আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আপনার সকাল শুরু করুন মহান রবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এর মাধ্যমে এক প্রশান্ত মন নিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ আজকের দিনটি আপনি পেয়েছেন এবং আপনার শরীর এর সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কাজ করছে। আল্লাহ আপনাকে আরেকটি দিন দেখার সৌভাগ্য দান করেছেন । আরো একটি দিন পাচ্ছেণ আল্লাহর সামনে মাথা নত করার , ইবাদাত করার। দিনটি এভাবেও শুরু হতে পারতো যে আপনাদের মাথা ব্যাথা করছে , বা শরীর এর কোন অংশ কাজ করছে না। এক্ষেত্রে আপনি একটি সুন্দর দিন কাটাতে পারতেন না। কিন্ত যদি আপনার শরীর ভালো থাকে তাহলে অবনত মস্তকে রাব্বুল আলামিন এর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করুন যে আপনি আজকেও ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা আমাদের জীবনে আর বেশি রহমত নিয়ে আসে।যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরানুল কারীম এ বলেছেন-
“ আর স্মরণ করো, তোমাদের রব এই বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, যদি কৃতজ্ঞ থাকো তাহলে আমি তোমাদের আরো বেশী দেবো…… “
( সূরা ইবরাহীম,আয়াত – ০৭)
নিয়ত করুন সম্পূর্ন দিনটি আল্লাহর আনুগত্য করে পার করবেন। চেষ্টা করুন নিজেকে সকল ধরনের পাপ কাজ বা এমন সব কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে যা কিনা আপনার সাথে আল্লাহর সম্পর্ক নষ্ট করে দিতে পারে। নিজের জন্য দোয়া করুন। সেই মহান রবের সামনে নিজের জন্য প্রার্থনা করুন যেন তিনি আপনাকে সেই যোগ্যতা দান করেন যাতে করে আপনি আরো বেশি তাঁর ইবাদাত করতে পারেন।
নামাজকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিন। দিনের সকল ইবাদতকে গুরুত্ব দিন। যখন আমরা আরামদায়ক বিছানায় ঘুমে আসক্ত ঠিক তখন শুধুমাত্র আল্লাহকে ভালবেসে ঘুম ভেঙ্গে ইবাদাত করা সব থেকে বেশি সুন্দর ইবাদাত। সুতরাং তাহাজ্জুদকে নিজের সঙ্গী বানান। আল্লাহর প্রতি নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করার সবথেকে সুন্দর পথ হচ্ছে রাতের নির্জনতায় ঘুম ভেঙ্গে রবের সামনে দাঁড়ানো।
এটি এমন একটি সময় যে সময়ের বরকত এর কথা বলে শেষ করা যাবে না। রাতের এই নির্জনতায় রবের সামনে দাঁড়ানো আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাহাজ্জুদে তাঁর সামনে দাড়ানোর বান্দার একদম কাছে চলে আসেন এবং তাকে তাঁর রহমত এর বারিধারায় সিক্ত করেন। তাই আমাদের সবার উচিত এই রহমত যেন হাত থেকে ছুটে না যায় সেই চেষ্টা করা। ফজর এর ওয়াক্ত এর মাত্র ২০ মিনিট আগে উঠেও যেন এ রহমত আমাদের হাতে থাকে সেই চেষ্টা করা।
যদি আপনার ঘরে ছোট বাচ্চা থাকে তাহলে হয়তো অনেক সময় আপনি শান্তভাবে একান্ত মনোজোগ সহকারে নামাজ আদায় করতে পারেন না। তাই এই ফজর হচ্ছে আপনার জন্য উপযুক্ত সময় যখন আপনি আপনার রবের সান্নিধ্য পেতে পারেন মনভরে।
সুতরাং , এই সময়ের সদ্বব্যবহার করে আপনি আমি আমাদের রবের আরো কাছে চলে যেতে পারি। মন প্রাণ উজার করে নিজেকে সপে দেয়া যাবে নামাজে।
রাসূলে কারীম (সা) বলেছেনঃ
“যে ব্যাক্তি ফজর এবং আসর এর নামাজ আদায় করলো সে খনো জাহান্নামে যাবে না। “( সহীহ মুসলিম)
যতটুকু সম্ভব দিনের এই সময়টিতে সর্বোচ্চ কোরআন পড়ার চেষ্টা করুন। সেই সাথে যতক্ষন পারা যায় জিকির করা। কেননা দিনের শুরুতে এই কোরআন তেলাওয়াত আপনার সম্পূর্ণ দিনটিকে রহমত দিয়ে ভরিয়ে রাখবে,
রাসূলে কারীম (সা) বলেছেনঃ
“ যে ব্যাক্তি তাঁর দিনের শুরু করলো শুরা ইয়াসীন এর মাধ্যমে , আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর সেই দিনের প্রয়োজনীয়তা পূর্ন করে দিবেন।“ ( মিশকাত)
একজন মুসলিম এর জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ
“নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র ও পবিত্রতা ভালবাসেন, পরিচ্ছন্ন ও পরিচ্ছন্নতা পছন্দ করেন, মহৎ এবং মহৎ কাজ ভালোবাসেন,উদার এবং উদারতা ভালবাসেন। সুতরাং, আপনার আপনার বাড়ি পরিষ্কার রাখুন এবং ইহুদীদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ন কিছু রাখবেন না " (তিরমিযী)
ঘর গুছানোর এই কাজগুলি আমাদের নিত্যদিনকার কাজ। তাহলে চলুন না এই কাজগুলোকেই আমাদের ইবাদাত এ পরিনত করি যা থেকে আমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর কাছ থেকে সওয়াব পাবো ইন শা আল্লাহ। আমাদের শুধু এই নিয়ত করা দরকার আল্লাহ রাব্বুল লামিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্তা পছন্দ করেন তাই আমরা এই কাজগুলো করছি।
“একইভাবে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং আপনার পরিবারকে সুন্দর একটি পরিবেশ দেওয়ার জন্য নিজের ঘরকে সুন্দর করে তোলাও একটি ইবাদাত। যেহেতু আল্লাহ সুন্দর এবং সৌন্দর্যকে ভালবাসেন। [মুসলিম] “
রান্না করতে আমাদের সবাইকে বেশ শ্রম দিতে হয়। কিন্তু আল্লাহকে স্মরণ করে এই রান্না করলে এটাও আমাদের ইবাদাত এ পরিনত হতে পারে। আমাদের শরীর আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর তরফ থেকে দেয়া এক নেয়ামত এবং এর যত্ন নেয়া আমদের দায়িত্ব। তাই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের জন্য আল- রাজ্জাক। তিনি আমাদের রিজিকদাতা ।তাই যখনই আমরা ফ্রিজ খুলবো আমাদের রিজিক এর জন্য সেই মহান আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করবো। পরিবারের সাথে খাবার খাওয়ার সময় আল -ওয়াদুদ( আল্লাহ প্রেমময়) এটা স্মরণ করে খাবার শুরু করুন। এতে সবার মাঝে ভালোবসা বাড়বে ইন শা আল্লাহ। ভাইবোনদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হ্রাস করার এটি একটি দুর্দান্ত উপায়!
কেএল/