রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

 বেফাকের শুরায় আল্লামা মাহমুদুল হাসানের বয়ান


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

 

আগামী ৭ অক্টোবর শনিবার কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-বেফাকের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। কাউন্সিলে সারাদেশের বেফাকভুক্ত মাদরাসার সদস্যরা অংশ গ্রহণ করবেন। সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বেফাকের সভাপতি ও মহাসচিব মনোনীত হবে। আজ শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুরার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বেফাকের সভাপতি ও হায়াতুল উলিয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান। 

বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ(পীর মধুপুর),  মুফতি মনসুরুল হক, মাওলানা আনাস মাদানী,  মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মুফতি জসিম উদ্দিন, মাওলানা জাফর আহমদ, মীর ইদ্রিস, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, মুফতি ‍মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী, কোষাধ্যক্ষ মাওলানা মুনীরুজ্জামানসহ শুরার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আল্লামা মাহমুদুল হাসান উপস্থিত শুরায় গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যও প্রদান করেন। সদরে বেফাকের বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ

আলহামদু লিল্লাহি ওয়া কাফা ওয়া সালামুন আলা ইবাদিহিল্লাজীনাসতাফা আম্মা বাদ

মুয়াক্কার ও মুহতারাম আরাকীনে বেফাক, মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার অশেষ মেহেরবানীতে অল্পদিনের ব্যবধানে আমরা আমেলার সদস্যগণ এবং কিছু বেশি সময়ের ব্যবধানে মজলিসে শুরার সদস্যগণকে সঙ্গে নিয়ে মহান এক দ্বীনি জিম্মাদারী পালনে একত্রিত হতে পেরেছি, এজন্য দয়াময় আল্লাহ পকের দরবারে অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সফরের কষ্ট স্বীকার করে তাশরীফ আনয়ন করার জন্য আপনাদের সকলের প্রতি আমার আন্তরিক মুবারকবাদ। এই সময় কালের মধ্যে যেসব উলামা-আকাবির আমাদের ছেড়ে আল্লাহর সকাশে চলে গেছেন আমরা তাদের মাগফেরাত কামনা করছি। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে জান্নাতে উঁচু মাকাম দান করুন।

সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম,

                উপমহাদেশে শত শত বছরের মুসলিম নেতৃত্ব ও শাসনের পর উম্মতের হালাতের মধ্যে নেতিবাচক পরিবর্তন দেখা দিলে বিদেশী বিধর্মী শক্তির হাতে মুসলিম শাসন কর্তৃত্বের অবসান ঘটে। সমাজের সকল পর্যায়ে মুসলিম প্রাধান্য বিনষ্ট হয়ে যায়। জাতির উপর নেমে আসে বহুমুখী বিপর্যয়। এই দুর্যোগ মুকাবেলায় আমাদের বড়রা দ্বীনি ইলমের হেফাজত ও উলামায়ে কেরামের উপর শরিয়ত অর্পিত  দায়িত্ব পালনের জন্য দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুনিয়ার বুকে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তাদের সে ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য আমাদের মুরুব্বীগণ বেফাক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে বেফাক তার পথচলা অব্যাহত রেখেছে। সময়ের ব্যবধানে বড়দের এই কঠিন দায়িত্ব আমাদের উপর এসে বর্তেছে। বেফাকের উসূল ঐতিহ্য বজায় রেখে মুরুব্বীদের রেখে যাওয়া এই আমানত সবাই মিলে হেফাজত করা এবং সময়ের সবধরণের কঠিন বাস্তবতা মুকাবালা করে এই কাজ এগিয়ে নেওয়া আজকের বড় চ্যালেঞ্জ।

মুহতারাম উলামা হাযরাত,

                ইজতেমায়ী কাজের সৌন্দর্য্য এই যে, এখানে যেকোন সিদ্ধান্ত পরস্পরে পরামর্শ করে নেওয়া হয়। দ্বীনি কাজে শুরায়ী নেযাম অপরিহার্য্য। পাশাপাশি তাকসীমে কার বা কর্ম বন্টন পদ্ধতির জন্য বেফাকে অনেকগুলো সাব-কমিটি নানা বিষয়ের প্রস্তাবনা ও সুপারিশ তৈরী করে মজলিসে খাস ও মজলিসে আমেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সহজ এবং বস্তুনিষ্ঠ করতে সাহায্য করে। এভাবে আহলুর রায় দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণের চিন্তা ও মেহনত বেফাক বিভিন্ন সাব-কমিটির মাধ্যমে লাভ করতে সক্ষম হয়। এভাবে বিভিন্ন কমিটির সমন্বয় এবং নানা পর্যায়ের সদস্য গণের অংশগ্রহণও নিশ্চিত হয়। এতে কোন কাজে ব্যক্তি বা জিম্মাদারের যেমন সিদ্ধান্ত নিতে আসানী হয়, ঠিক তেমনই সিদ্ধান্ত সঠিক এবং বাস্তবসম্মত হয়। প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিগন তাই কোন কৃতিত্ব বা ব্যর্থতার জন্য কেবল বিশিষ্ট লোকেদের প্রশংসা বা নিন্দা করেন না। কারণ ইজতেমায়ী কাজ সবাই মিলে করে থাকেন। হাদীস শরীফেও বলা হয়েছে- “মা খাজিলা মানিসতাশারা” অর্থাৎ যেব্যক্তি পরামর্শ করে কাজ করে সে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়না। অন্য হাদীসে আছে, “আদ-দ্বীনু আন-নাসিহা”- দ্বীন হচ্ছে খায়েরখাহীর নাম। আলহামদুলিল্লাহ, বেফাকেও আমাদের সহকর্মীগণ বড়দের এই খায়েরখাহী ও শুরায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করে একদিকে যেমন  বরকত পাচ্ছি, অপরদিকে আল্লাহর ফযল ও করমে বেফাকের ব্যাপ্তি, উন্নতি, এবং অগ্রগতিও অব্যাহত রয়েছে।

 

মুয়াজ্জাজ হাযেরীণ,

                সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষা একটি অনিয়মপূর্ণ বিষয় বলে মানুষের সামনে প্রমানিত। আলহামদুলিল্লাহ,  কওমী মাদরাসা অন্য অনেক বিষয়ের মতো পরীক্ষার স্বচ্ছতার দিক দিয়েও জাতির সামনে প্রশংসিত। বেফাক তাৎক্ষণিক প্রশ্নপত্র প্রেরণ বিষয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার করে জাতির সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অনিয়ম-এর পরিমাণ না থাকার পর্যায়ে নেমে এসেছে যা বর্তমান সময়ে খুবই দুর্লভ। বেফাকের এই উদ্ভাবনী চিন্তা সরকার ও অন্যান্য শিক্ষা কর্তৃপক্ষও বিস্ময়ের সাথে স্বীকার করেছেন। অনেকে অনুসরণের দিকেও এগুচ্ছেন। এবছর থেকে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় আগামী দু‘এক বৎসরের মধ্যে সারা দেশের কওমী মাদরাসার শিক্ষার্থি নিবন্ধন, অন্তর্ভুক্তি, গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থাসহ বেফাকের সকল বিভাগ অনলাইনভিত্তিক সফটওয়্যারের আওতায় চলে আসবে, ইনশাআল্লাহ। তখন সারা দেশের হাজার হাজার মাদরাসার মুহতামিম, নাযেমে তা’লীমাত বা অন্যান্য প্রতিনিধিদের বহু অর্থ, সময় ব্যয় এবং নানাবিধ কষ্ট স্বীকার করে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজের জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বেফাকে আসা-যাওয়া বাধ্যতামূলক থাকবে না। নিজ নিজ মাদরাসায় বসেই তারা বেফাকের সাথে প্রায় সব কাজ সারতে পারবেন। একসময় শিক্ষার্থীরাও নিজ ঘরে, কর্মস্থলে এমনকি প্রবাসে থেকেও অনলাইনে বেফাকের সাথে নিজেদের কাজকর্ম সম্পাদন করতে পারবে। আল্লাহর ফজলে বেফাকে প্রশাসনিক কিছু সংস্কারের ফলে বর্তমানে বিভিন্ন কাজে আগত মাদরাসা প্রতিনিধিগণের কাজকর্ম যথেষ্ট সহজ ও সুশৃঙ্খল হয়েছে। তারা উত্তম আচরণ, আন্তরিক খেদমত এবং একরাম লাভ করছেন। অফিসে স্থানের সংকীর্ণতা কিছু কষ্টের কারণ হয়ে থাকে, যা নতুন ভবন চালু হলে অতিশীঘ্রই দুরীভূত হবে বলে আমরা সবাই আশাবাদী। বেফাকের তা‘লীম-তারবিয়াত বিভাগ, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন ইত্যাদি আরো নিপুনভাবে এগিয়ে নিচ্ছে, আল্লাহ চাহেতো অল্পদিনের ব্যবধানে বেফাক বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ নিজস্ব ভবনে স্থায়ীরূপে চালু করতে যাচ্ছে। আল্লাহর ফযলে ইলহাকের পরিমান সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছার ফলে মাদরাসা পরিদর্শনের বাড়তি জনবল অপরিহার্য্য হয়ে পরেছে অতএব বেফাক আপাততঃ পনের জন নতুন পরিদর্শক নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। শিক্ষক প্রশিক্ষণ, নুরানী প্রশিক্ষণ, হিফয প্রশিক্ষণ ও দরসিয়াতের পাশাপাশি আরো কয়েকপ্রকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে।দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার বাস্তবায়ন হিসেবে নিজস্ব জায়গায় এসব প্রশিক্ষণের বছরব্যাপী স্থায়ী ইন্তেজাম অচিরেই বাস্তবায়িত হবে ইনশাআল্লাহ।

 

সম্মানিত আহলে শুরা,

                আমাদের সময়ে বেফাকে আরো কিছু বিষয়ের উপর অধিক জোর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অনেক ক্ষেত্রে আলহামদুলিল্লাহ সুফলও দেখা গিয়েছে। যেমন-বেফাক কর্তৃক প্রকাশিত পাঠ্য বইগুলো নকল প্রতিরোধে কোম্পানী হতে কেবল বেফাকের জন্য ভিন্ন কালারের কাগজ বানিয়ে ছাপানো হয়েছে যার ফলে বিগত বৎসর প্রায় ১০০% নকল প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে, যেধরণের কাগজ আর কাউকে তৈরী করে দেওয়া হবে না বলে উৎপাদক কোম্পানী বেফাকের সাথে চুক্তিবদ্ধ। ধারণা করা যায় যে, এতে বেফাক বহুলাংশে লাভবান হয়েছে। সকলের নিকট তা প্রশংসিতও হয়েছে। বেফাকের সম্পাদনা পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সকল বইয়ের বানান পরিবর্তনসহ সম্পাদনার কাজ সম্পন্ন করানো হয়েছে। আরো কয়েক জামাআতের পাঠ্য কিতাব প্রকাশের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। ক্রমান্বয়ে পূর্ণাঙ্গ কওমী সিলেবাসের সমুদয় দরসী কিতাব বেফাক থেকে প্রকাশের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে যেসব জামাআতের পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে সেসব জামাআতের বাকি দু‘একটি কিতাব দ্রুত প্রকাশ করে সেট পূর্ণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একটি বৈশিষ্ট্যময় বানান রীতি এবং ধর্মীয় শব্দের প্রতিবর্ণায়ন নির্দেশিকা বেফাক সম্পাদনা পরিষদ তৈরী, প্রস্তাব ও প্রয়োগ করছে। সেই সাথে ১৪৪৪ হিজরির বই ছাপার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১লা রমযানের পূর্বেই ৮৭,৫৭,৪৩৯ কপি বই মুদ্রণ করা হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের হাতে যথাসময়ে বই পৌছে দিতে বেফাক সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে বেফাকের বানান রীতি প্রয়োগের মাধ্যমে সকল বইসমূহ আরো সহজ-সাবলিল ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সম্পাদনার কাজ চলমান রয়েছে। বহুবছর পর দীর্ঘ কয়েক বৈঠকে পরিমার্জন ও সংযোজনের পর মাদরাসা পরিচালনা বিধি বা দস্তুরুল মাদারিস নতুন সংস্করণ আকারে চলতি মাসেই প্রকাশিত হয়েছে। ইলহাকভুক্ত মাদরাসাসমূহে যে দস্তুরটির চাহিদা ব্যাপক। আজকের এই শুরা সমাবেশে দস্তুরুল মাদারিস আপনাদের তুলে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত।

 

১লা রমযানের আগেই বেফাকের সকল বিভাগের অর্থ ও হিসাব সংরক্ষণ নীতি ও উসূলের ভিত্তিতে ঢেলে সাজানোর ফলে বর্তমান সময়ের আর্থিক স্বচ্ছতা সকলের নিকট দৃষ্টান্ত হওয়ার মতো। প্রতিদিন হিসাব মিলানো, মাসিক হিসাব সমাপনি, পূর্ব চাহিদা পাশ, মাসিক বাজেট পেশ এবং নির্দিষ্ট দিনের ভিতর বিগত একবছরের হিসাব অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটির সামনে পেশ করা, বিল ভাউচার সংরক্ষণের হিসাববিজ্ঞান সম্মত ও স্বীকৃত নীতি অনুসরণসহ সম্ভ্যাব্য সবধরণের অস্বচ্ছতা ও দুর্বলতা দূর করে আল্লাহর মেহেরবানীতে একটি সুন্দর ইমেজ তৈরী করা সম্ভব হয়েছে। ব্যাংক লেন-দেনে অধিকতর নিয়মতান্ত্রিকতাও বেফাককে স্বচ্ছতার নতুন মাত্রা দিয়েছে। বছরান্তে বিগত বছরেরর অডিটকার্য সম্পাদনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া এবং তা বাস্তবায়নের সুফল পাওয়া যাচ্ছে।

শ্রদ্ধাভাজন ওরাসাতুল আম্বিয়া,

বিগত ২৯/০৫/১৪৪৪হিঃ তারিখে বেফাকের সর্বমোট ইলহাকভুক্ত মাদরাসা ছিল ১৯,৯৬১টি, বর্তমানে ইলহাকভুক্ত মাদরাসা সংখ্যা  ২২,৬৫০ টি মোট ২৬৮৯টি মাদরাসা বিগত ২৯/০৫/১৪৪৪হিঃ তারিখে অনুষ্ঠিত আমেলার পর হতে আজ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। উক্ত আমেলার সময় বেফাকের সাধারণ, পরীক্ষা ও প্রকাশনা তহবিলের উদ্বৃত্ত তহবিল ছিল ৬৮ কোটি ৬৬লক্ষ ৪০হাজার ৮১০টাকা। এরপর যথারীতি বেফাকের স্বাভাবিক আয় এবং পরীক্ষা গ্রহণ, পুস্তক মুদ্রণ, পরিচালনা ব্যয় ইত্যাদি আঞ্জাম দেওয়ার পর উপরন্তু সামাদনগরস্থ ভবন নির্মাণ কাজে এবং বামৈলস্থ বেইজমেন্টসহ নয়তলা (বারতলার ফাউন্ডেশন ও অনুমোদন) বিশিষ্ট নতুন ভবন ক্রয় বাবত প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয় করার পরও বর্তমানে উক্ত তিন তহবিলে সর্বমোট ৫৪কোটি ৪৬লক্ষ ৯২ হাজার ৮৪৬ টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। বর্তমান জায়গার প্লান পাশ করিয়ে বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা সাবকমিটির মাধ্যমে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। সামাদনগরস্থ বেফাক ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। প্রথম কাজ শুরুর পর করোনা কাল এসে যাওয়ায় সবকিছুর মতো এতেও স্থবিরতা দেখা দেয়, ইতোমধ্যে নির্মান সামগ্রীর দাম অন্যসব দ্রব্য মুল্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাওয়া, কিছু কাজ নতুনভাবে চাহিদা দেওয়া, ক্ষেত্রবিশেষে জিনিষের মান বৃদ্ধির চাহিদা দেওয়া ইত্যাদি কারণে নির্মিয়মান ভবনের ব্যয়ে নতুন করে সংশোধনী আসে এবং নির্মান সাব কমিটি এবিষয়ে নির্মান সংস্থার সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রাক্কলিত বাজেটে সংশোধনী ও প্রকল্প ব্যয়ের পুনঃর্মুল্যায়ন করায় কাজ দ্রুত অগ্রসর হয়। উক্তপ্রকল্প এখনো সমাপ্ত না হওয়ার কারণে এর চুড়ান্ত হিসাব হাতে আসতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। সর্বশেষ আলোচনা অনুযায়ী এবছরের মধ্যেই নির্মান কাজ সম্পন্ন করে ভবনটি বেফাককে বুঝিয়ে দিতে নির্মান প্রতিষ্ঠান অঙ্গিকারাবদ্ধ। আশা করা যায় ২০২৪ সালের শুরুর দিকে বেফাক এই ভবন ব্যবহার করতে পারবে। এতে প্রশিক্ষণসহ বেফাকের অন্য অনেক কর্মসূচী নিজস্ব ভবনে ব্যাপকতা ও স্বস্তির সাথে বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নসহ বেফাকের সামগ্রিক কল্যান সাধনে আপনাদের সকলের সার্বিক সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।

দেশের অর্থনৈতিক মন্দাভাব ও জিনিসপত্রের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় এ বছর সকল পর্যায়েরশিক্ষার্থীদেরপরীক্ষার ফি কমানো হয়েছে। এতে বেফাকের সম্ভাব্য আয় প্রায় ২ কোটি টাকা কম হলেও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য এটি ছিল বেফাকের পক্ষ থেকে একটি সৌজন্যমূলক বিবেচনা। আল্লাহর রহমতে আমরা সবাই একমত হয়ে এই রেয়ায়েতটুকু করতে পেরেছি। অনগ্রসর এলাকায় মকতব-মাদরাসা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা এবং প্রয়োজনে ত্রাণ-সাহায্য প্রদান কার্যক্রম বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অযুখানা টয়লেট ইত্যাদি নির্মানে যেসব আবেদন জমা আছে ক্রমান্বয়ে সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতেও নানাবিধ কল্যানকর কাজে বেফাকের উদ্যোগ চালু থাকবে ইনশাআল্লাহ।

 

পরিশেষে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে দেশ জাতিও উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ কামনা করে আমার বক্তব্য শেষ  করছি। তিনি শেষ জামানায় উলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রাণ জনগণকে সবধরণের ফিতনা থেকে মুক্ত রেখে নিরাপদ ও আ‘ফিয়াতের জিন্দেগী এবং পরকালীন কামিয়াবী দান করুন, আমীন।

হুআ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ