আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ২০২৩ সালের শীর্ষ প্রভাবশালী পাঁচ শ মুসলিম ব্যক্তিত্বের তালিকা প্রকাশ করেছে জর্দানের আম্মানভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ‘দ্য রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার’।
রবিবার (৩০ অক্টোবর) প্রকাশিত তালিকায় বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ভারতের জমিয়তে উলামা-ই-হিন্দের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানি এবং বর্ষসেরা নারী হিসেবে খ্যাতিমান অনুবাদক আয়েশা আবদুর রহমান বিউলির নাম ঘোষণা করা হয়। মাওলানা মাহমুদ মাদানি একজন ভারতীয় ইসলামী স্কলার, রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী।
এমন সম্মাননায় নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন মাওলানা মাহমুদ মাদানি। তিনি ভবিষ্যতে ভারতীয় মুসলিম ও মানবসমাজের সেবায় নিজের সর্বোচ্চটুকু ব্যয় করবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এছাড়া এ তালিকায় প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিত্বদের শীর্ষে রয়েছেন যথাক্রমে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ, ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমিনি, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হাম্মাদ, রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান, জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ এবং মুফতি তকি উসমানি।
মাওলানা মাহমুদ মাদানি ১৯৬৪ সালে উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। ভারতের প্রাচীনতম সর্ববৃহৎ সংগঠন জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দের (জেইউএইচ) একাংশের সভাপতি।
সব সময়ই বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ও আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার আপ্রাণ চেষ্টা তাঁর অনন্য বৈশিষ্ট্য। ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রাজ্যসভায় রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি) দলের সদস্য হিসেবে ২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
ভারতে মুসলিম জনসাধারণের জন্য শিক্ষা ও আইনি অধিকার নিশ্চিত করা ও সমাজসেবায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের প্রাণপুরুষ সাইয়েদ হুসাইন আহমদ মাদানি (রহ.)-এর দৌহিত্র ও সাইয়্যিদ আসআদ মাদানি (রহ.)-এর ছেলে।
দ্য মুসলিম ফাইভ হান্ড্রেড ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে,মাওলানা মাহমুদ মাদানি দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দের (জেইউএইচ) সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন। এ সংগঠনের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানিয়ে ইসলামফোবিয়ার মতো বিতর্কিত বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা পালন করে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করেন তিনি। জমিয়তে দায়িত্ব পালনকালের দীর্ঘ দুই দশকে গুজরাট, বিহার, দিল্লি, তামিলনাড়ু, কাশ্মীর, কেরালা, আসাম, ইউপি, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ইত্যাদি স্থানে ট্র্যাজেডির শিকার ব্যক্তিদের নানাভাবে সহাগিতা করেছেন। তা ছাড়া সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার আন্দোলনের সমর্থনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বহুত্ববাদনীতির জন্য তার উপস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তার তত্ত্বাবধানে আধুনিক সময়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তার সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত হাজার হাজার মক্তব ও মাদরাসায় পড়ুয়া লাখ লাখ শিশু শিক্ষার্থীর জন্য বিশেষায়িত শিক্ষা কারিকুলামের ব্যবস্থা করা হয়। তা ছাড়া দারুল উলুমের শিক্ষা কারিকুলামকে কিছুটা উন্নত করে একটি প্রকল্প শুরু করেন, যার মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক স্তরে (১০ম শ্রেণি) উত্তীর্ণ হিসেবে স্বীকৃত দেওয়া হয়। তরুণদের মধ্যে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নে জমিয়তে উলামা-ই-হিন্দের অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে জমিয়ত ইয়ুথ ক্লাব চালু করেন। বিশ্বখ্যাত ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডসের তত্ত্বাবধানে সমাজে তরুণদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রদান করা হয়।
সূত্র : দ্য মুসলিম ফাইভ হান্ড্রেড।
-এসআর