আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: তুরস্কের ঐতিহাসিক ও প্রাচীন নগরী দিয়ারবাকার থেকে ৫২ কিলোমিটার দূরের নদীতীরের পাহাড়ি এই অঞ্চলের নাম এগেইল। পাশেই ইতিহাস বিখ্যাত নদী দজলা, তুর্কি ভাষায় দিজলা। প্রায় ২৭ বছর আগে দজলার তীরবর্তী বাঁধ ভেঙে গেলে পয়গম্বর ইয়াসাআ আ. ও জুলকিফল আ. এর কবরের দেখা মেলে। পরে চার কিলোমিটার দূরে নতুন করে তাঁদের দাফন করা হয়।
ইয়াসাআ ও জুলকিফল আ. ছিলেন বনি ইসরাঈলের দুজন বিখ্যাত নবী। পবিত্র কোরআনে যেসব নবীর আলোচনা এসেছে ইয়াসাআ ও জুলকিফল আ. তাঁদের অন্যতম।
ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তুমি স্মরণ করো ইসমাইল, ইদরিস ও জুলকিফলের কথা। তারা প্রত্যেকেই ছিল ধৈর্যধারণকারী। আমি তাদেরকে আমার রহমতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম। তারা ছিল সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত। ’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৮৫-৮৬)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তুমি বর্ণনা করো ইসমাইল, ইয়াসাআ ও জুলকিফলের কথা। তারা সকলেই ছিল শ্রেষ্ঠদের অন্তর্ভুক্ত। ’ (সুরা : সোয়াদ, আয়াত : ৪৮)। বিখ্যাত এ দুই নবী সম্পর্কে আল্লামা ইবনে জারির তাবারি (রহ.) বর্ণনা করেন, নবী ইয়াসাআ বার্ধক্যে উপনীত হলে একজনকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এই উদ্দেশ্যে তাঁর সব সাথিকে একত্র করে বললেন, যার মধ্যে তিনটি গুণ বিদ্যমান থাকবে, তাকেই আমি আমার প্রতিনিধি নিযুক্ত করব। গুণ তিনটি হলো—১. সর্বদা রোজা পালনকারী, ২. যে আল্লাহর ইবাদতে রাত জাগে, ৩. যে কোনো অবস্থায় রাগান্বিত হয় না। এই ঘোষণা শোনার পর সমাবেশস্থল থেকে শুধু জুলকিফল (আ.) দাঁড়ালেন এবং তিনি তাঁকে নিজের প্রতিনিধি নিযুক্ত করেন। (তাফসিরে তাবারি)
বনি ইসরাঈলের নবী ইয়াসাআ আ. সম্পর্কে তাফসিরের কিতাবে পাওয়া যায় যে তিনি ছিলেন ইউসুফ (আ.)-এর প্রপৌত্র। আবার কেউ কেউ বলেন, তিনি ছিলেন ইলিয়াস (আ.)-এর চাচাতো ভাই এবং তাঁর নায়েব বা প্রতিনিধি। আর ইলিয়াস (আ.) সুলাইমান (আ.)-এর পরবর্তীকালে বনি ইসরাঈলের প্রতি প্রেরিত হয়েছিলেন। বনি ইসরাঈলের বিখ্যাত দুজন নবী ইয়াসাআ (আ.) ও জুলকিফল (আ.)-এর মাকবারা ইতিহাসের আলো ছড়াচ্ছে তুরস্কের প্রাচীন অঞ্চল এগেইলে। আল্লাহর অসীম মেহেরবানিতে লেখকও তাঁদের মাকবারায় হাজির হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছেন। সূত্র: ইকনা
-এসআর