সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

নতুন বছর কাটাতে যেভাবে আমলি রুটিন করা উচিত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা মাকসুদুর রহমান সাইমন।। আমলি জীবন যাপন করা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। আল্লাহর ইবাদতের মাধ্যমে জীবন যাপন করাই মানুষের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ। সেজন্য মানুষের উচিত নতুন বর্ষে আমলি জীবন যাপনের জন্য নিজেদের প্রস্তুতি করা।

প্রথম ডায়েরিটা জিকির ও দরুদের জন্য। দ্বিতীয় ডায়েরিটা নামাজের -কোরআন, মিথ্যা কথা বলার হিসাবের জন্য। যে আমলগুলি আমাদের করতে হবে তা হলো, জিকির,দরুদ, নামাজ, কোরআন, মিথ্যা কথা বলা পরিহার।

প্রথমতঃ-- জিকির।

জিকিরগুলি যেগুলি করতে হবে তা হলো- সুবহান আল্লাহ-১০০বার। আলহামদুলিল্লাহ -১০০বার। আল্লাহু আকবার-১০০বার। সলা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-১০০বার।

সুবহানআল্লাহ ওয়ালহামদুলিল্লাহ ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহুআকবার-১০০বার। সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম-১০০বার। লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ-১০০বার। লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নিকুনতুম মিনাজ জোয়ালিমিন-১০০বার।

আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার-১০০বার। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল জান্নাত-১০০বার। উপরের প্রত্যেকটি দোয়া ও জিকিরগুলি ১০০বার করে পড়ে আপনাকে যে জিকিরটা সারাদিনের জন্য অন্তরে গেঁথে নিতে হবে সেটা হলো --আস্তাগফিরুল্লাহ।

আস্তাগফিরুল্লাহ কেন বেশি পড়বেন জানেন? রাসুলুল্লাহ সা. এরশাদ করেছেন, ‘সু-সংবাদ তার জন্য, যার আমলনামায় অধিক ইস্তেগফার পাওয়া যাবে।’ (ইবনে মাজাহ হাদিস নং ৩৮০৮)।

ইস্তেগফারের রয়েছে বহুমুখী ফজিলত। যথাঃ- ইস্তেগফার নির্ভেজাল একটি ইবাদত। গোনাহ মাপের মাধ্যম। বৃষ্টি বর্ষণের কারণ।
- সম্পদ ও সন্তান অর্জনে সহায়ক। - জান্নাতে প্রবেশের সিঁড়ি। - সার্বিক শক্তি অর্জনের মাধ্যম।

কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার কওম, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তেগফার করো অতঃপর তার কাছে তওবা করো, তাহলে তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাবেন এবং তোমাদের শক্তির সঙ্গে আরও শক্তি বৃদ্ধি করবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে বিমুখ হয়ো না।’ (সূরা হুদ, আয়াত ৫২)

- উত্তম ভোগ-উপকরণ অর্জনের চাবিকাঠি। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তেগফার করো। তারপর তার কাছে ফিরে যাও, (তাহলে) তিনি তোমাদের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত উত্তম ভোগ-উপকরণ দেবেন।’ (সূরা হুদ, আয়াত ৩)

- বালা-মসিবত দূর করে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাদের আজাব দানকারী নন এমতাবস্থায় যে, তারা ইস্তেগফার করছে।’ (সূরা আনফাল: আয়াত ৩৩)

সারাদিন কতবার আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করেছেন তা ডায়েরি মধ্য লিখে রাখবেন।

দ্বিতীয়তঃ-----দরুদশরীফ। আমরা প্রতিদিন দরুদশরীফ কতবার পড়েছি তা ডায়েরি মধ্যে লিখে রাখবো। সবচেয়ে ছোট দরুদ হলো সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

দরুদ শরীফ কেন পড়বো?

* রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘ঐ ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটে থাকবে, যে আমার উপর বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করে।’ (তিরমিযী হাদীস নং-৪৮৩, শু‘আবুল ঈমান হাদীস নং-১৪৬২, ২০৫৬)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘আল্লাহ তা‘আলা বহু সংখ্যক ফেরেশতা এ কাজের জন্য নিয়োজিত রেখেছেন যে, তারা জমীনে বিচরণ করতে থাকবে এবং আমার উম্মতের যে ব্যক্তি আমার উপর দুরূদ ও সালাম পাঠাবে (তারা) তা আমার নিকট পৌঁছে দিবে।’ (নাসাঈ হাদীস নং-১২৮২/ শু‘আবুল ঈমান বয়ড়া হাদীস নং-১৪৮০)

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, ফেরেশতাগণ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দরবারে তার নাম উল্লেখ করে দুরূদ পেশ করে থাকে। (শু‘আবুল ঈমান বয়ড়া হাদীস নং-১৪৮২)

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি সকালে আমার উপর দশবার দুরূদ পড়বে এবং সন্ধ্যায় দশবার দুরূদ পড়বে কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য সুপারিশ করব। (ত্ববারানী আউসাত হাদীস নং-৫২৩, মাজাউয যাওয়ায়িদ ১০: ১২০, নাসায়ী সুনানে কুবরা, হাদীস:৯৮৯০)

তৃতীয়তঃ---নামাজ।

প্রথমতঃ লম্বা খাতার মধ্যে নামাজের নামগুলি লিখবে যেমন--

ফজর-যোহর, আসর-মাগরিব, এশা-তাহাজ্জুদ, ইশরাক-চাশতের-যাওয়াল, আওয়াবীন-হাজত-তাওবা-ইস্তেখারা।

জানুয়ারী ১তারিখ থেকে যেহেতু আমল শুরু করবেন তাহলে ডায়েরির মধ্যে- ১তারিখে যে যে নামাজগুলি পড়েছেন তা দাগ দিয়ে ১লিখে রাখবেন, তারপর ২তারিখে যে নামাজগুলি পড়েছেন ২লিখবেন। যেগুলি পড়বেন না সে তারিখের জায়গা × ক্রস চিন্হ দিবেন। এইভাবে লিখবেন।

চতুর্থঃ--কোরআন খতম। জানুয়ারী প্রথম থেকে কোরআন খতম দিতে চেষ্ট করবেন। প্রতিদিন যা পারেন পড়ে নিবেন। বছর শেষে আপনি কয়টি খতম দিলেন তা ডায়রির মধ্যে লিখে রাখবেন।

৫মঃ---মিথ্যা কথা পরিহার। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ভেবে নিবেন সারাদিন কয়টি মিথ্যা কথা বলছেন তা ডায়রির মধ্যে লিখে রাখবেন। লিখা শেষ হলে আল্লাহর কাছে তাওবা করে ঘুমিয়ে যাবেন।

তার পর ২০২২সাল শেষ হলে ১বছর পর হিসাব করে দেখবেন, আপনি কয় ওয়াক্ত নামাজ পড়েছেন ও পড়েননি, কত লাখ জিকির ও দরুদ পড়েছেন তা হিসাব করবেন। কয়টি খতম দিয়েছেন তা দেখবেন। ১বছরে কয়টি মিথ্যা বলছেন তা দেখবেন।মরনের আগে নিজের হিসাব নিজেই করুন। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে আমল করার তৈফিক দান করুক।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ