কাজী আব্দুল্লাহ ।।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সৃষ্টি জগতের সবচেয়ে সম্মানিত মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন- সে কারণে তাঁর বান্দা হিসেবে প্রতিদিন বাধ্যতামূলক আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করতে হবে।
ইবাদতের অনেক মাধ্যমে রয়েছে, যার একটি হচ্ছে সালাত আদায়, আর সালাতের মধ্যে সর্বোত্তম ও সর্বোৎকৃষ্ট হচ্ছে তাহাজ্জুদ। ৫ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে তাহাজ্জুদের নামাজ নবী করিম সা:-এর ওপর ফরজ ছিল। তাই তিনি কখনো তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া থেকে বিরত হননি।
তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। আরবিতে ‘তাহাজ্জুদ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ রাত জাগরণ বা নিদ্রা ত্যাগ করে রাতে নামাজ পড়া।
পবিত্র মক্কা ও মদিনায় হারামাইন শরিফাইনে তাহাজ্জুদের সালাতের জন্য আজান দেয়া হয় এবং তা অতি গুরুত্বের সাথে আদায় করা হয়। পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ হয়েছে, যারা শেষ রাতে ইবাদত ও প্রার্থনা করেন তাদের প্রশংসাস্বরূপ আল্লাহ কিয়ামত দিবসে বলবেন ‘তারা রাতের সামান্য অংশই নিদ্রায় অতিবাহিত করে এবং রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে।
মধ্যরাতে লোকেরা গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন থাকে। সুবহে সাদিক হয়ে গেলে এ নামাজ আর পড়া যায় না। যদি রাত দ্বিপ্রহরের পর নিদ্রা থেকে জাগ্রত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে এশার নামাজের পর এবং বিতরের আগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া অবকাশ রয়েছে। অবশ্য তাহাজ্জুদ নামাজ রাত দ্বিপ্রহরের আগে পড়লে সওয়াব কম পাওয়া যায়। রাতের শেষাংশে পড়লে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়।
রাসূল সা:-কে সম্বোধন করে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক বলেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশ তাহাজ্জুদ পড়তে থাকুন। এ আপনার এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায়, আপনার প্রভু আপনাকে মাকামে মাহমুদে অধিষ্ঠিত করবেন।
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ ওই ব্যক্তির ওপর রহমত নাজিল করেন, যিনি রাতে নিদ্রা থেকে জেগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন এবং তার স্ত্রীকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে দেন। অতঃপর তিনি (তার স্ত্রী) তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। এমনকি যদি তিনি (স্ত্রী) ঘুম থেকে জাগ্রত হতে না চান, তাহলে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেন।’ -আবু দাউদ ও নাসাঈ
তাহাজ্জুদ নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। এ জন্য হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কখনো বিনা ওজরে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ছাড়তেন না। সাহাবিরাও নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন।
উপরিউক্ত কুরআন ও হাদিসের বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে, সালাতগুলোর মধ্যে তাহাজ্জুদ অতি মর্যাদাকর সালাত। এই সালাত প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীরই আদায় করা উচিত। আল্লাহ আমাদের তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন আমীন।
-এটি