আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, ‘একজন মুমিন কৃতদাস একজন (স্বাধীন) মুশরিকের চেয়ে উত্তম।’ (সূরা বাকারা : ২২১)।ইমান-আমলের ওপর ভিত্তি করেই একজন মানুষ পরকালে কাঙ্ক্ষিত মর্যাদা লাভ করবে। মুমিনের যথাযথ গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্য অর্জন না করে শুধু জন্মসূত্রে কিংবা কালিমা পরে ইমান গ্রহণ করলেই প্রকৃত মুমিন হওয়া যায় না।
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে প্রকৃত মুমিনের অনেক গুণাবলি উল্লেখ করেছেন। এখানে সূরা আনফালে বর্ণিত পাঁচটি গুণ উল্লেখ করা হলো,
‘প্রকৃত মুমিন তো তারাই, যাদের সামনে আল্লাহর নাম নেওয়া হলে, তাদের অন্তর কেঁপে ওঠে। আর যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতগুলো তেলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ইমান বেড়ে যায় এবং তারা আপন প্রতিপালকের প্রতি ভরসা রাখে। যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। তারাই হলো প্রকৃত মুমিন! তাদের জন্য রয়েছে আপন প্রতিপালকের নিকট মর্যাদা, ক্ষমা ও সম্মানজনক রুজি।’ (সূরা আনফাল : ২-৪)।
প্রথম গুণ: কুরআনের আয়াত শোনা মাত্রই অন্তর কেঁপে ওঠে অর্থাৎ তাদের অন্তর আল্লাহর মহত্ত্ব ও ভালোবাসায় ভরপুর, যার দাবি হলো তাঁর শ্রদ্ধা ও ভয়। আর রবকে যে ভয় করে তার জন্য রয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ। ইরশাদ হয়েছে-‘পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দণ্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং প্রবৃত্তির তাড়না থেকে নিজেকে নিভৃত রেখেছে তার ঠিকানা হবে জান্নাত।’ (সূরা নাজিয়াত : ৪০-৪১)।
দ্বিতীয় গুণ: ইমানের উন্নতি অর্থাৎ কুরআনের আয়াত শোনামাত্রই তাদের ইমান বৃদ্ধি পায়; কারণ তারা গভীর শ্রদ্ধা ও একাগ্রতার সঙ্গে কুরআন শ্রবণ করে। ফলে সেটি অন্তরে রেখাপাত করে।
তৃতীয় গুণ: মহান রবের ওপর ভরসা ও পূর্ণ আস্থা অর্জন অর্থাৎ যারা আপন রব ছাড়া কারও ওপর আস্থাশীল ও আশাবাদী নয়। তাকে পাওয়াই যাদের একমাত্র মুখ্য উদ্দেশ্য এবং যারা তার কাছ থেকে সবকিছু প্রার্থনা করে মঞ্জুর করিয়ে নেয়।
চতুর্থ গুণ: নামাজ কায়েম করা। নামাজ কায়েম মানে ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নতের প্রতি যত্ন রেখে যথাসময়ে নামাজের পাবন্দি করা। (তাফসিরে জালালাইন : ১৪৭)।
ইমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। প্রিয়নবি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি যথাযথভাবে পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে এবং অবহেলা করে এর কোনোটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন। আর যে ব্যক্তি তা ঠিকমতো পালন করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দেবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন’। (সুনানে আবু দাউদ : ১৪২০)।
পঞ্চম গুণ: আল্লাহর রাস্তায় দান করা। জাকাত-ফিতরা, নফল সদকা, পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় প্রভৃতি সবকিছুই দানের অন্তর্ভুক্ত। তবে আল্লাহর কাছে তার সৃষ্টিকুলের জন্য উপকারী ব্যয়ই সর্বাধিক পছন্দনীয়।
আল্লাহ আমাদের প্রকৃত মুমিন হওয়ার তাওফিক দান করুন।
-এসআর