আওয়ার ইসলাম ডেস্ক:।। দাঁড়িয়ে আছি রাস্তায়৷ গাড়ির জন্য৷ সাথে লিফলেট, ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন, দাওয়াতকার্ড ইত্যাদি৷ পোটলা দুটি বেশি ওজনি না হলেও, সাইজে বড়ো দেখাচ্ছিলো৷ গাড়িও পরপরই আসছে৷ কিন্তু কোনো গাড়ি আমাকে নিতে আগ্রহ দেখায়নি৷ কারণ, মালগুলোর কারণে হয়তো দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়ার সমস্যা হতে পারে৷
আমিও ভাবছিলাম, এগুলো সাথে করে গাড়িতে ওঠা কষ্টই৷ যে গাড়িগুলো রোডের সার্ভিস ভালো সাধারণ সেগুলো দিয়েই চলাফেরা করি৷ কিন্তু অন্য দিন আমাকে নিতে আগ্রহ দেখালেও, সাথে পোটলা থাকায় আজ কেউই আগ্রহ দেখালো না৷
দাঁড়িয়ে ভাবছি কী করা যায়৷ মনে জাগলো আচ্ছা বি, আর, টি, সি দুতলা বাসে যেতে পারবো৷ বলে রাখি, এই দুতলা বাসটি আমার অপছন্দের৷ চলে ধীরগতিতে৷ জাগায় জাগায় থামে৷ ইত্যাদি কারণে এই গাড়িটি আমার অপছন্দের৷ পারতপক্ষে এটিতে ওঠি না৷
কিন্তু আজকে দেখলাম, এটি ছাড়া আমার কোনো গতি নেই৷ তাই সিদ্ধান্ত নিলাম এটিতেই ওঠবো৷ এতোক্ষণে অপছন্দের বি, আর, টি, সি বাস আসছে দেখা যায়৷ আমাকে দাঁড়ানো দেখেই গতি স্লো করে দেয়৷ মনে হলো, তারা আমাকে সম্মান করলো৷ গুরুত্ব দিলো৷
আমিও রোডের যাত্রী বিপদে পড়েছি, তারা বুঝতে পারলো৷ আমি ওঠে বসলাম৷ আনন্দও পেলাম আমার অপছন্দের বাসটি আমাকে মূল্যায়ন করে বিপদের উপকার করার জন্যে৷
বসে বসে ভাবছি আর সামনে চলছি৷ আচ্ছা, তাহলে জীবনের অপছন্দের জিনিসও জীবনের কোনো বাঁকে প্রয়োজন পড়তে পারে৷ জীবনের কোনো বিপদে সহযোগী হয়ে পাশে দাঁড়াতে পারে৷ কারণ, কার জীবন কখন কীভাবে কাটে- বলা মুশকিল৷ কখন কার কোন জিনিসের প্রয়োজন পড়ে যায়- বিষয়টি অজানা৷ কখন কে কীভাবে বিপদে পড়ে যায়- তাও বলা অনিশ্চিত৷ সুতরাং, কোনো কিছুকে অবজ্ঞা, অপছন্দের চূড়ান্ত সীমায় নিয়ে যাওয়া বোধহয় ঠিক হবে না৷
শেখ সাদি রহ় যথাযথই বলেছেন, শত্রুকে চিরশত্রু মনে করে শত্রুতা করার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করো না৷ কারণ, জীবনের কোনো সময়ে এসে সে তোমার একান্ত বন্ধু হয়ে যেতে পারে৷ তখন তোমার অতিরিক্ত শত্রুতার কারণে লজ্জা পেতে হবে৷
আবার একান্ত বন্ধুর সাথেও জীবনের ভেদ করা বলে ফেলো না৷ কারণ, সময়ের বিবর্তনে, মন-মানসিকতার পরিবর্তনে জীবনের কোনো স্তরে এসে সে তোমার শত্রু হয়ে যেতে পারে৷ তখন কিন্তু তোমার বলা ভেদ কথার দ্বারাই সে তোমাকে গায়েল করে ফেলবে৷
সুতরাং, সর্বক্ষেত্রে আমাদের একদম বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি পরিহার করতে হবে৷ ইনসাফের নজরে সবকিছু দেখতে হবে৷
-এটি