ওমর ফারুক ফেরদৌস:।। আনাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা সহজ কর, কঠিন করো না এবং মানুষকে সুসংবাদ দাও, তাদের মধ্যে ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টি করো না বা দূরে সরিয়ে দিও না। (সহিহ বুখারী ৬৯, সহিহ মুসলিম ৪৬২৬)
বুখারীর আরেকটি বর্ণনায় ‘বাশশিরু বা সুসংবাদ দাও’ এর জায়গায় এসেছে ‘সাককিনু’ অর্থাৎ মানুষের মনে প্রশান্তি-স্থিরতা সৃষ্টি করো, অশান্তি-বিতৃষ্ণা সৃষ্টি করো না। (সহিহ বুখারী, ৬১২৫)
মুমিন ও দায়ীর কাজ হলো মানুষের জন্য দীনকে যথাসম্ভব সহজ ও জীবনে বাস্তবায়ন যোগ্য করে উপস্থাপন করা, মানুষের মনে দীনের ব্যাপারে প্রশান্তি ও স্থীরতা সৃষ্টি করা। দীনের ব্যাপারে বিতৃষ্ণা সৃষ্টি করে দীন থেকে মানুষ দূরে সরিয়ে দেওয়া রসূল সা. কতৃক নিষিদ্ধ ও অন্যায় কাজ।
অনেক সময় আমাদের ফেসবুক একটিভিটি; কিছু কিছু পড়ে কিছু কিছু বলা ইত্যাদি মানুষের মধ্যে দীনের ব্যাপারে অশান্তি ও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তৈরি করে। আমাদের প্রত্যেকের ভেবে দেখা উচিত আমি কোনোভাবে দীনের ব্যাপারে বিভ্রান্তি বা অশান্তি সৃষ্টির কারণ হচ্ছি কি না, মানুষের দীন থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণ হচ্ছি কি না, একজন হেদায়াত প্রতাশী মানুষও যদি আমার কারণে আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরে যায়, সেজন্য আমাকে জবাবদিহি করতে হবে।
সময় ও কাল অনুযায়ী ফিকহের সংস্কার, ইসলামী ফিকহ নিয়ে নতুন গবেষণা কখনও বন্ধ ছিলো না, এখনও থেমে নাই। এই সময়ে সালাফীরা যেমন অতি-কট্টর একটা বয়ান হাজির করছে, এর বিপরীতে আরেকটা শক্তিশালী বয়ান কি দাঁড়াচ্ছে না? যাদের মতামত আপনার পছন্দ হয়, তাদের মতামত অনুসরণ করেন। সম্ভব হলে নিজে ফকীহ হয়ে যান এবং ফিকহি গবেষণা শুরু করেন। ফিকহ নবায়নের কাজ তো ফেসবুক পোস্টের না।
আবু হোরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রসূল সা. বলেন, নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ। কেউ দ্বীনের ক্ষেত্রে কঠোরতা অবলম্বন করলে সে অবশ্যই পরাভূত হবে। (অর্থাৎ এক সময় সে ক্লান্ত হয়ে দীনই ছেড়ে দেবে) কাজেই তোমরা সহজতা অবলম্বন কর, নিকটবর্তী থাকো, আশান্বিত থাকো এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের কিছু অংশে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা কর। (সহিহ বুখারী, ৩৯)
-এটি