সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


২০৫ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ২০১ গম্বুজ মসজিদে নামাজ আদায়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সাইকেল চালিয়ে প্রায় ২০৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ২০১ গম্বুজ মসজিদ জুমার নামাজ পড়ার জন্য এসেছেন ৫৮ বছর বয়সী বৃদ্ধ রাসেল লাল বিশ্বাস।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার পাথালিয়া গ্রামে নির্মিত ২০১ গম্বুজ মসজিদে পৌঁছান তিনি। পরে দুপুরে স্থানীয় মুসুল্লিদের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন। সে সময় তাকে দেখতে মুসুল্লি ও স্থানীয় লোকজন ভিড় জমান। তার সাথে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেন মুসুল্লিরা।

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ২০১ গম্বুজ মসজিদে জুমা’র নামাজ আদায় করেন রাসেল। এসময় শতশত মুসুল্লিদের কাছে প্রশংসায় ভাসে।

বৃদ্ধ রাসেল লাল বিশ্বাসের বাড়ি ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলা পৌর এলাকার পশ্চিম গারাখোলা গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুল ছাত্তার বিশ্বাসের ছেলে। পেশায় তিনি বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি বলে জানান। নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টায় যাত্রা শুরু করেন।

বৃদ্ধ রাসেল লাল বিশ্বাস জানান, পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার পাথালিয়া এলাকায় নির্মিত ২০১ গম্বুজের বিষয়ে জানতে পারেন। তিনি এসব মাধ্যমে জেনেছেন দৃষ্টি নন্দন এই ২০১ গম্বুজ মসজিদে প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ জুমা’র নামাজ পড়তে আসেন। সে থেকেই ইচ্ছে ২০১ গম্বুজ মসজিদে নামাজ পড়ার।

তিনি জানান, পরে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ওই মসজিদে আসার। বাসে আসলে আশপাশে পরিবেশ দেখা যাবে না ভেবে পুরনো একটি বাইসাইকেল নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন। এ বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করলে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান সাইকেল নিয়ে আসতে উৎসাহিত করেন। সেই উৎসাহ থেকে প্রায় ২০৫ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে মসজিদে আসতে সক্ষম হন।

জানা যায়, বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টার দিকে মধুখালী নিজ বাড়ি থেকে সাধারণ একটি পুরনো বাইসাইকেল নিয়ে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের ২০১ গম্বুজ মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কোনো বিরতি না দিয়ে ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছান দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। ফেরিতে নদী পার হয়ে আরিচা ফেরিঘাটে আসেন। তারপর আবার সাইকেল চালানো শুরু করেন।

মানিকগঞ্জের শিবালয়, ঘিওর হয়ে দৌলতপুর উপজেলা সদরে আসেন বুধবার দুপুরে। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে আবার যাত্রা শুরু করেন রাসেল। এরপর টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা পার হয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার অলোয়া এলাকায় একটি মসজিদে রাতযাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু ওই এলাকার মতিয়ার রহমান নামের এক ব্যক্তি তাকে তার বাড়িতে রাতযাপন করার সুযোগ দেন। পরে আবারও প্রস্তুতি নেন গোপালপুরে যাওয়ার।

এরপর সেখান থেকে ভূঞাপুর হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৭টায় আবার যাত্রা শুরু করেন গোপালপুরের উদ্দেশ্যে। বেলা ১২টায় তিনি গোপালপুরের পাথালিয়া গ্রামে ২০১ গম্বুজ মসজিদে পৌঁছান। দুপুরের নামাজ শেষে তিনি ওই এলাকা ঘুরে দেখে। দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দেয়ার পথে নতুন নতুন অনেক জায়গা দেখার সুযোগ হয়। এতে তার খুব ভালো লেগেছে । তাই পথে কোনো ক্লান্তি বোধ হয়নি বলেও জানান তিনি।

২০১ গম্বুজ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতার ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল করিম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে মসজিদে এসে দেখি এক ব্যক্তি সাইকেলযোগে ২০১ মসজিদে এসেছে। পরে তার সাথে কথা বললে, তিনি এই মসজিদে নামাজ পড়া ইচ্ছের বিষয়টি জানান। শুক্রবার দুপুরে জুমা’র নামাজ শেষে তিনি ধনবাড়ীর নবাববাড়ি মসজিদ দেখার উদ্দেশ্যে রওনা হন।

-এসআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ