আবদুল্লাহ তামিম।। আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিআতিল কাওমিয়া বাংলাদেশ-এর অধীনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় শুরুলগ্ন থেকেই অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে আসছে ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাদরাসা বাইতুল উলুম ঢালকানগর।
এ বছর ১৪৪৪ হিজরীতে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষায়ও ঈর্ষণীয় ফল অর্জন করেছে মাদরাসাটি। মোট ৩৪ জন পরীক্ষার্থীর সকলেই মুমতায (স্টারমার্ক) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ১১ জন পরীক্ষার্থী মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে। যথাক্রমে : ৩য়, ৯ম, ১৩ তম, ১৭ তম, ১৮ তম, ২১ তম, ২২ তম, ২৩ তম (ক), ২৩ তম (খ), ২৪ তম, ২৭ তম স্থান তারা লাভ করেছে।
এর আগে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের অধীনে অনুষ্ঠিত ৪৬ তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করেছে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী বাইতুল উলুম ঢালকানগর মাদরাসা। ১৪৪৪ হিজরী শিক্ষাবর্ষে ৪৬ তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কিতাব বিভাগে সর্বমোট ১০৬ জন ছাত্রের মধ্যে মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে ৬৭ জন। মুমতায (স্টারমার্ক) লাভ করেছে ১০০ জন, জায়্যিদ জিদ্দান (১ম বিভাগ) থেকে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫ জন, মাকবুল: ১ জন।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর অধীনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় শুরুলগ্ন থেকেই মাদরাসা বাইতুল উলুম ঢালকানগর ঈর্ষণীয় সফলতা অর্জন করে চলছে।
ঢালকানগর মাদরাসার মুহতামিম ও পীর সাহেব ঢালকানগর মুফতি জাফর আহমাদ আওয়ার ইসলাম কে বলেন, ইলম আছে আমল নাই তার সম্পর্ক হয় শয়তানের সাথে, আর ইলমের সাথে আমল থাকলে তার সম্পর্ক হয় নবীদের সাথে। আর নবীদের সাথে যাদের সম্পর্ক থাকে তারা ভালো মানুষ হয়। আমরা চাই আমাদের বাচ্চারা যেনো কাবেল হয় মাকবুল হয়। শুধু কাবেল হলেই হয় না। কাবেলের সাথে মকবুলও হয়। আমরা আমাদের মাদরাসায় সবচেয়ে বেশি যেটা চেষ্টা করি সেটা হলো আমাদের ছাত্ররা যেনো কাবেল হয় ও মাকবুল হয়। আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আমাদের মাদরাসায় চার বছর পাঁচ বছর যাবত অনেক ছাত্র আছে যাদের তাকবিরে উলা ছুটেনি আলহামদুলিল্লাহ।
বাইতুল উলুম ঢালকানগর মাদরাসার শিক্ষাসচিব মুফতি হাবিবুল্লাহ মিসবাহকে এ অসাধারণ সাফল্যের পিছনের মেহনত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে, আমাদের মুহতামিমের দিকনির্দেশনা ফিকির ও দোয়ায়, সব শিক্ষকের সম্মিলিত চেষ্টা এবং ছাত্রদের মেহনতের সমন্বয়ে আমরা ভালো রেজাল্ট করতে পেরেছি। আমাদের ছাত্রদেরকে আলহামদুলিল্লাহ বছরের শুরু থেকেই কিতাব নির্ভর পড়াশোনা করানো হয়। হাশিয়া বাইনাসতরসহ কুতুববীনি ও কিতাবনির্ভর করেই ছাত্রদেরকে গড়ে তোলা হয়। বিশেষ করে নেসাব পরিপূর্ণ করে, হক আদায় করে পড়ানো হয়। আমাদের মুহতামিম মুফতি জাফর আহমাদ নিজেই এ বিষয়গুলো তদারকি করেন।
পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেক বেফাক জামাতে আলাদা নেগরান নিযুক্ত করা হয়। বিশেষ করে হাতের লেখা ও আরবি লেখা নিয়ম-কানুন যেনো সঠিকভাবে লেখা হয় কী না সেটা পরিপূর্ণভাবে দেখা হয়। উত্তরপত্র সঠিকভাবে লেখার বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। হাতে কলমে তাদের ভুলগুলো ঠিক করে দেওয়া হয়। সর্বোপরি কিতাবনির্ভর পড়াশোনা ও শিক্ষকদের আন্তরিক মেহনতে, আল্লাহর মেহেরবানিতে ছাত্ররা ভালো রেজাল্ট করতে সক্ষম হয়। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের ছাত্ররাও প্রচুর পরিমাণে মেহনত করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি আমরা তরবিয়তের বিষয়েও যত্নবান হই, যেনো যুগের চাহিদা পূরণে প্রতিটি ছাত্র হক্কানি রব্বানি আলেম হতে পারে।
বাইতুল উলুম ঢালকানগর মাদরাসার বিস্তারিত ফলাফল:
ফযীলত
পরীক্ষার্থী: ৩০ জন।
মেধা তালিকা: ২য়, ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম সহ মোট ২০ জন, মুমতায : ৩০ জন।
সানাবিয়া উলইয়া
পরীক্ষার্থী ২৪ জন, মেধাতালিকা : ১ম স্থান সহ ১০ জন,
মুমতায: ২১ জন,
জায়্যিদ জিদ্দান: ৩ জন।
মুতাওয়াসসিতাহ
পরীক্ষার্থী: ২৬ জন,
মেধা তালিকা: ২০ জন, মুমতায : ২৬ জন।
ইবতিদাইয়্যাহ
পরীক্ষার্থী : ২৬ জন, মেধাতালিকা : ১৭ জন, মুমতায : ২৩ জন, জায়্যিদ জিদ্দান : ২ জন,
মাকবুল: ১ জন।
হিফযুল কুরআন
পরীক্ষার্থী : ২৯ জন। মেধাতালিকা : ৯ জন,
১ম (২ জন) ২য় (৫ জন) ৩য় ( ২ জন) মুমতায : ২৬ জন, জায়্যিদ জিদ্দান : ১ জন, মাকবুল : ২ জন।
সর্বমোট মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৬ জন।
-এটি