সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

প্রচলিত ভুল: এটি হাদিস নয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মসজিদে বেশি কথা বললে ফিরিশতারা বলে
إذَا أَتَى الرَّجُلُ الْمَسْجِدَ فَأَكْثَرَ مِنْ الْكَلَامِ تَقُولُ لَهُ الْمَلَائِكَةُ: اُسْكُتْ يَا وَلِيّ اللهِ، فَإِنْ زَادَ تَقُولُ: اُسْكُتْ يَا بَغِيضَ اللهِ، فَإِنْ زَادَ تَقُولُ: اُسْكُتْ عَلَيْكَ لَعْنَةُ اللهِ.

কোনো ব্যক্তি যখন মসজিদে এসে বেশি কথা বলে তখন ফিরিশতারা বলে, হে আল্লাহর ওলী! চুপ কর। যদি আরো বেশি কথা বলে তখন বলে, হে আল্লাহর দুশমন! চুপ কর। তার পরও যদি সে ক্ষান্ত না হয় বলে, তোমার উপর আল্লাহর লানত, চুপ কর।

এটি লোকমুখে হাদীস হিসেবে প্রসিদ্ধ; কিন্তু এটি কোনো হাদীস নয়, কোনো হাদীসের ভাষ্যও নয়। নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে তা পাওয়া যায় না।

কোনো কোনো কিতাবে যদিও এটিকে নবীজীর হাদীস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে এটি নবীজীর হাদীস নয়; এর কোনো সনদই খুঁজে পাওয়া যায় না।

শায়েখ মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ আশশাকীরী রাহ. তাঁর কিতাব ‘আসসুনানু ওয়াল মুবতাদিআত’-এ বর্ণনাটি উল্লেখ করে বলেন-

هُوَ حَدِيث مَكْذُوب مَوْضُوع مفترى.

এটি একটি মিথ্যা ও বানোয়াট বর্ণনা। (দ্র. আসসুনানু ওয়াল মুবতাদিআত, পৃ. ৫৩)

আমাদের দেশে এটি আরেকভাবেও প্রসিদ্ধ আছে; যে বিষয়ে ইতিপূর্বে (মার্চ ২০১৪) এ বিভাগেই লেখা হয়েছে। তা হল, প্রথমে ফিরিশতা বলে, ‘আপনি চুপ করুন’, তারপর বলে, ‘তুমি চুপ কর’। তারপর বলে, ‘তুই চুপ কর’। অথচ আরবী ভাষায়, ‘আপনি, তুমি, তুই’-এর ব্যবহার নেই।

আর মসজিদে দুনিয়াবী কথা বলা যাবে কি যাবে না- এক্ষেত্রে মৌলিক কথা হল, মসজিদ নামায ও আল্লাহ তাআলার যিকিরের জন্যই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মসজিদকে দুনিয়াবী কথাবার্তা ও কাজকর্মের স্থান বানানো অথবা এ উদ্দেশ্যে মসজিদে জমায়েত হওয়া নাজায়েয।

তবে কোনো দ্বীনী কাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার পর প্রসঙ্গক্রমে দুনিয়াবী কোনো বৈধ কথাবার্তা বলা জায়েয। এর বৈধতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত। (দ্র. সহীহ বুখারী ১/৬৩,৬৪, ও ৬৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৬৭০; রদ্দুল মুহতার ১/৬৬২)

তবে এক্ষেত্রেও খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন উঁচু আওয়াজে না হয় এবং কারো আমলে ব্যাঘাত না ঘটে। এমনকি মসজিদে কুরআন তিলাওয়াতও এমন আওয়াজে করা যাবে না, যে কারণে অন্য মুসল্লির আমলে ব্যাঘাত ঘটে।

আবু সাঈদ খুদরী রা. বর্ণনা বলেন-

اعْتَكَفَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فِي الْمَسْجِدِ، فَسَمِعَهُمْ يَجْهَرُونَ بِالْقِرَاءَةِ، فَكَشَفَ السِّتْرَ، وَقَالَ: أَلَا إِنّ كُلّكُمْ مُنَاجٍ رَبّهُ، فَلَا يُؤْذِيَنّ بَعْضُكُمْ بَعْضًا، وَلَا يَرْفَعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ فِي الْقِرَاءَةِ، أَوْ قَالَ: فِي الصّلَاةِ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ইতিকাফের সময় সাহাবীদেরকে (নামাযে অথবা নামাযের বাইরে) উঁচু আওয়াজে তিলাওয়াত করতে শুনলেন। তখন পর্দা সরিয়ে বললেন, প্রত্যেকেই তার রবের সাথে একান্তে কথা বলে; সুতরাং কেউ যেন কাউকে কষ্ট না দেয়- একে অপরের চেয়ে উঁচু আওয়াজে তিলাওয়াত না করে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৩৩২। সূত্র: আল কাউসার

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ