আব্দুর রউফ আশরাফ: বিয়ে মহানবী সা. এর সুন্নত। বিয়ে মানবজীবনে পূর্ণতার সিঁড়ি। বিয়ে জীবনকে করে অর্থবহ। বিয়ের মাধ্যমে দায়িত্ব ও কর্তব্যকে দ্বিগুণ শক্তিশালী করে। বিয়েকে ইসলামের অলংকার বলা হয়েছে। বিয়ে শুধু আনন্দ উৎসবের নাম নয়। বিয়ে মানবজাতির জন্য ইবাদতও বটে। বিয়ের মাধ্যমে ঈমানের পূর্ণতা পায়।
ইসলামী তরিকায় বিয়েতে রয়েছে বিপুল আনন্দ বিনোদন। আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়ে বিয়ের আনন্দ ইহুদীদের কালচারে পরিণত হয়েছে। বিয়েতে থাকবে সুস্থ সংস্কৃতি।
গ্রাম অঞ্চলে বিয়ের কথা বলি, যেখানে বর্তমানে প্রতিটি বিয়েতে নোংরামি থাকে। বিয়ের সূচনা থেকে সমাপ্ত পর্যন্ত শরীয়ত বিরোধী কর্মকান্ড থাকে জড়িত।
বর কনে দেখবে, কনে বরকে দেখবে। দু'জনের পছন্দ মতে বিয়ে সংঘটিত হবে। বর-কনের সম্মতিতে বিয়েতে আবদ্ধ হবে। তবে আমরা বিয়েতে উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করছি। বিয়েতে মহানবী সা. যে পন্থা দেখিয়েছেন তা থেকে আমার সরে যাচ্ছি।
বরের দুলাভাই ও বন্ধুরা মিলে কনে পছন্দ করে। আর এদের পছন্দে বিয়েতে রাজি হয় বর। কনের বান্ধবীরা বরকে পছন্দ করে। এদের পছন্দে বিয়েতে সম্মতি প্রকাশ করে কনে। সত্যিই কুরুচিপূর্ণ আচরণ। পরিহার করবেন তো?
কনে বরের কাছে মহর চাইব। চুক্তি করবে এটাই শরিয়তের বিধান। কিন্তু বিপরীত আচরণ। বর কনের পক্ষের কাছে চুক্তি করে বিভিন্নভাবে টাকা চায়। যেটা আমাদের সমাজে ক্যাশ বলে থাকি। সত্যিই লজ্জাজনক, ভিক্ষা চাওয়া বন্ধ হবে?
বিয়ের দু'তিন দিন পূর্বে থেকেই শুরু হয় অসুস্থ আনন্দ। সংঘবদ্ধ হয়ে ভাটিয়ালি গীত। বাদ্য যন্ত্র নিয়ে নাচ গান ও রং নিয়ে ঢং ঢাং। রং দিয়ে রাঙ্গিয়ে দেয় একে অপরকে। অশ্লীল নোংরামি দাফন হোক।
ঢোল পিটিয়ে সাত ঘাটের পানি তুলে বর কনেকে গোসল করে আতুর করে দেয়। ঘর বন্দি করে। এটা আবার কোন নিয়ম।
বিয়ের দিনে কনের বাড়ীতে চুক্তি করে দেড়শ যাত্রী নিয়ে কনের বাড়ীতে যাওয়া হয়। সম্মানের মেহমান নয়, অসম্মানের মেহমান হয়।
বর ছুটে নারী পুরুষ নিয়ে শশুর বাড়ির পথে। সাউন্ড সিস্টেমের আওয়াজে তাল বেতালে নাচে হেলে পরে মহিলাদের গায়ে যুব সমাজ। মারাত্মক অশ্লীল ও বেহায়াপনা অগ্রহীত। বন্ধ হবে তো?
বিয়ের দিন কনের বাড়ি সজ্জিত করে কাগজ দিয়ে। আবারও নানা রং এর কাপড় দিয়ে চার ছয় তলা গেইট বাধেঁ। সেই গেইট দিয়ে জামাই বাবু প্রবেশ করবে, সুন্দর কথা। আবার জামাই সাহেবকে বাধাঁ দিয়ে আটক করে চেয়ার টেবিল দিয়ে, ইচ্ছামতে ডাকাতি করে শালা-শালীরা।
বর-কনের ইজাব কবুলে বিয়ে সংঘটিত। নিয়ম মোতাবেক স্বামী কনের পরিচয় লাভ করবে। একে অপরকে চিনবে। কিন্তু আমাদের সমাজে কিছুটা পরিবর্তন। জামাই বাবুকে শীতল পাটিতে বসায়ে কনের বাড়ীর এগানা বেগানা চৌদ্দগুষ্টিকে তখন জামাইর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
জামাই সাহেব! পায়ে ধরে সালাম করে আর টাকা গুনে। এভাবে পায়ে পরে সালাম করে টাকা উপার্জন করা বন্ধ করতে পারবেন?
যে বিয়েতে অপসাংস্কৃতি। বর্তমানে সেই বিয়েগুলো অকালে সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে। দাম্পত্য জীবন হয় সুখহীন। চাই শরীয়ত সম্মত বিয়ে। শরীয়ত মোতাবেক বিয়েগুলোতে রয়েছে পরম আনন্দ বিনোদন।
-এসআর