শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা ‘কোনো রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই’ শরীরে রক্ত বাড়াতে যেভাবে পালং শাক খাবেন ‘প্রকৃতপক্ষে ভুল হলে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ’ সিইসিসহ নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনাররা শপথ নেবেন রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হলেন মুন্সিগঞ্জের নিরব ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু বাজারে এলো ইনফিনিক্সের সবচেয়ে স্লিম স্মার্টফোন

সাফল্য শুধু নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পথেই: মাওলানা তারিক জামিল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আমরা নিজেদেরকে সেই মহান পথ প্রদর্শকের অনুসারী বলে দাবী করি, যার নূরের কাছে সূর্যও ম্লান হয়ে যায়। যার হৃদয়-প্রদীপ এমন আলােয় বিভাসিত, যে আলোর কাছে মহান আরশের আলেও আলােহীন হয়ে পড়ে। যার জ্ঞান ও দৃষ্টি-ক্ষমতা এমনই প্রখর যে, মসজিদে নববীতে বসেই জান্নাত জাহান্নাম দেখতে পান।

আরশ পর্যন্ত যার স্বচ্ছ-দৃষ্টির অবাধ যাতায়াত। আমাদের মত যার দৃষ্টিশক্তি একমুখী নয়, যিনি সামনে পিছনে সমান দেখতে পান। আমরা নিজেদেরকে সেই মহান রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসারী বলে দাবী করি। কিন্তু নিজেদের জীবন-চলার জন্য এমন একটি পথ নির্মাণ করে নিয়েছি, যা তার আদর্শের সঙ্গে মােটেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

আমরা মনে করি—অর্থ-সম্পদ উপার্জন, বিপুল অস্থাবর সম্পদের উপর অধিকার অর্জন, এবং নিত্যনতুন ও উন্নত টেকনােলজি অর্জন—এই বিষয়গুলােই মানুষের জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের নিশ্চয়তা বিধান করে। যদি তাই হবে, তাহলে উন্নত অর্থনীতি ও আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম অধিকারী জাপানবাসীদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন, তাদের মাঝে এমন ব্যাপক হারে আত্মহননের প্রবনতা কেন? কোন্ দুঃখে, তাদের ভাষায়, এই আরাম-আয়েশের জীবন ও মায়াময় পৃথিবী ত্যাগ করে তারা চলে যেতে চায়? ইউরােপবাসীদের কাছে গিয়ে দেখুন, তাদের চাকচিক্যময় জীবনের আড়ালে কী করুন হতাশা আর গ্লানী লুকিয়ে আছে।

আল্লাহকে হারিয়ে কেউ কি কখনো সঠিক গন্তব্যের সন্ধান পেয়েছে, না পেতে পারে? আর মহান রাবুবুল আলামীনের করুণী অর্জন করার পর কারাে জীবনে কোন অপ্রাপ্তি রয়েছে বলেও তাে কোন নজীর নেই। আসলে আল্লাহকে যে পায় নি, তার জীবনেই প্রাপ্তির ঘরটি শুধুই শূন্য। ইতিহাসের পাতা উল্টিয়ে এক এক করে প্রতিটি লাইন পড়ে দেখুন।

দেখুন তাে এমন কোন ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায় কি না, আল্লাহ্ পাকের করুণ লাভ করার পরও যিনি ব্যর্থ হয়েছেন, কিংবা আল্লাহকে না পেয়েও যিনি জীবনে সফল হয়েছেন? আসলে সঠিক পথের দীশা পাবার জন্য প্রথমে সঠিক জ্ঞান অর্জন করুন।

তারপর অনুসরণের জন্য সঠিক পথপ্রদর্শক নির্বাচন করুন। এ জীবন-পথে চলার জন্য আমাদের সামনে রয়েছে দু'টি পথ। একটি পথের নির্মাতা হল দুনিয়ামুখী মানুষ। আরেকটি পথ অতুলনীয় দিশারী, ফখরে দু' আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপহার।

সে চলার পথে মানুষের নির্বিঘ্ন চলার গতি রােধ করার জন্য কখনাে রাতের আঁধার নেমে আসে না। সে পথে শুধু আলােই আলো। তিনি বলেন হে মানব সমাজ! আমি তোমাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ নিয়ে এসেছি। আমি তােমাদের পার্থিব জীবনকেও সুন্দর করে দিব, তোমাদের আখেরাতের জীবনকে সুন্দর করার উপায় বাতলে দিব। শুধু তােমরা আমাকে অনুসরণ করে চল।

গােটা মানব জাতির সমস্ত সমস্যার সমাধান আল্লাহ্ পাকের হাতে। আর আল্লাহ পাক সে সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় বানিয়েছেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে। মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় সাফল্য লাভের একমাত্র মাধ্যম নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

মানুষ দুনিয়ার কামিয়াবী কামনা করুক চাই আখেরাতের কামিয়াবী কামনা করুক, তাকে মুহম্মদী পথেই আসতে হবে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহিম তথা তাঁর আদর্শকে এড়িয়ে সাফল্য লাভ করা অসম্ভব। যাবতীয় সাফল্যের একমাত্র চাবি তিনিই। তিনি এমন এক মহান ব্যক্তি যে, তিনি জান্নাতে প্রবেশ করার পূর্বে আর কারাে পক্ষেই তাতে প্রবেশ করা সম্ভব নয়।

তিনি জান্নাতের দরজায় উপস্থিত হওয়ার পূর্বে কারাে জন্য জান্নাতের দরজা খোলা হবে না। তার উসিলায় উম্মতে মুহাম্মদীও এত সম্মানিত যে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করার পূর্বে আর কোন উন্মতের জন্য জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি হবে না। তাসনীম, সালসাবীল, যান্জাবীল, রহীক—জান্নাতী এসকল সরবত যতক্ষণ না নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আর কারো জন্যই পানের অনুমতি হবে না। এই সরবত উম্মতে মুহম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যতক্ষণ না পান করবে, ততক্ষণ আর কোন উম্মতই পান করতে পাবে না।

সমস্ত ইত-সম্মানের খযিনি আল্লাহ্ পাকের হাতে। সমস্ত কামিয়াবীর খানা আল্লাহ পাকের হাতে। বরকতের খাযানা আল্লাহ পাকের হাতে। সরদারির খানা আল্লাহ্ পাকের হাতে। জান্নাতের খাজানা আল্লাহ্ পাকের হাতে।

মােটকথা, দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় বিষয়ের খাযনি আল্লাহ পাকের হাতে । তার সেই খাযানা লাভ করার জন্য আল্লাহ্ পাক একটি উপায় নির্ধারণ করেছেন। সে উপায়টি হল, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের অনুসরণ। সেই আদর্শের যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমে নিজেকে “মুহম্মদী' রূপে প্রতিষ্ঠিত করুন, তাহলে আপনাদেরকে আল্লাহ পাক এমনই সম্মান দান করবেন যে, আপনাদের জন্য তাঁর অফুরন্ত সম্মানের খানা খুলে দিবেন।

কামিয়াবীর খাযনা করায়ত্ত্ব করতে চাইলে আল্লাহ পাক তাও আপনাদের জন্য সহজলভ্য করে দিবেন। আপনাদের জন্য বরকতের দরজা খুলে যাবে। জান্নাতের দরজা থেকে আপনাদেরকে আহবান করা হতে থাকবে। সেখানে আপনাদের এন্তেকালের জন্য স্বয়ং আল্লাহ পাক উপস্থিত থাকবেন। তবে শর্ত একটাই—নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শকে জীবনে পরিপূর্ণরূপে গ্রহণ করতে হবে। এই একটি মাত্র উপায় ঢুড়ি আত্মীয়তার দোহাই বা ঘান্দানী মর্যাদা দিয়ে আল্লাহ পাকের নিকট গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যাবে না। সেখানে সৈয়দ বা কোরায়শী মুদ্রা অচল। একমাত্র মুহম্মদী মুত্রী ছাড়া সেখানে আর কিছুই চলে না। আব্রু লাহাব কুরায়শী ও হাশেমী ছি। শুধু তাই নয়, আত্মীয়তার সম্পর্কে খােদ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চৗচাও ছিল।

তা সত্ত্বেও কোরআন তার সম্পর্কে ঘােষণা করেছে আবু লাহৰ ধবংস হয়েছে। আবু লাহাব নিজে হাশেমী, আর তার স্ত্রী ছিল বনু উমাইয়্যা খান্দানের।

এ সম্মানে হাশেমীদের পরেই যাদের অবস্থান। স্বামী-স্ত্রীর আকাশ-ছোঁয়া, বংশীয় মর্যাদা সত্ত্বেও আল্লাহ পাক ঘােষণা করলেন তার স্ত্রীও জাহান্নামী। কে কার আত্মীয়, আর কে বংশ মর্যাদায় কত উচ্চ, আল্লাহ্ পাকের নিকট এসব কিছুই বিবেচ্য নয়।

তিনি শুধু দেখেন, তার কোন বান্দা তাঁর পেয়ারা নবী মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোলাম, আর কে নয়। কে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করেছে, আর কে অবাধ্য হয়েছে। যে আনুগত্য স্বীকার করেছে, সে কামিয়াব। আর যে অবাধ্যচারণ করেছে, সে নাকাম ও ব্যর্থ।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ