যু বরণকারী অসহায় পরিবারের উপার্জনের ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগও আমরা হাতে নেব ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ আমাদেরকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের তাওফীক দান করুন।’
হাআমা/