আহমাদ ইজাজ: সব নবী, সব উম্মতের আগে বিশ্বনবী মহানবী মুহাম্মদ (সা.) জান্নাতে প্রবেশ করবেন। তিনি জান্নাত উদ্বোধন করবেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি জান্নাতের দরজায় এসে দরজা খুলতে বলব। তখন দারোয়ান বলবে, কে তুমি? আমি বলব, মুহাম্মদ।
তখন সে বলবে, হ্যাঁ, আপনার ব্যাপারে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন আপনার আগে কারো জন্য জান্নাতের দরজা না খুলি। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯৭)
রাসুল (সা.) শুধু নিজেই প্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন না; বরং সঙ্গে নিজের উম্মতকেও নেবেন। পৃথিবীতে রাসুল (সা.)-এর উম্মত সর্বশেষ হলেও তাঁরাই সবার আগে জান্নাতে যাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করবে। এটি উম্মতে মুহাম্মদির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘দুনিয়াতে সর্বশেষে এসেও আমরাই অগ্রণী হবো। মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম আমরাই জান্নাতে প্রবেশ করব। অন্যরা আমাদের কিতাব পেয়েছে। আর আমরা সবার পরে কিতাব পেয়েছি। ’ (বুখারি, হাদিস : ৮৯৬; মুসলিম, হাদিস : ৮৫৫)
উম্মতে মুহাম্মদির মধ্যে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন আবু বকর (রা.)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘জিবরাইল এসে আমার হাত ধরে জান্নাতের দরজা দেখাল, যে দরজা দিয়ে আমার উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে। তখন আবু বকর (রা.) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমিও আপনার সঙ্গে থাকব যেন জান্নাতের দরজা দেখতে পারি। তখন রাসুল (সা.) বলেন, ‘হে আবু বকর, শুনে রাখো, আমার উম্মতের মধ্যে সর্বপ্রথম তুমি জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৫২)
আর জান্নাত উদ্বোধন হবে দরিদ্র মুহাজিরদের মাধ্যমে। সর্বপ্রথম যে দলটি জান্নাতে প্রবেশ করবে দুনিয়ায় তাদের অবস্থা সম্পর্কে রাসুল (সা.) বর্ণনা করেছেন। আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা কি জানো, আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বপ্রথম জান্নাতে কারা প্রবেশ করবে?’ সবাই বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে দারিদ্র্য মুহাজিররা। যাদের মাধ্যমে সীমান্তের প্রহরা নিশ্চিত করা হয়। তাদের মাধ্যমে যেকোনো বিপদ-আপদ দূর করা হয়। এমনভাবে তাদের মৃত্যু হয় যে আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো তাদের অন্তরের ভেতরেই রয়ে যায়। তারা তা পূরণ করতে পারে না। আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের বলবেন, তাদের কাছে যাও, তাদের সালাম প্রদান করো। ফেরেশতারা বলবে, হে আমাদের রব, আমরা তো আপনার আসমানের বাসিন্দা, আপনার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীবন। আপনি আমাদের বলছেন, তাদের কাছে গিয়ে সালাম প্রদান করি? আল্লাহ বলবেন, তারা আমার বান্দা, আমার ইবাদত করেছে, আমার সঙ্গে কাউকে শরিক করেনি। তাদের এমন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে যে তাদের প্রয়োজনের কথা তার মনে রয়ে গেছে। তা আর পূরণের সামর্থ্য হয়নি। অতঃপর ফেরেশতারা তাদের কাছে যাবে। সব দরজা দিয়ে প্রবেশ করে তাদের সালাম জানাবে। বলবে, ধৈর্য ধারণের ফল হিসেবে তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক, তোমাদের শেষ ঠিকানা কতই উত্তম। ’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৬৫৭০)
কেএল/