শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

দুনিয়ার সঙ্গে কেমন ছিলো রাসুল সা. এর সম্পর্ক?: মুফতি তাকি উসমানি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক:  হযরত আয়শা রা. ইরশাদ করেন- রাসূল সা. যখন শয্যা গ্রহণ করতেন তখন তার পবিত্র দেহ মুবারকে চাটায়ের দাগ বসে যেত। তাই একদিন আমি বিছানার চাদরটি ডাবল করে বিছালাম যেন নবীজীর সা. এর গায়ে দাগ না পড়ে এবং তিনি যেন আরাম পান। শােয়ার সময় রাসূল সা. আমাকে বললেন, হে আয়শা ! চাদর ডাবল করােনা। পূর্বের ন্যায় থাকতে দাও।

আরেক রেওয়ায়েতে আছে- একদা হযরত আয়শা রা. শখ করে ঘরের দেয়ালে ছবি অংকিত একটি চাদর টানালেন। এতে রাসূল সা. অনেক বেশি অসন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন, তুমি যতক্ষণ এ পর্দা না সরাবে ততক্ষণ আমি ঘরে প্রবেশ করব না।

এরপর আরেক দিন তিনি আরেকটি চাদর টানালেন (তাতে ছবি ছিল না)। তবুও রাসূল সা. বললেন, হে আয়শা! অর্থ, আমি দুনিয়া দিয়ে কি করব? আমার দৃষ্টান্ত তাে সে যাত্রীর ন্যায় যে, স্বল্প সময়ের জন্য কোন বৃক্ষের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়। এরপর আবার স্বীয় গন্তব্যের দিকে ছুটে চলে।

বস্তুত প্রিয়নবী সা. উম্মতকে দুনিয়াবী কাজ কর্ম হতে নিষেধ করেন নি, বরং এ শিক্ষা দিয়েছেন যে, এই নশ্বর পৃথিবীর পেছনে বেশী সময় ব্যয় করাে না। আখেরাতের প্রস্তুতিকেই প্রাধান্য দাও।

রাসূল সা. ইরশাদ করেন  اعمل للدنيا بقدر بقائك فيها واعمل للاخرة بقدر بقائك فيها অর্থ, দুনিয়ার জন্য সে পরিমাণ মেহনত কর যে পরিমাণ সময় তােমাকে এখানে থাকতে হবে। আর আখেরাতের জন্য সে পরিমাণ চেষ্টা এবং সময় ব্যয় কর যে পরিমাণ সময় তোমাকে সেখানে থাকতে হবে। আখেরাতে আমাদেরকে থাকতে হবে সদাসর্বদাএবং অনাদি-অনন্ত কাল।

তাই তার জন্য মেহনতও করতে হবে সীমাহীন। আর দুনিয়াতে আমরা থাকবাে অনুর্ধ্ব ৬০-৭০ বছর। আর এরও কোন গ্যারান্টি নেই । তাই এর জন্য সামান্যতম মেহনতই যথেষ্ট। এটাই প্রিয় নবীর সা. এর শিক্ষা। অথচ আজ আমরা চব্বিশটি ঘন্টাই শুধু দুনিয়া-দুনিয়া করে মরছি। কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জন্য সর্বোচ্চ আধা ঘন্টা সময় ব্যয় করতেও আমাদের শত আপত্তি, বাধা, দ্বিধা ও নানা বাহানা।

সারা দিন শুধু মসজিদে বা খানকায় বসে থাকার নাম আখেরাতের কাজ করা নয়। দুনিয়াতে মানুষের শত জরুরত আছে। যদি এ জরুরতগুলােকে সাওয়াবের নিয়তে আদায় করা হয় তাহলে এক দিকে যেমন পার্থিব চাহিদা পূরণ হবে তেমনি অপর দিকে পরকালের সঞ্চয়ও হয়ে যাবে।

যেমনঃ পানাহারের সময় যদি সত্যিকারের নিয়ত করা হয় যে, এই পানাহার দ্বারা অর্জিত শক্তি দিয়ে আমি আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করবাের ব্যবসা-বাণিজ্য করার সময় যদি নিয়ত করে যে, আল্লাহর রাসূল ও জীবিকার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন। তাই আমিও করছি। এভাবে প্রতিটি কাজই যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়তে রাসূলের সুন্নাত তরিকা অনুযায়ী হয় তাহলে সবই ইবাদতে পরিণত হবে এবং এর জন্য সাওয়াবও পাওয়া যাবে।

এ ছাড়াও মানুষের সাধারণত: হাতে বা পায়ে কাজ থাকে। মুখ প্রায় সকলেরই অবসর থাকে। বস, কাজ করার ফাকে ফাকে মুখে বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা যায়। ফলে বিশুদ্ধ নিয়তের সাওয়াব, সুন্নাত তরিকায় কাজ করার সাওয়াব এবং মুখে যিকির করার সাওয়াব সব মিলিয়ে দেখা যাবে আখেরাতের বিরাট পুঁজি হয়ে গেছে। আর এ ভাবেই আল্লাহ তায়ালা এ উম্মতকে জান্নাত দান করবেন। নতুবা মাত্র ৬০-৭০ বৎসরের হায়াতে এত বিরাট গাঠুরি বােঝাই করা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বেশি বেশি নেক কাজে লেগে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

-এটি/ কাওসার আইয়ুব


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ