রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উদ্বিগ্ন চীন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| আবু সাঈদ ||

জেনেভায় জাতিসংঘের অধিবেশনে গত শুক্রবার চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, জিনজিয়াংয়ে চীন কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে তার দেশ আর সহযোগিতা করবে না।

রাষ্ট্রদূত চেন শু বলেন, ‘কমিশন তথাকথিত মূল্যায়ন শুরু করে সহযোগিতার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে’। তিনি প্রতিবেদনটিকে ‘অযৌক্তিক ও ভুল’ আখ্যা দিয়ে বলেন, তার দেশ জিনজিয়াংয়ে (পূর্ব তুর্কিস্তান) কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি।

গত বছরের ৩১ অগাস্ট জারি করা জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চীনে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে’। জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের এমন কিছু প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হচ্ছে, যাকে ‘মানবতার প্রতি অবিচার’ বললে অত্যুক্তিু হবে না।

গত মে মাসে মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের চীন সফরের শেষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর চেন স্পষ্টভাবে বলেছেন, তার দেশ ও মানবাধিকার কমিশনের মধ্যে ভবিষ্যতে সহযোগিতামূলক কোন সম্পর্ক থাকবে না।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনটি জিনজিয়াংয়ে ‘বন্দীদের উপর অমানবিক নির্যাতনের প্রত্যক্ষ ঘটনাবলীর ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়, এই অঞ্চলে চীনের নিপীড়ন সীমানা অতিক্রম করেছে। তথাকথিত শিক্ষা শিবিরে গ্রেপ্তার এবং জোরপূর্বক শ্রমের কারণে অনেক লোক আপন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কেউ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।

প্রতিবেদনে পুনর্বাসন শিবির ও কারাগারে নির্বিচারে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার এবং সন্ত্রাসবিরোধী, জাতীয় নিরাপত্তা ও সংখ্যালঘু অধিকার সংক্রান্ত আইন পর্যালোচনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে চীনা সরকারকে।

প্রতিবেদনটি নিয়ে আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য মানবাধিকার কাউন্সিলের অধিবেশনে আলোচনার কথা রয়েছে। চেন বলেছেন, তিনি সেই অধিবেশনে চীনের বিরুদ্ধে গৃহিত যে কোনও পদক্ষেপের ‘জোরালো বিরোধিতা’ করবেন।

প্রতিবেদনটি এমন সময় প্রকাশিত হয়েছে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে চীনের উত্তেজনা তুঙ্গে।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং রাশিয়ার পক্ষে চীনের সমর্থনকারী অবস্থানের পর থেকে উইঘুর মুসলমানদের প্রতি চীনের আচরণের সমালোচনা করতে শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইউরোপীয় দেশগুলি।

উল্লেখযোগ্য যে, ২০১৮ সালের অগাস্টে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন রিপোর্ট করেছে, চীন পূর্ব তুর্কিস্তানে প্রায় এক মিলিয়ন উইঘুর মুসলিমকে গোপন ক্যাম্পে আটক করে রেখেছে। চীন ১৯৪৯ সাল থেকে এই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করছে। সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমরা এই প্রদেশে বাস করে। চীন এটিকে জিনজিয়াং নামে নামকরণ করেছে। এর অর্থ নতুন সীমান্ত।সূত্র: আল জাযিরা

কেএল/


সম্পর্কিত খবর