আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মসজিদের স্থাবর সম্পত্তির আইনি সুরক্ষা দিয়ে এবং মসজিদের কোন সম্পত্তি দখল করলে অনধিক দুই বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড প্রধানের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ বিল, ২০২৩’।
বিলে সরকারের ইসলামিফ ফাউন্ডেশনের বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে মসজিদের জন্য বা সম্পত্তি অর্জন, ধারণ ও হস্তান্তরের বিধান রাখা হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২১তম অধিবেশনে আজ বৈঠকে সংসদে স্থিরিকৃত আকারে বিলটি পাস হয়। বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
এর আগে বিলটির ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। তবে কতিপয় সংশোধনী সংসদে গ্রহীত হয়।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক সরকারের আমলে জারিকৃত ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৬’ রহিত করে গত বছরের ৬ নভেম্বর বাংলা ভাষায় ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ বিলটি সংসদে আনা হয়।
বিলে মসজিদের নামে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার আন্দরকিল্লা মৌজার দাগ ও খতিয়ান নম্বরসহ ২.৪২৭৬ একর জমির বিবরণসহ মসজিদের সম্পত্তির আইনি সুরক্ষা বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আদালতের রায়, ডিক্রি, আদেশ অথবা ঘোষণায়, যা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সরকার, কোন কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তা কর্তৃক তফশিলে বর্ণিত স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ এবং এতদুদ্দেশ্যে জারিকৃত সকল নোটিশ, বিজ্ঞপ্তি, আদেশ বা নিস্পন্ন কার্য বৈধ বলে গণ্য হবে। এ বিষয়ে কোন আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে না।
বিলে সরকারের পক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার বিধান রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ নামে একটি তহবিলের মাধ্যমে সরকারি, ব্যক্তি বা সংস্থার দান-অনুদানসহ মসজিদের সম্পত্তি হতে প্রাপ্ত আয় জমা থাকবে। তহবিলের অর্থ ফাউন্ডেশনের অনুমোদনক্রমে তফসিলি ব্যাংকে জমা থাকবে। ফাউন্ডেশন মসজিদের ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন কাজে তহবিলের অর্থ ব্যয় করতে পারবে। এই আইনের অধীনে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল ফৌজদারি কার্যবিধির ক্রিমিনাল প্রসিডিউর অনুযায়ী পরিচালিত হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতি বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরে অবস্থিত নান্দনিক স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ ১৬৬৭ সালে মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে এ মসজিদ নির্মাণ করা হয়। আন্দোলনের মুখে ব্রিটিশ সরকার ইবাদতের জন্য মসজিদটি ছেড়ে দেয়। ১৮৫৫ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে এখানে নামাজ আদায় শুরু হয়। ১৮৫৭ সালে এ মসজিদের সব সম্পত্তি খাঁন বাহাদরি হামিদুল্লাহ খাঁনের ওয়াকফ এস্টেটের অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে আদালতের রায়ে ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ ওয়াকফ ট্রাস্টে রূপান্তিরিত হয়। ‘চট্টগ্রাম শাহী জামে মসজিদ অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৬’ জারি করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপর ন্যাস্ত করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলাম প্রচার-প্রসারের লক্ষে ১৯৭৫ সালে এ্যাক্ট প্রণয়ন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। আইনটি পাস হলে অত্র অঞ্চলে ইসলাম প্রচার ও প্রসারে মসজিদটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
কেএল/